গাউছুল আযম মাইজভান্ডারীর জীবনী



গাউসুল আযম হযরত শাহছুফী মাওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ আল-হাসানীওয়াল হোসাইনী মাইজভান্ডারী (কঃ) এর জীবনাদর্শঃ
ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ে মানুষ যখন সঠিক ইসলামের দিক্‌-দিশা পাচ্ছিলনা তখনি পৃথিবীর বুকে মহানবী (দঃ) এর প্রতিচ্ছবি, হযরত আলী (রাঃ)এর বেলায়তী ক্ষমতার ধারক ও বাহক অলিকুল শিরোমনি, শরীয়ত, ত্বরীকত হাকীকত ও মারেফতের দিশারী খোদা তত্ত্বের রহস্যাবলীর উজ্জ্বল নক্ষত্র, নূর-এ-এলাহী, মাহবুব-এ-ছোবহানী, গাউছে ছামদানী, হযরত আবু মুহাম্মদ মুহীউদ্দিন সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানী আল্‌-হাসানী, ওয়াল-হোসাইনী (কঃ)বাগদাদ নগরীতে তশরীফ আনেন| তাঁর আধ্যঅত্মিকতার প্রভাবে মৃত প্রায় দ্বীন এ ইসলামকে মৃতসঞ্জীবনী দান করলেন|
**বংশ তালিকাঃ হযরত গাউছুল আযম (কঃ) পিতৃ ও মাতৃ উভয়কুল থেকেই প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর পবিত্র বংশধর| পিতার দিক হতে তিনি হযরত ইমাম হাসান (রাঃ) ও মাতার দিক হতে হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর বংশে আবির্ভূত হন|
**পিতার বংশঃ হযরত গাউছুল আযম সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানী (কঃ) ইবনে হযরত সৈয়দ সালেহ মুসা ইবনে হযরত সৈয়দ দাউদ (রাঃ) ইবনে হযরত সৈয়দ মুসা সানি ইবনে হযরত সৈয়দ আবদুল্লাহ ইবনে হযরত সৈয়দ মুসা জুন, ইবনে হযরত ষৈয়দ আবদুল্লাহ মহয, ইবনে হযরত সৈয়দ হাসান মুসান্না, ইবনে আমীরুল মুমেনীন হযরত ইমাম হাসান (রাঃ) ইবনে আমীরুল মুমেনীন হযরত আলী (রাঃ)|
**মাতার বংশঃ মাতাঃ উমমূল খাঈর সৈয়দা ফাতেমা বিনতে সৈয়দ আবদুল্লাহ ওমায়ী, ইবনে সৈয়দ অঅবু জামাল, ইবনে সৈয়দ মুহাম্মদ, ইবনে সৈয়দ আবু জামাল, ইবনে সৈয়দ মুহাম্মদ, ইবনে সৈয়দ আবু তাহের, ইবনে সৈয়দ আবদুল্লাহ্‌, ইবনে ষৈয়দ আবু কালাম, ইবনে সৈয়দ মুসা ইবনে সৈয়দ আবু আলাউদ্দীন, ইবনে সৈয়দ মুহাম্মদ, ইবনে ইমাম সৈয়দ মুহাম্মদ বাকের ইবনে ইমাম সৈয়দ যয়নুল আবেদীণ| ইবনে ইমাম সৈয়দ হোছাইন, ইবনে আমীরুল মুমেনীন সৈয়েদ্যানা হযরত আলী (রাঃ)|
**হযরত গাউছুল আযম (কঃ) ৪৭১ হিজরীতে পবিত্র রমজান মাসে ইরান দেশের জিলান নগরীতে জন্ম গ্রহণ করেন| তিনি মাতৃগর্ভে থাকাকালীন সময়ে বহু কারামত ও আলৌকিক ঘটনার অবতরানা হয়| কথিত আছে যে তিনি মাতৃগর্ভে থাকাকালীন সময়ে পবিত্র কুরআনের পনর পারা মুখস্ত করেন| বাল্যকালে যখন তাকে মক্তবে কুরআন শিক্ষার জন্য পাঠানো হয় তখনই তার এ মহান কেরামত প্রকাশিত হয়| অত্যন্ত শিশু অবস্থায় রমজানের ও ঈদের চাঁদ দেখার ব্যাপারে সংশয় দেখা দিলে গাউছ পাকের মায়ের দুধপান করা না করার উপর তার সমাধান নির্ধারিত হয় কারণ গাউছ পাক পবিত্র রমজান মাসে জন্ম গ্রহণ করলে তার মায়ের বর্ণনানুযায়ী তিনি সুবহে সাদেক থেকে ইফতার পর্যন্ত রমজান মাসে কোনদিনও মায়ের দুধ পান করেননি| হযরত আবদুর রাজ্জাক (রাঃ) তার তোহফায়ে ক্বাদেরিয়া ও আখবারুল আখইয়ার কিতাব দ্বয়ে বলেন, হযরত গাউছুল আযম শৈশবকালে যখনি খেলাধুলার মনোনিবেশ করতে আগ্রহী হতেন তখনি একটি গায়েবী আওয়াজ শুনতে পেতেন- “হে মোবারক শিশু আমার দিকে এস! অণ্যত্র হুজুর গাউছ পাক (রাঃ) নিজে বর্ণনা করেন,রাত্রিকালে যখনি আমি অসাবধানবশতঃ নিদ্রায় অভিভুত হয়ে পড়তাম তখনি এ বানী আমার অন্তরে প্রতিধ্বনি হত, হে আবদুল কাদের, ঘুমাবার জন্য তুমি দুনিয়াতে আসনি বরং ঘুমন্ত ও মোহান্বিত মানবকুলকে জাগ্রত করার জন্য তোমাকে প্রেরণ করা হয়েছে|
***সত্যবাদীতার অন্যান্য উদাহরণঃ হযরত গাউছুল আযম (কঃ) আঠার বৎসর যাবৎ স্বীয় গৃহে থেকে বিদ্যা শিক্ষা করেন| মায়ের নিকট অনুমতি প্রার্থনা করতেই নিতান্ত বৃদ্ধা ও অসহায় দুর্বল মাতা রাজী হয়ে গেলেন|বৃদ্ধা বয়সের একমাত্র সহায় স্বীয় পুত্রকে তিনি জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে বিদায় দিতে রাজী হলেন| বিদায়কালে মা চল্লিশটি দিরহাম ছেলের পিরহানে সেলাই করে দিলেন এবং প্রিয়নবী (দঃ) এর হাদিসটি স্মরন করিয়ে দিলেনঃ সত্যবাদীতা মুক্তিদান করে আর মিথ্যা ধ্বংস করে|পুত্রের উদ্দেশ্যে আরো বললেন, ‘হে বৎস, আমি বৃদ্ধা হয়েছি, হয়তো কেয়ামতের পূর্বে আমাদের আর সাক্ষাৎ নাও হতে পারে, সুতরাং আমার এ উপদেশ তুমি স্মরন রেখ, যে কোন অবস্থাতেই পতিত হওনা কেন কখনও মিথ্যা কথা বলবে না| এ বিদায় দৃশ্য কত করুন, কতইনা হৃদয়বিদারক ছিল তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না| আটাত্তর বৎসর বয়স্কা বিধবা মহিলা তার একমাত্র সহায় সম্বল ও আশ্রয়স্থল স্বীয় পুত্রকে দ্বিধাহীন চিত্তে আল্লাহর রাহে বিদায় দিচ্ছেন| এ মহীয়ষী মহিলা জানতেন, দ্বীন ও ইসলামকে পুনজীর্ববনদানকারী এ কালজয়ী মহাপুরুষকে শুধু মাত্র মায়ের খেদমতের জন্য ধরে রাখা সমীচিন হবে না| বুকে পাথর বেধে মহীয়সী মা পুত্রকে বিদায় দিলেন| যেমন মহান গাউছুল আযম তেমনি মহান তার পূণ্যময়ী জননী| মায়ের নিকট হতে বিদায় নিয়ে গাউছুল আযম এক কাফেলার সাথে বাগদাদ অভিমুখে রওনা হলেন| পথিমধ্যে হামাদান নামক স্থানে একদল দস্যু কর্তৃক উক্ত কাফেলা আক্রানত হল| সবার কাছ থেকে সবকিছুই লুট পাট করে নিল| গাউছুল আযম একপাশে দাড়ানো ছিলেন| দস্যুরা তার কাছে কিচু আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে গাউছুল আযম বললেন, তার কাছে চল্লিশ দিরহাম আছে| দস্যুদল প্রথমে বিশ্বাস করতে চায়নি কারণ গোপনে সংরক্ষিত সম্পদের কথা এভাবে কেউ দস্যুদের বলে না| অতঃপর তারা গাউছুল আযমকে তাদের সর্দারের কাছে নিয়ে গেলেন| সর্দার পুনরায় তার কাছে জানতে চাইলো একথা সত্য কিনা? গাউছুল আযম নির্দ্বিধায় বললেন, তা সত্য| দস্যু সর্দার জানতে চাইলো, এ রকম অকপটে সত্য কথা বলার কারণ কি? গাউছুল আযম বললেন, মায়ের নির্দেশ সর্বাবস্থায় সত্য কথা বলার| একথা শুনে দস্যু সর্দারের ভাবানতর সৃষ্টি হল, এবং মনে হতে লাগলো এ বালক তার মায়ের আদেশ পালন করার নিমিত্তে নিজের শেষ সম্বলটুকু হাতছাড়া হবে জেনেও অকপটে সত্য কথা বললো আর আমরা আল্লাহ ও রাসুলের (দঃ) নির্দেশ ভুলে গিয়ে আজীবন মানুষের উপর কতইনা অত্যাচার জুলুম করে চলেছি| তরুন গাউছুল আযমের সত্যবাদীতার জ্যোতি যেন ও দস্যু সর্দারের অনতরের দুর্ভেদ্য অন্ধকারের প্রাচীর ভেদ করে হৃদয়ে সত্য ও ন্যায়ের আলো উদ্ভাসিত করে তুললো| দস্যু সর্দার চিৎকার করে কেদে উঠলো এবং গাউছুল আযমের পায়ে পড়ে তওবা করলো এবং সত্য ও ন্যায়ের পথের পথিক হল| তার অনুসারীরাও গাউছুল আযমের হাতে তওবা করলো এবং দস্যুবৃত্তি পরিত্যাগ করলো|পীরানে পীর দস্তগীর মহীউদ্দিন গাউছুল আযম হযরত শায়খ সৈয়দ আবু মুহাম্মদ আবদুল ক্কাদের জিলানী (কঃ)ঃ
গাউছুল আযম, পীরানে পীর দস্তগীর, মুহীউদ্দিন, শায়খ সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানী (কঃ)-এর পবিত্র শান, মান, মর্যাদা আল্লাহাপাক এতই বূলন্দ করেছেন যে, কোন মানুষের পক্ষে তা বর্ণনা করা সম্ভব নয়| অলিকুল শিরোমনি এ মহান সাধককে আমরা বাংলার মানুষ বড়পীর পীরানে পীর গাউছুল আযম হিসেবে জানি| হযরত গাউছুল আযম(কঃ) মুহীউদ্দিন নামেই আবির্ভূত হন| যার অর্থ দ্বীনের পূনরুজ্জ্বীবনকারী| ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা জানতে পাই, ইসলামের চতুর্থ খলীফা হযরত আলী (কঃ)এর শাহাদতের পর উমাইয়া কর্তৃক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ফলে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার যাঁতাকলে মহানবী (দঃ)এর পবিত্র দ্বীন, মহান আদর্শ ও মূল্যবোধগুলো একে একে পিষ্ট হয়ে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বিপর্যয় তথা অবলুপ্তির সম্মুখীন হয়েছিল| ধর্মের লেবাছ ধারী খলীফা ও রাজন্যবৃন্দ, নিজেদের প্রভু জ্ঞান করতঃ সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচারের ষ্টীম রোলার চালাচ্ছিল| রাজশক্তির নিয়োজিত মোল্লাদের
তোয়াজবাজীর কারনে সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ধর্ম ইসলাম একটি সুবিধাবাদী ধর্মে পরিণত হয়েছিল| মুসলমানদের মধ্যে ফেরকাবাজী ও আত্মকলহ চরম আকার ধারণ করেছিল|মুহীউদ্দিন উপাধি ঃ মহীউদ্দিন অর্থ দ্বীনের সঞ্জীবনকারী| কথিত আছে যে, গাউছুল আযম (কঃ) একদিন বাগদাদ অভিমুখে হেটে যাচ্ছিল পথিমধ্যে এক জরাগ্রস্ত বৃদ্ধের দেখা পেলে| উক্ত বৃদ্ধ মুমুর্ষ অবসা’য় পতিত ছিল এবং তার প্রাণ যায় যায় অবস’া গাউছুল আযম (কঃ) কে তিনি ডেকে বললেন, ‘ওহে পথিক, আমি রুগ্ন ও রোগাগ্রস’, অসহায় অবস’ায় পড়ে আছি| আমার প্রাণ যায় যায় অবস্থা, আপনি আমাকে টেনে তুলুন এবং সাহায্যে করুন| অতঃপর হুজুর গাউছপাক (কঃ) তাকে টেনে তুললেন| গাউছুল আযমের হাতে ম্পর্শ পাওয়ার সাথে সাথে মৃতপ্রায় বৃদ্ধ নব জীবনী লাভ কররেন এবং সমস্ত রোগ, দুর্বলতা বিদূরিত হয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ এবং স্বাস্থবান হয়ে উঠলো| অতঃপর এ জ্যোতিষমান পুরুষ গাউছুল আযম (কঃ) কে বললেন-আমি হলাম দ্বীন এ ইসলাম| ধর্মের অপব্যাখ্যা ও কুসংস্কারের কারণে আমি দুর্বল, শক্তিহীন মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিলাম| হে মুহীউদ্দীন ! আপনি আমাকে পূনর্জীবিত করলেন| আজ থেকে আপনার উপাধি হল মহীউদ্দিন অর্থাৎ দ্বীনের সঞ্জীবন দানকারী| অতঃপর গাউছুল আযম (কঃ) মসজিদে প্রবেশ করলে সবাই তাকে মুহীউদ্দিন নামে সম্বোধন করতে লাগলেন| অলিকুল শিরোমনি হযরত গাউছুল আযম (কঃ) ছিলেন আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত, মাতৃগর্ভে যিনি কুরআন মুখসত করেন এবং জন্মবধি যিনি রোজা রেখছেন এ মহাপুরুষ ছিলেন আজন্ম পাক ও পবিত্র, পাথিৃব কোন পংকিলতা গুনাহ-খাতা, তাকে স্পর্শ করতে পারেনি বলে আমাদের বিশ্বাস|মহিউদ্দিন (ধর্মের জীবনদানকারী) এর দায়িত্ব নিয়ে যে মহাপুরুষ আগমন তাকেও সাধনা নামের অকুল মহাসাগর পাড়ি দিতে হয়েছে| হুজুর গাউছ পাক (কঃ) সাধারন অবস্থায় সর্বদা পবিত্র কুরআন শরীফ পাঠ করতেন এবং নামাজ ও আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকতেন| মুহুর্তের জন্য তিনি বিশ্রাম নিতেন না| এ সময়ে তিনি কারো সাথে কথা বলতেন না| তিনি নিজেই তার অবস্থা সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন, যে আমি ইরাকের বনে জঙ্গলে পঁচিশ বৎসর একাকী থেকেছি, দিবারাত্র একমাত্র আল্লাহর জিকির ছাড়া অন্য কোন কাজই আমি করিনি| বৎসরের পর বৎসর আমি এশার নামাজের অযু দিয়ে ফজরের নামায আদায় করেছি| কত অগণিত রজনী এভাবে কাটিয়েছি, যে নিমিষের জন্যও চক্ষু মুদ্রিত করিনি| নিদ্রা গ্রাস করতে চাইলে আমি একপায়ে দাড়িয়ে নফল চার বছর বয়সে গ্রাম্য মক্তবে তাঁর শিক্ষাজীবন আরম্ভ হয়। ১২৬০ হিজরীতে তিনি উচ্চশিক্ষার্থে কলকাতা গমন করেন। ১২৬৮ হিজরীতে তিনি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার শেষ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। এই সময় তিনি হাদিস, তাফসীর, ফিকাহ, মানতিক, বালাগাত, উছুল, আক্বায়েদ, দর্শন, ফরায়েজ ইত্যাদি শাস্ত্রে বিশেষ পারদর্শীতা অর্জন করেন। হিজরী ১২৬৯ সালে তিনি যশোর জেলায় কাজী (বিচারক) পদে যোগদান করেন। কিন্তু বিচারিক কাজের প্রতি অনীহার কারণে ১২৭০ হিজরীতে কাজী পদ থেকে পদত্যাগ করে কলকাতার মুন্সি বু-আলী মাদ্রাসায় প্রধান মোদাররেসের পদে যোগদান করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি একই সাথে তিনি মুন্সেফী অধ্যয়নের কাজও চালিয়ে যান। তাঁর চারিত্রিক গুণাবলী ও জ্ঞানের ব্যাপকতায় মুগ্ধ কলকাতাবাসী তাঁর ওয়াজ শোনার জন্য অধীর আগ্রহে থাকতেন।

হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (ক.) পীরানে পীর দস্তগীর গাউছুল আজম মহিউদ্দীন আবদুল কাদের জীলানীর (রা.) বংশধর শেখ সৈয়দ আবু শাহমা মুহাম্মদ ছালেহ আল কাদেরী লাহোরী (রহ.) এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। অপরদিকে তাঁর পীরের বড় ভাই হযরত শাহ সৈয়দ দেলাওর আলী পাকবাজ (রহ.)’র কাছ থেকে কুতুবিয়তের ফয়েজ অর্জন করেন। একদিন জোহরের নামাজের পর হযরত শাহসূফী সৈয়দ আবু শাহমা লাহোরী (রহ.) তাঁর মুরীদানদের নিয়ে নিজ হুজরায় দীনি বয়ান করছিলেন। ঠিক সে সময়েই হযরত আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) পাল্কীযোগে কোন এক অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য সেই ভবনের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। হযরত লাহোরী (রহ.) আপন মুরীদ শাহ এনায়েত উল্লাহ সাহেবের মাধ্যমে পাল্কী-আরোহী হযরত কেবলাকে (ক.) সাক্ষাতের আমন্ত্রণ জানালেন। হযরত কেবলা (ক.) খোদায়ী রহস্য ও রহমতপূর্ণ এই বেলায়তী আমন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে তাঁর আহবানে সাড়া দেন। হযরত আবু শাহমা মুহাম্মদ ছালেহ লাহোরী (রহ.) হযরত ক্বেবলাকে (ক.) সম্মানের সাথে অভ্যর্থনার পর নিজ তরিকতের বাইয়াত ও খিলাফত প্রদান করেন ।এরপর সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) আপন পীরের তত্ত্বাবধানে নিজেকে আধ্যাত্মিক সাধনায় নিয়োজিত রাখেন।নামাযে সমস্ত কুরআন খতম করেছি| কি অসীম নিষ্ঠা! কি কঠিন সাধনা আল্লাহর রাস্তায় ফানা হওয়ার কি উজ্জ্বল দৃষ্টআন্ত| আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে হলে নিদ্রাজাগরণ যে অবশ্যই কর্তব্য| হযরত আলী (কঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি উচ্চ মর্যাদা পেতে চায় তার অবশ্যই কর্তব্য রাত্রি জাগরন | পবিত্র কুরআনেও আল্লাহপাক রাত্রি জেগে এবাদত করার নির্দেশ দিয়েছেন|



**সূর্য্যেও উপর আধ্যাত্মিক প্রভাব ঃ-
নানুপুর নিবাসী মুন্সি খায়ের উদ্দিন ডাক্তার সাহের, একদা বর্ণনা করিয়াছেন, তাহার ভ্রাতুষ্পুত্রের শ্বাশুড়ী হযরতের একজন নিষ্ঠাবতী ভক্ত রমণী ছিলেন। তিনি সময় সময় হযরতের খেদমতে হাজির হইতেন। এক সময় দোয়া প্রার্থীনী হইয়া তিনি সন্ধ্যাকালে তাঁহার খেদমতে হাজির হন। পানাহারে রাত্রি অধিক হইয়া যাওয়ায তিনি বাড়ী যাইতে অপরাগ হন। তবুও তিনি বাড়ী যাইবার জন্য হযরতের নিকট প্রার্থনা জানাইলেন। হযরত তাহাকে নিয়েধ করিলেন। তিনি খুব ভোরে চলিয়া যাইবেন বলিয়া মনস্ত করিলেন। সকালে ঘুম হইতে জাগিয়া তিনি যাখন চলিয়া যাইবার জন্য তৈয়ার হইলেন তখন দেখিলেন সূর্য প্রায় উঠিবার সময় হইয়াছে। পূর্বদিক প্রায় রক্তবর্ণ ধারণ করিয়াছে। তাড়াতাড়ি হযরতের নিকট আসিয়া বলিলেন, হুজুর! গত রাত্রে আপনি যাইতে বারণ করায় আমি যাই নাই মনে করিয়াছিলাম সকালে সূর্য উঠার আগেই চলিয়া যাইব কিন্ত সূয উঠিয়া যাইতেছে। চারিদেকে লোকজন চলাফেরা করিতেছে। বাড়ীতে না গেলে আমার স্বামী বিশেষ অসন্তষ্ট হইবেন। এখন কি করি। তাহাকে অত্যন্ত ব্যাকুল দেখিয়া হযরত বলিলেন, “তোমার কোন প্রকার আশংকা নাই তোমাকে কেহ দেখিবে না, সূর্য উদয়ের পূর্বেই তুমি বাড়ী পৌঁছিয়া যাইবে। আল্লাহ আল্লাহ করিয়া বাড়ী চলিয়া যাও। তোমার না পৌঁছা পর্য্যন্ত সূর্য্যোদয় হইবে না।” কালবিলম্ব না করিয়া হযরতের আদেশ মত তিনি বাড়ী রওয়ানা হইলেন। পথে কোন জনপ্রাণীর সাক্ষাৎ পাইলেন না। দরবার শরীফ হইতে তাহার বাড়ী প্রায় সাড়ে তিন মাইল দূরে অবস্থিত। এই সুদীর্ঘ পথ অতিক্রম করিয়া যাওয়ার পরও দেখিলেন সূর্য্যোদয় হয় নাই। ইহাতে তিনি হযরতের পবিত্র বাণীর প্রভাব উপলদ্ধি করিয়া হযরতের অত্যাধিক অনুরক্ত হইয়া সেজদায় পড়িয়া এবং আল্লাহ তায়ালার দরবারে শোকরিয়া আদায় করিতে লাগিলেন।
**হযরতের প্রতি ব্যাঘ্রের অনুগত্যতা ঃ-
একদিন হযরতের প্রিয়তমা কন্যা মোছাম্মৎ সৈয়দা আনওয়ারুন্নেছা বিবি হযরতের নিকট ছোট কালে আবদার করিয়া জানাইয়াছিলেন, “বাবা আমি তো কোন দিন বাঘ দেখি নাই। বাঘ দেখিতে আমার বড়ই ইচ্ছা। আমাকে বাঘ দেখাইতে হইবে।” হযরত তাঁহাকে উত্তর দেলেন, “আচ্ছা মা।” একদিন অনেক রাত্রে হযরত ডাকিয়া বলিলেন, “তোমরা বাঘ দেখিতে কে কে ইচ্ছা করিয়াছ! বাহিরে তাকাইয়া দেখ। বাঘ আসিয়া তোমাদের সামনে উঠানে দাঁড়াইয়াছে।” তখন সবাই ঘাহিরে তাকাইয়া উকি মারিয়া বাঘ দেখিতে লাগিল। দেখিল, প্রকাণ্ড বলিষ্ঠকায় একটি বাঘ, নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে উঠানে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে কে যেন উহাকে মন্ত্রমুগ্ধবৎ বন্দী করিয়া রাখিয়াছেন। যেন কাহারো পোষা শিক্ষিত বাঘ। এইরূপ প্রায় সময়ে নিঝুম রাত্রে সর্প, ব্যাঘ্র ইত্যাদি হিংস্র প্রাণীদিগকেও হযরত আকদাছের খেদমতে আসিতে দেখা যাইত।
**হযরতের আধ্যাত্মিক প্রভাবে সাধারণ দ্রব্যে অদ্ভুতভাবে কলেরা রোগ নিরাময়ঃ-
হযরতের এক ভক্ত জিয়াউল হোসাইনের স্ত্রীর এক সময় কলেয়া রোগ হয়। ডাক্তার চরম হতাশ হইয়া এবং রোগীর অবস্থা ভয়ানক দেখিয়া তিনি উন্মাদের মত যাইয়া হযরতের পায়ে স্ত্রীর প্রাণ ভিক্ষা প্রার্থনা করেন। হযরত তাহাকে অভয় দিয়া বলিলেন, “ভাই সাহেব অতি শীঘ্র আপনার বিবিকে নারিচ পাতার ঝোল পাকাইয়া খাওয়াইয়া দিন। আল্লাহর হুকুমে আপনার বিবি আরোগ্য লাভ করিবে।” তিনি অতি সত্বর বাড়ী গিয়া হযরতের নির্দ্দেশমত নারিচ পাতার ঝোল পাকাইলেন এবং রোগীকে খাওয়াইতে উদ্যত হইলে ডাক্তার কবিরাজগণ যাহারা যেখানে উপস্থিত ছিলেন, তাহারা বলিলেন যে উহা খাওয়াইলে রোগী এখনই মারা যাইবে। তিনি কাহারো কথায় কর্ণপাত না করিয়া পূর্ণ একপাত্র নারিচ পাতার ঝোল রোগীকে কলেরার উপসর্গ সমূহ বন্ধ হইয়া রোগী ক্রমশঃ ঘুমাইয়া পড়িলেন। রোগী ঘুম হইতে জাগিলে খুব দুর্বলতা অনুভব করেন এবং হযরতের নির্দেশিত নারিচ পাতার ঝোল পুনরায় খাইতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। জিয়াউল হোসাইন সাহেব রোগীকে পুনরায় নারিচ পাতার ঝোল ও কিছু শাকভাত খাওয়াইয়া দিলেন। কি ভয়ানক ব্যাপার। ইহাতে রোগীর অবস্থা ক্রমশঃ খারাপের দিকে যাইতে থাকে। কলেরার উপসর্গ সমূহ দ্বিগুণবেগে আরম্ভ হইল। তিনি দৌড়াইয়া হযরতের সমীপে উপস্থিত হইয়া সমস্ত কথা হুজুরের খেদমতে প্রকাশ করিলেন । হযরতের তাহাকে বলিলেন আমি তো আপনাকে দুইবার খাওয়াইতে বলিনাই এবং শাকভাতও দিতে বলিনাই। যান পুনরায় শুধু ঝোল খাওয়াইয়া দেন।” তিনি বাড়ীতে গিয়া পুনরায় নারিচের ঝোল খাওয়াইয়া দেন। ইহাতে রোগী পুনরায় শান্তভাবে ঘুমাইয়া পড়েন রোগের উপসর্গ সমূহ তিরোহিত হইয়া। যায়। খোদার ফজলে রোগীকে অন্য ঔষধ খাওয়াইতে হয় নাই। রোগী ক্রমশঃ আরোগ্য হইয়া যায়।
** যষ্ঠির প্রহারে কুষ্ঠরোগ নিরাময়ে হযরতের আধ্যাত্মিক ক্ষমতা প্রকাশ ঃ-
চট্রগ্রাম টাউন নিবাসী একজন ধনী লোক কুষ্ঠরোগাক্রান্ত হইয়া বহুদিন যাবত কষ্ট পাইতেছিলেন। তিনি হযরতের বেলায়তী প্রভাবের কথা লোকমুখে শুনিয়া, রোগমুক্তির আশাবাদ কামনায় একদিন হযরতের দরবারে উপস্থিত হন। তিনি হযরতকে অভিবাদন পূর্বক বলিতে লাগিলেন, হুজুর! আমি যত জায়গায় যত বড় কবিরাজ ডাক্তারের নাম শুনিয়াছি তাহাদেও দ্বারা সাধ্যাতীত অর্থ ব্যয়ে চেষ্টা করিয়া দেখিয়াছি, আমার জটিল রোগ কিছুতেই আরোগ্য হয় নাই। আমি রোগ যন্ত্রণায় জীবনের আশা ছাড়িয়া দিয়াছি। অতঃপর আপনার কথা শুনিয়া অতি আশায় শেষ বারের মত চেষ্টা করিতে হুজুরের দরবারে আসিয়াছি।” ইহা শুনিয়া হযরত বলিয়া উঠিলেন, “আও কমবখ্‌ত নাফরমান! তুমি খোদাকে ভয় কর নাই কেন? তোমর মত পাপীকে দোর্‌রা মারা দরকার।” ইহা বলিয়াই তিনি তাঁহার হস্তস্থিত যষ্টি দ্বারা তাহাকে স্বজোরে প্রহার করিতে আরম্ভ করিলেন। এমন ভাবে প্রহার করিতে লাগিলেন যে, উপস্থিত লোকেরা হায় হায় করিতে লাগিল। একেতো কুষ্ঠরোগে শরীর ক্ষতবিক্ষত, তদুপরি হযরতের লাঠির আঘাত। লোকেরা কানাকানি করিতে লাগিল যে, হযতঃ লোকটির জীবনায়ু ফুরাইয়া আসিয়াছে। হযরতের লাঠির আঘাতে লোকটি বিচলিত হইল না বা যন্ত্রণা সূচক কোন শব্দ করিল না। কিছুক্ষণ প্রহার করার পর হযরত আন্দর হুজরায় চলিয়া গেলেন। লোকটি ধীরে ধীরে উঠিয়া গোসল করিয়া আসিলেন। অতঃপর হযরত বহির্বাটিতে আগমন করিলে লোকটি হযরতকে কদমবুচি করিয়া চলিয়া যান। প্রায় তিন মাস পর লোকটি পুনরায় হযরতের খেদমতে আসেন। এখন তাহার শরীরে আর কুষ্ঠরোগ নাই। ক্ষতের কোন চিহ্ন পর্যন্ত দেখা গেল না। লোকেরা জিজ্ঞাসা করায় লোকটি বলিলেন যে, তিনি এখান থেকে যাওয়ার পর আর কোন ঐষধ ব্যবহার করে নাই। হযরতের লাঠি মোবারকের আঘাতেই তাহার জন্য আল্লাহর আশীর্বাদ বরিষণ করিয়াছে। হযরতের ফয়েজ রহমত ও দোয়ার বরকতে অশা করি আমি চিরতরে আরোগ্য লাভণ করিয়াছি। এইরূপ হযরত বিভিন্ন পদ্ধতিতে তাঁহার ফয়েজ রহমত দান ও আধ্যাত্মিক প্রভাবে মানবের উপকার করিতেন।
**যষ্ঠির প্রহারে আধ্যাত্মিক ফয়েজ ও অনুগ্রহ বর্ষণঃ-
রাউজান থানার অধিবাসী জনৈক বৌদ্ধ দারোগা, দারোগার চাকুরীর জন্য পরীক্ষা দিতে যখন শহরে আসেন, তখন তাহার মাতা নিয়ত করেন যে, আমার ছেলে চাকুরী পাইলে, প্রথম বেতন হইতে এক টাকার মিশ্রি লইয়া ছেলেকে মাইজভান্ডারে ফকীর মাওলানা সাহেবের খেদমতে পাঠাইব।” ছেলে পরীক্ষা দিয়া খোদার ফজলে চাকুরী পাইল। প্রথম মাসের বেতন লইয়া বাড়ীতে গেলে তাহার মাতা বলিলেন,-“বাবা তোমার প্রথম মাসের বেতন হইতে এক টাকার মিশ্রি লইয়া তোমাকে মাইজভান্ডার পাঠাইবার আমার নিয়ত ছিল। সুতরাং এক টাকার মিশ্রি লইয়া তুমি মাইজভান্ডার ফকীর মাওলানা সাহেবের কাছে যাও।” ছেলে বলিলেন, “মা এক টাকার তো প্রায় পাঁচ সের মিশ্রি পাওয়া যাইবে। এত মিশ্রি কি ফকীর সাহেব খাবেন, ফকির সাহেবকে কম দুই এক সের দিলে বোধ হয় ভাল হইবে।” ইহা বলার সঙ্গে তাহার মা বলিয়া উঠিলেন, “সর্বনাশ! তুমি কি বলিতেছ। আমার যাহা নিয়ত তাহা করিবে। ক্ষমা চাও। তিনি সব গোপন কথা জানেন।” ছেলে বলিলেন “মা! আমি ভুল করিয়াছি ক্ষমা চাহিতেছি।” । অতঃপর এক টাকার মিশ্রি লইয়া হযরতের দরবারে হাজির হইলেন। লোকজন খুব কম। সবাই যেন ভয়ে ভয়ে দূরে দূরে রহিয়াছে। হযরত ভীষণ জালালী অবস্থায় আছেন। লোকজন সামনে গেলে লাঠি প্রহার করেন। রাউজানের বৌদ্ধ লোকটি একজন খাদেমকে ডাকিয়া তাহাকে হযরতের সামনে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করিলেন। কারণ তাহার মায়ের আদেশ আছে, যে কোন প্রকারেই হউক ফকীর সাহেবের সাথে দেখা করিতে হইবে। তাহাকে দেখিয়া হযরত বলিয়া উঠিলেন, অত মিশ্রি কেন আনিয়াছ, ফকীর সাহেব কি অত মিশ্রি খাইবে? দু্‌ই এক সের হইলেই তো হয়।” ইহা শুলিয়া বৌদ্ধ দারোগা সাহেবের মায়ের কথা মনে পড়িল। তিনি অবনত মস্তকে হযরতের পায়ে লুটাইয়া পড়িলেন। এবং ক্ষমা প্রার্থনা করিলেন। হযরত সজরে দারোগা সাহেবকে লাঠি দ্বারা তিনটি আঘাত করিলেন। তারপর তাহাকে এক টুকরা মিশ্রি হাতে দিয়া বলিলেন, “চলিয়া যা এই মিশ্রি টুকরা তোর মাকে দিস। অসৎ, অসৎ কাজে গিয়াছিলি! সৎভাবে থাকিস্‌। ভাল হইবে।” এই বলিয়া তাহাকে বিদায় দিলেন। হযরত মাওলানা শাহ-ছুফী সৈয়দ দেলোয়ার হোসেইন সাহেব যিনি হযরত কেবলা কাবার একমাত্র সাজ্জাদানশীন্‌ আওলাদ ও ওয়ারেচ, তিনি বলেন, “যখন আমি হযরতের নামে প্রতিষ্ঠিত জুনিয়ার মাদ্রাসা ঘরের বিলের টাকা উঠাইয়া আনিতে চট্টগ্রাম শহরে যাই; সেখানে ট্রেজারীতে আসাকালীন উক্ত অবসর প্রাপ্ত বৌদ্ধ দারোগা বাবুর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। আমার পরিচয় পাইয়া হঠাৎ তিনি শিহরিয়া উঠেন এবং শরীর হইতে জামা ও কোট খুলিয়া আমাকে বলেন, “দেখুন, তাঁহার নাম শুলিয়া আমার গায়ের লোম কি ভাবে খাড়া হইয়া গিয়াছে। তিনি কি সহজ আউলিয়া ছিলেন।” অল্প সময়ে দারোগা বাবু আমাকে তাহার সাধ্যমত সমাদর ও ভক্তি দেখাইলেন এবং উপরে লিখিত ঘটনাটি বলিলেন। তিনি আরো বলিলেন, “আমি দিব্য করিয়া বলিতে পারি তিনি আমাকে যখন আঘাত করিয়াছিলেন তখন আমি শুধু আঘাতের শব্দ শুনিয়া ছিলাম কিন’ আঘাত জনিত কোন কষ্ট পাই নাই। আচ্ছা বাঘের মুখে নিক্ষেপ্তি লোটাটি কি এখনও আছে? যাহাকে তিনি সেই লোটা নিক্ষেপ পূর্বক বাঘের মুখ হইত রক্ষা করিয়াছিলেন, তিনি আমাদের এলাকার লোক।” আমি জানাইলাম যে, হ্যাঁ লোটাটি এখনও আছে।
**পানি তবরুক দানে গলক্ষত রোগ আরোগ্য ঃ-
রাউজান থানার রায়বাহাদুর রাজকুমার বাবুর ছোটকালে গলার ভিতর এক বিষাক্ত গল ক্ষত রোগ হয়। বহু চিকিৎসার পরও কোন সুফল না পাওয়ায় তাহার পিতা মহাশয়, “ওয়ালীমস্তান” নামে হযরতের এক ভক্তের সঙ্গে একপাত্র দুধ নিয়া তাহাকে হযরত সাহেবের খেদমতে পাঠাইয়া দেন। দুধের পাত্র হযরতের সামনে রাখিয়া “ওয়ালীমস্তান সাহেব” হযরত সমীপে রাজকুমার বাবুর রোগ আরোগ্যর জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। হযরত দুধগুলি একট বড় পাত্রের ঢালিয়া রাখিতে আদেশ দেন। দুধ ঢালিয়া রাখা হইলে “ওয়ালীমস্তান” উক্ত ভান্ডে কারিয়া পুকুর ও হইতে কিছু পানি আনিয়া হযরতে সমীপে রাখেন এবং দম দিয়া দিতে অনুরোধ করেন। হযরত পানির প্রতি দৃষ্টি করিয়া দূরে থাকিয়া একটি মাত্র দম করিলেন। মোস্তান সাহেব পানির পাত্রটি বাহিরে আনিয়া রাজকুমার বাবুকে সমস্ত পানি পান করাইলেন। পানের সময় দেখিলেন, উহা এত গরম যে, যেন ফুটন্ত পানি; অথচ পানে কোন কস্ট হয় নাই। তাহারা বিদায় লইয়া বাড়ী রওয়ানা হইলেন। পথে সত্ত্বা খালে নামিয়া রাজকুমার বাবু ভাবিলেন, “পানি পান করিতে খুব কস্ট হইত! অথচ হযরতের “দমকরা” পারিতে তেমন কোন কষ্ট হয় নাই। এখন খালের কিছু পানি পান করিয়া দেখিলেন। কই না তো! কোন কষ্ট না হওয়ায় ইহাতে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হইলেন। বাড়ীতে গিয়া তাহার বাবাকে তাহার আরোগ্য সংবাদ দিলেন। তাহার মাতা তাহার রোগ আরোগ্য বিষয় পরীক্ষা করার জন্য তাহাকে চিড়া দধি খাইতে দিলেন। রাজকুমার স্বচ্ছন্দে খাইয়া ফেলিলেন। ইহাতে তাহার পিতামাতা অত্যন্ত খুশি হইয়া রাজকুমারকে সামনের সপ্তাহে পুনরায় ফকীর সাহেবের জন্য পেরা মিঠাই লইয়া পাঠাইতে মনস্ত করিলেন। পর সপ্তাহে ওয়ালী মস্তানের সহিত রাজকুমারকে পেরা মিঠাই দিয়া পুনরায় পাঠাইলেন এবং যাহাতে রাজকুমার ভবিষ্যতে ধনেজনে বিদ্যাবুদ্ধিতে ঐশ্বর্য্যশালী ও দীর্ঘায়ূ হয়, তাহার জন্য দোয়া চাহিতে বলা হয়। এইবার হযরত তাহাকে যথারীতি নামদাম পিতার নাম প্রভৃতি জিজ্ঞাসা করিলেন। রাজকুমার উত্তর করিলেন, “হুজুর নাম রাজকুমার। বাবা আমাকে এই পেরাগুলি লইয়া আপনার কাছে পাঠাইয়াছেন। আমি আপনার আশীর্বাদে গলক্ষত রোগ হইতে আরোগ্য লাভ করিয়াছি। আমার দীর্ঘায়ূ, বিদ্যাবুদ্ধি !” হযরত সাহের আমার মাথা ও পিঠের উপর হাত বুলাইয়া বলিলেন, “আচ্ছা-আশীর্বাদ করিলাম। তুই বড় লোক হবি।” ইহার পর হইতে কোন দিন কোন পরীক্ষায় তিনি অকৃতকার্য হন নাই। বি. এ, পাশ করিয়া এম, এল. সি, হইয়াছেন। রায়বাহাদুর খেতাব পাইয়াছেন। মাওলানা শাহ সৈয়দ দেলাওয়ারে হোসাইন সাহেব বলেন, “যখন মরহুম শাহজাদা খায়রুল বশর মিঞা, হাইদকান্দি নিবাসী মৌং ছিদ্দিক আহমদ বি, এল ও সৈয়দ ছায়াদুল্লাহ সহ তখনকার ‘বি’ ডিভিসনের এস, ডি ও মৌং সৈয়দ আহম্মদ হামিদ হাছান নোমানী সাহেবের বাসায় দরবার শরীফস্ত মোছাফেরদের সুবিধার্থে কতেক গঠনমূলক কার্য্যের পরামর্শ ও সমিতি সম্বন্ধে আলোচনা করিতে যাই তখন উক্ত এস, ডি ও সাহেব, রায়বাহাদুর হযরতের পবিত্র নাম উচ্চারণ করিবার সাথে সাথে বলিয়া উঠিলেন, “কি বলিলেন! আমার তো সমস্ত শরীর আলোড়ন করিয়া উঠিয়াছে। উনি কি সেই ফকীর হযরত সাহেবের পৌত্র! যাঁহার আশীর্বাদে আজ আমি রায়বাহাদুর বলিয়া আমাদের সামনে তিনি তাহার বাল্যকালের উপরোক্ত ঘটনাটি বর্ণনা করেন।
**তবরুক মাধ্যমে জটিল রোগমুক্তি ঃ-
নোয়াখালী জিলার অন্তর্গত ছিলনীয়ার নেয়াজপুর গ্রাম নিবাসী মরহুম মাইজুদ্দিন ভুঁইয়ার পুত্র হাজী হাফেজ আহমদ উল্লাহ ভূঁইয়া সাহেব বলেন, আমি কোন এক সময় এমন এক রোগে আক্রান্ত হইয়াছিলাম, যাহার কোন প্রকার চিকিৎসা না পাইয়া আমি জীবনের আশায় একেবারে হতাশ হইয়া পড়িয়াছিলাম। শেষে লোকমুখে হযরতের আধ্যাত্মিক ক্ষমতার প্রশংসা শুনিয়া তাহার খেদমতে দোয়া প্রার্থী হইয়া আসিতে বাধ্য হইলাম। আমি এক সের খোরমা লইয়া হযরতের দরাবারে আসিয়া বহির্দায়েরা শরীফে প্রবেশ করিতেই ভিতর বাড়ী হইতে ছয় সাত বসরের একজন ছেলে আসিয়া বলিলেন, “নোয়াখালী হইতে আগত মোছাফেরকে হুজুর তলব করিয়াছেন।” সেখানকার কেহ ইহাতে সাড়া না দেওয়ায় আমি বলিলাম আমি তো নোয়াখালীর লোক। তখন বালকটি আমাকে বলিলেন,- আপনাকে হুজুর ডাকিয়াছেন। পরিচয় জিজ্ঞাসায় জানিলাম, বালকটি হযরতের নাতি ” যিনি বর্তমান গদীনশীন, হযরত মাওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ দেলাওর হোসাইন সাহেব যাহাকে হযরত অতি স্নেহ ভরে ‘দেলাময়না’ নামে অভিহিত করিতেন।” অতঃপর আমি তাহার সহিত আন্দর বাড়ীতে হযরতের ‘হুজুরায়’ হাজির হইলাম। হযরত তখন চক্ষু মুদিতাবস্থায় বসিয়া আছেন। আমি প্রবেশ করিয়া সালাম দিতেই আমাকে নাম জিজ্ঞাসা করিলেন। আমি তিনবার তাহার প্রশ্নোত্তরে নাম বলিলাম। তিনি চক্ষু বন্ধাবস্থায় আবার জিজ্ঞাসা করিলেন। “আপনি কেন আসিয়ছেন, আমি বিনীতভাবে তাঁহার কাছে আরজ করিলাম। হুজুর! অনেক দিন যাবত রোগে কষ্ট পাইতেছি। কোন ঔষধেই ফল পাইতেছিনা। নিরূপায় হইয়া হুজুরের খেদমতে দোয়ার জন্য আসিয়াছি। এই বলিয়া খোরমাগুলি তাহার সামনে রাখিলাম। তিনি খোরমাগুলির উপর হাত রাখিয়া একটি খোরমা আমাকে দিয়া বলিলেন; দোয়া করিতেছি” উপস্থিত লোকদের মধ্যে এক একটি খোরমা বন্টন করিয়া দিয়া একটি খোরমার অর্ধেকাংশ তিনি নিজ মুখে দিলেন এবং অপরাংশ তাঁহার পৌত্র দেলাময়নার হাতে দিয়া বলিলেন, খোরমাগুলি সৈয়দের বেটিকে দিয়া আসেন।” আমি বিমারের কথা বলিলাম বটে: কিন্ত তিনি আমার কি বিমার তাহা জিজ্ঞাসা করিলেন না। আমিও বলিলাম না। মনে করিয়াছিলাম পরে বলিব কিন্ত ইহার পূর্বেই তিনি আমাকে বিদায় পাইয়া দিয়া দিলেন। কি করিব! হযরতে খেদমত হইতে বিদায় পাইয়া অগত্যা বাড়ীর প্রতি রওয়ানা হইলাম। পথে চিন্তা করিতে লাগিলাম; কি ব্যাপার; আমি যে নোয়াখালী হইতে আসিয়াছি তাহা তিনি কি করিয়া জানিলেন। নিশ্চয় তাঁহার কাশ্‌ফ আছে। অসুখের কথা কিছু খুলিয়া বলিতে পারিলাম না। মনকে প্রবোধ দিলাম, আমি না বলিলেও নিশ্চয় তিনি জানেন বলার হয়তো দরকার ছিল না। তাই জিজ্ঞাসাও করেন নাই। আমি বাড়ী যাওয়ার পর হইতে খোদার ফজলে ও হযরতের দোয়ার বরকতে দিন দিন আরোগ্যের পথে অগ্রসর হইতে লাগিলাম এবং কিছু দিনের মধ্যে সম্পুর্ণভাবে সুস্থ হইয়া গেলাম। একটি মাত্র খোরমার দ্বারা হযরত আমাকে কি মহৌষধ যে খাওয়াইয়া দিয়াছেন তাহা তিনি জানেন! সেই হইতে আল্লাহর প্রতি এবং তাঁহার প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস ও ভক্তি বাড়িয়া গেল! বুঝিতে পারিলাম তিনি একজন সর্বশ্রেষ্ঠ অলিউল্লাহ। সেই হইতে আমি প্রায়ই দরবার শরীফ যাওয়া আসা করিতেছি।
**সরবত দানে হযরতের ফয়েজ বর্ষণ ও আত্মশুদ্ধি করণঃ-
একদা হযরত স্বীয় খাদেম হেদায়ত আলীকে রমজানের দিনে সরবত পান করাইতেছিলেন। ইহা দেখিয়া হযরত সাহেবানী বলিলেন সে তো রোজা রাখিয়াছে। আপনি রোজার মধ্যে তাহাকে সরবত পান করাইতেছেন কেন? তাহাকে তাড়াইয়া দেন। সে কোন জাজ কর্ম করে না, শুধু বসিয়া খাওইতেছেন।; হযরত সাহেব উত্তর করিলেন, “তাহাকে সাফ করিয়া দেলাম।” দেখিলাম সংসারে তাহার বাড়ী ঘর নাই। সুতরাং তাহাকে তাড়াইয়া দিলে সে কোথায় যাইবে। সে আপনার বাড়ীর আস্তানায় ঝাড়- দিবে। আঙ্গিনায় পড়িয়া থাকিবে। আর না দিলে পানি খাইয়া থাকিবে। হযরতের কথায় হযরত সাহেবানী চুপ হইয়া গেলেন। মাগরেবের নামাজান্তে তিনি মোরাকাবায় বসিয়া দেখিতে লাগিলেন। হযরত, হেদায়ত আলীর কি সাফ করিতেছে! তিনি দেখিলেন হেদায়ত আলী বক্ষের উপরিভাগ সাদা, তদ্‌ নিম্নভাগ লাল ও তদ্‌ নিম্নভাগ লাল ও কাল ভাগ ক্রমশঃ সাদা হইয়া সর্বোপরি সাদা ভাগের সঙ্গে মিশিয়া যাইতেছে। তখন হযরত সাহেবানী বুঝিতে পারিলেন হযরত সরবত দানে হেদায়ত আলীর আত্মশুদ্ধিই করিতেছেন। সেই দিন হইতে তিনি আর হযরতের কোন কাজে আপত্তি করিতেন না।
**হযরতের আদেশের প্রভাবে দুধ ও কলা খাইয়া কামড়ি রোগ মুক্ত ঃ-
বরমা হাইস্কুলের ভূতপূব হেড মৌলভী মীর আহমদ ফারুকী সাহেব বলেন, তিনি মোহছেনীয়া মাদ্রাসায় পড়াকালীন তাহার মামা মৌলভী লুৎফর রহমান সাহেবের সহিত মাইজভান্ডার হযরত সাহেব কেব্‌লার খেদমতে আসেন। তিনি তাহার আম্মাজানের পেটকামড়ি রোগের আরোগ্যের জন্য হযরতের নিকট দোয়া প্রার্থনা করেন। হযরত তাহাকে বলিলেন, “তোমারী আম্মীকো কেলা আওর দুধ খানে কো বলো আচ্ছা হো যায়েগী।” বাড়ী যাইয়া তিনি তাঁহার মাতাকে বলিলেন। তাহার মাতা তিন দিন উহা খাওয়ার পর সম্পূর্ণ সারিয়া উঠেন। ইহাতে তাহার মাতা অত্যন্ত আশ্চর্য্য হইয়া গেলেন। এতদিন এত দুধ ও কলা খাইয়াছেন; কত ঔষধ খাইয়াছেন; কোন ফল হইল না অথচ হযরতের আদেশে তিনদিন, ইহা নিশ্চয় হযরতের আদেশের ফয়েজ বরকত মাত্র।
**রুটি প্রদানে ফয়েকজ এনায়ত ঃ-
উপরের বর্ণনাকারী মৌলভী মীর আহমদ ফারুকী সাহেব আরো বলেন, তাঁহার মামা মৌলভী লুৎফর রহমান সাহেব, হযরতের নিকট বায়াত গ্রহণের নিমিত্ত তিনবার আসিয়া চেষ্টা করেন। পুনরায় একদিন বায়াত করিলেন না। আমরা সেখান হইতে বিদায় গ্রহণ করিয়া বাহিরের ঘাড়িতে আসিয়া ভাহ খাইতে চাহিলাম। উত্তর আসিল পাওয়া যাইবে না। অল্পক্ষণ পরে দেখা গেল, পাঁচখানা বড় রেকাবীতে অল্প অল্প জল ভাত, লটিয়া শুটকি ও মিঠাকোমড়ার তরকারী সহ আমাদের জন্য আনা হইয়াছে আমরা উহা খাইতে আরম্ভ করিরাম। পরে দেখি আবার গরম ভাত গোস্ত আসিয়াছে তাহা হইতে আমরা পেট ভরিয়া খানা খাইলাম। আন্দর বাড়ী হইতে একজন খাদেম আসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন “লুৎফর রহমানকে। কেবল তোমাকেই খাইতে দিয়াছেন” আমার মামু সহেব অত্যন্ত আনন্দের সহিত উহা খাইয়া ফেলিলেন, সেই দিন হইতে দেখা গেল তাহর আধ্যাত্মিক প্রেরণা দিন দিন প্রবল হইয়া গেল।
**হযরত অপূর্ব কেরামত ব্যাঘ্রের কবল হইতে প্রাণ রক্ষাঃ
বরিশাল নিবাসী একজন লোক হযরতের কামালিয়াত সম্বন্ধে অত্যাগ্রহে তাহার দরবারে আসিয়া তাহার হাতে বায়াত গ্রহণ করিতে নিয়ত করিলেন। নিজামপুর আসিয়া তিনি বারৈয়াঢালা পার হইয়া মাইজভান্ডার আসিবার মানসে পার্বত্য পথ ধরিলেন। কিছুদূর অগ্রসর হইবার পর তাহার অত্যন্ত পায়খানার হাজত হয়। তিনি রাস্তার পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে পাযখানার উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেন। আবশ্যকীয় কার্য্য সমাধা করিয়া তিনি দণ্ডায়মান হইলে হঠাৎ দেখিতে পাইলৈণ এক ভীষণাকৃতি ব্যাঘ্র বজ্রের মত গর্জ্জণ করিয়া তাহার সম্মুখে দাড়াইয়া রহিয়াছে। তিনি ব্যাঘ্রের বিকট মূর্তি দর্শনে ভয়ে জ্ঞানহারা হইয়া দাড়াইয়া রহিলেন। ভাবিলেনে হায়! আর বুঝি রক্ষা নাই। জীবন বোধ হয় ব্যাঘ্রের কবলে হারাইতে হইবে। আমার মত হতভাগা আর কে আছে! একজন অলি আল্লাহর দরবারে যাইয়া পাপময় জীবনকে সার্থক করিব মনে করিয়াছিলাম। তাহা আর হইল কই? বোধ হয় তাহার খেদমতে যাওয়া আমার ভাগ্যে নাই। হায়! আল্লাহ! তোমার দোস্তের দরবারে যাইতে বুঝি আমাকে দিলে না? এই সমস্ত চিন্তা করিতে হঠাৎ দেখিতে পাইলেন, এক সূর্ম মুর্তি পুরুষ হঠাৎ কোথা হইতে আসিয়া দূর হও হারামজাদা বলিয়া হষ্কার দিয়া তাহার হস্তস্থিত লাঠি দিয়া ব্যাঘ্রটির মাথায় সজোরে আঘাত করিলেন। যষ্টির ভীষণ আঘাতে ব্যাঘ্রটি চিৎকার করিয়া পালাইয়া গেল, সঙ্গে সঙ্গে সেই লোকটিও কোথায় অদৃশ্য হইয়া গেলেন। তিনি এই অদ্ভুত ঘটনা দেখিয়া স্তম্ভিত হইয়া দাড়াইয়া রহিলেন। তিনি চিন্তা করিতে লাগিলেণ, এই মহাসষ্কট হইতে কে এই মহাপুরুষ আমার প্রাণ রক্ষা করিলেন? তিনি যখন স্বাভাবিক হইলেন তখন পথ চলিতে লাগিলেন। তিনি চিন্তা করিতে লাগিলেন, আমি মাইজভান্ডারীর দরবারে যাইতেছি, সেই জন্য বোধ হয় আল্লাহ গায়েবী সাহায্য দ্বারা আমার প্রাণ রক্ষা করিয়াছেন। দরবারের প্রতি তাহার ভক্তি পূর্ব অপেক্ষা আরো বাড়িয়া গেল। দরকার শরীফে হাজির হইয়া তিনি হযরতকে দেখিয়া বিষ্মযে হতবাক হইয়া রহিলেন। তিনি তাহার আপদমস্তক পর্যবেক্ষন করিয়া হঠাৎ এক চিৎকার দিয়া উঠিলেন এবং হযরতের পায়ে পড়িয়া কাদিতে লাগিলেন। হযরত তাহার পিঠের উপর হাত দিয়া বলিতৈ লাগিলেন, মিঞা! আল্লাহর কুদরত দেখিয়া এতই আশ্চার্য্যান্বিত হইতেছে কেন? আল্লাহতায়ালা ইহা অপেক্ষা আরো দয়ালু, আরো ক্ষমতাবান। তিনি সব কিছু করিতে পারেন। হযরতের মধূর কালাম শুনিয়া লোকটি চুপ হইলেন: হযরত আন্দর হুজরায় তশরিফ নিয়া গেলেন। উপস্থিত লোকগন তাহার চিৎকার করার কারণ জিজ্ঞাসা করায় তিনি পথের সমস্ত ঘটনা তাদের নিকট বর্ণনা করেন। লোকটি বলিলেন পথের মধ্যে আমাকে উদ্ধারকারী লোকটিকে আমি কোন ফেরেস্তা অথবা খিজির (আঃ) বলিয়া মনে করিয়াছিলাম। কিন্ত এখানে আসিয়া দেখিতেছি যে, হযরত সাহবেই তাহার এই লাঠি দিয়া বাঘের মাথায় আঘাত করিয়া আমাকে রক্ষা করিয়াছেন। আমার প্রাণ রক্ষাকারীকে হঠাৎ দেখিয়াই আমি নিজেই স্মরণ করিতে না পারিয়া হঠাৎ চিৎকার করিয়া উঠিয়াছিলাম। সকলে ঘটনাটি শুনিয়া অবাক হইল।
**হযরতের অদ্ভুত অধ্যঅত্মিক প্রভাবে ব্যাঘ্রের মুখে লোটা নিক্ষেপে ভক্ত উদ্ধারঃ
একদিন হযরত কেবলা জালালী হালতে পুকুর পাড়ে বসিয়া অজু করিতেছেন হঠাৎ। তিনি বলিয়া উঠিলেন, “হারামজাদা তুই এখান হইতে দুর হস্‌ নাই”। এই বলিয়া তাহার হস্তের লোটাটি জোরে পুকুরের জলে নিক্ষেপ করিলেন। তখনও তাহার অজু সমাপন করা হয় নাই। তাড়াতাড়ি খাদেমগণ অন্য লোটা আনিয়া দিলেন। তিনি অজু সমাপন করিয়া দায়ের শরীফে চলিয়া যান। এদিকে হযরত পুকুরে লোটা ফেলিয়া দিয়েছেন দেখিয়া খাদেমগন পুকুরে নামিয়া লোটা তালাস করিতে লাগিলেনন। অনেক তালাসের পরও যখন পাওয়া গেলনা, তখন তাহারা হতাশ চিত্তে উঠিযা গেলেন। অলি উল্লাহদের কার্য্য বুঝা মুস্কিল। তিনি গালি দিলেন কাকে এবং লোটাই বা পুকুরে কেন নিক্ষেপ করিলেন সকলে চিন্তা করিতে লাগিলেন। এত তালাসের পর লোটা পাওয়া না যাওয়ার কারণই বা কি? ইহার দুই দিন পর রাঙুনিয়ার নিবাসী আছমত আলী নামক হযরতের জনৈক ভক্তশিষ্য কিছু নাস্তা ও হযরতের পুকুরে নিক্ষেপ করা লোটাটি লইয়া দরবার শরীফ হাজির হইলেন। তিনি হযরতের খেদমতে যাইয়া লোটা ও নাস্তাগুলি সামনে রাখিলেন এবং কদমবুচি করিয়া অনেকক্ষন যাবত হযরতের কাছে দাড়াইয়া কাদিতে লাগিলেন। পরে বাহিরে আসিলে সকলে তাহাকে লোটা কেথায় পাইলেন জানিতে চাহিল। তিনি বলিতে লাগিলেন সেই এক অপূর্ব ঘটনা। এই লোটার মারফত হযরত আমার প্রাণ রক্ষা করিয়াছেন। ভাই, আমি গরীব মানুষ মনে করিয়াছিলাম পাহাড় হইতে কিছু লাকড়ী আনিব এবং বিক্রয় করিয়া যাহা পাইব তা দিয়া নাস্তা তৈয়ার করিয়া হযরতের জন্য আনিব। মাইজভান্ডার দরবার শরীফ হইতে প্রায় ৪২ মাইল দূরে রাঙ্গুনীয়া কোদালা পাহাড়ে গিয়া কাঠ সংগ্রহ করিয়া এক গাছ তলায় আটি বাধিতেছিলাম। এমন সময় এক বিরাট বাঘ কোথা হইতে হঠাৎ আসিয়া আমার সামনে হাজির হইল। বাঘের আকস্মিক আক্রমণ প্রচেষ্টায় অনন্যেপায় হইয়া আমি “এয়া গাউছুল আজম” বলিয়া চিৎকার করিয়া উঠিলাম। ইহা বলিতে না বলিতেই অকস্মাৎ শূন্য হইতে একটি লোটা আসিয়া বাঘের মুখের উপর পতিত হইল। বাঘটি ভয়ে চিৎকার করিয়া পালাইয়া গেল। আমি অপ্রত্যাশিত ভাবে ব্যাঘ্রের কবল হইতে রক্ষা পাইলাম। লোটাটি হাতে লইয়া দেখিলাম ইহা হযরতের লোটা। লোটাটি হযরতকে ব্যবহার করিতে আমি দেখিয়াছি। তাই লোটাটি ও লাকড়ীগুলি লইয়া বাড়ী আসিলাম এবং বিক্রয় করিয়া হযরতের খেদমতে আনিতে সামান্য নাস্তা তৈয়ার করিলাম। অদ্য এই লোটা ও নাস্তা লইয়া হযরতের খেদমতে হাজির হইয়াছি। আমাকে হযরত অসীম দয়া করিয়া তাহার বেলায়তী ক্ষমতায় নরখাদকের কবল হইতে রক্ষা করিয়াছেন! না হয়তো আমার উপায় ছিল না। আয়নারে বারী”।
**হযরতের যষ্ঠির প্রহারে ফয়েজ রহমত দান ও মৃত দেহে প্রাণ সঞ্চারঃ
ভুজপুর নিবাসী কবি সৈয়দ আবদুল ওয়ারেছ সাহেব হযরতের অন্যতম ভক্ত ও শিষ্য ছিলেন। তিনি অধিকাংশ সময় হযরতের খেদমতে থাকিতেন। সর্বদা রোজা রাখিতেন। ইহাতে তাহার শরীর অতিশয় দুর্বল ও কৃশ ছিল। তিনি সময় সময় হযরতের পদযুগল এমনবাবে জড়াইয়া ধরিতেন যে, বাহিরের লোকজন আসিয়া তাহাকে হযরতের পা হইতে ছাড়াইয়া লইতে হইত। একদিন হযরত বাড়ীর সামনে পুকুর পাড়ে “জজবা” হালতে বসিয়া রহিয়াছেন। তখন সৈয়দ আবদুল ওয়ারেছ দৌড়াইয়া আসিয়া হযরতের পা মোবারক দুই হাতে এমনভাবে জড়াইয়া ধরিলেন যে, কেহই তাহাকে ছিনাইয়া নিতে পারিতেছেন না। হযরত তাহাতে হস্তস্থিত লাঠি দ্বারা ভীষণভাবে প্রহার করিতে আরম্ভ করিরেন। এতে তো দুর্বল শরীর, তদুপরি হযরতের ষষ্ঠির প্রহার। তিনি বেশিক্ষণ সহ্য করিতে পারিলেন না। ধরাশায়ী হইয়া পড়িলেন। নাকে মুখে ফেনা আসিল, মৃত্যুর লক্ষণ দেখা দিল। উপস্থিত লোকজন তাহার এই ভয়নাক অবস্থা দর্শনে ভীত ও ব্যস্ত হইয়া পড়িল। খবর রচিল কবি আবদুল ওয়ারেছ সাহেব মারা গিয়াছেন, লোকজন ভয়ে পালাইতে লাগিল। অনেকক্ষন পর হযরতের শান্ত অবস্থ ফিরিয়া আসিল। তিনি দৃষ্টি করিতেই আবদুল ওয়ারেছের অবস্থা গুরুতর বলিয়া উপলব্ধি করিলেন কি যেন তিনি ভাবিলেন। ক্ষণকাল চক্ষু বুঝিয়া রহিলেন। হঠাৎ এ দিক ও দিক তাকাইয়া দেখিলেন। সেখানে কেহ নাই। সকরেই পালাইয়া গিয়াছে। হযরত ডাকিয়া বলিলেন, ওখানে কে আছে। হারিচান্দ নামক হুজুরের ভক্ত তখনও পুকুরের পাড়ে বাশ আড়ালের মধ্যে লুকাইয়া ছিল। সে উত্তর করিল “হুজুর আপনার এক নরাধম গোলাম আছি। হযরত তাহাকে সজোরে এক বান্ডিল বাশ পুকুরে নিক্ষেপের আদেশ দিলেন। হারিচান্দ্র এক বান্ডিল বাশ তাড়াতাড়ি জলে নিক্ষেপ করিতে “ঝুপ” করিয়া এক ভীষণ শব্দ হইল। খোদার রহস্য বুঝা ভার, বাশে শব্দ শুনিতেই মৃতপ্রায় সৈয়দ আবদুল ওয়ারেছ আস্তে আস্তে চক্ষু খুলিয়া উঠিয়া বসিলেন। তিনি সংজ্ঞাপ্রাপ্ত হইলেন। তাহার অবস্থাদৃষ্টে মনে হইল তিনি যেন বহুক্ষণ নিদ্রার পর জাগ্রত হইয়া উঠিয়াছেন। হযরত প্রস্থান করিলেন। সকলে তাহাকে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল যে, তাহার কেমন বোধ হইতেছে? কোন প্রকার অসুবিধা অনুভব করিতেছেন কিনা ? কিন্ত তিনি যে কিছুই জানেন না। বলিলেন যে, তিনি এইমাত্র ঘুম হইতে জাগিয়েছেন। তখন সকলেল ধারণা হইল, ইহা হযরতের আধ্যাত্মিক লীলা ছাড়া আর কিছুই নহে। আউলিয়াদের কেরামত বুঝা আরো মুস্কিল। চারিদিকে খবর ছড়াইয়া পড়িল। মৃত আবার জীবিত হইয়াছে।

**হযরতের বেলায়তী প্রভাবে পূর্ণজীবন প্রাপ্তঃ
হযরতের প্রিয়তম পৌত্র, তাহার নয়নমণি, হযরত মাওলানা শাহছুফী সৈয়দ দেলোয়ার হোসাইন সাহেব শিশুকালে একবার কঠিন রোগাক্রান্ত হন। তাহার বয়স তখন মাত্র দুই বৎসর। রোগের চিকিৎসা চলিল। কিন্তু দিন দিন রোগ বৃদ্ধি ছাড়া আরোগ্য দেখা গেলনা। অকস্মাৎ একদিন ভীষণভাবে রোগাক্রান্ত হইয়া তাহার শ্বাস প্রশ্বাস ক্রিয়া বন্ধ হইয়া গেল। শিরা বসিয়া গেল। সকলে পরীক্ষা করিয়া দেখিল, তিনি আর ইহজগতে নাঈ। কান্নাকাটির রোল পড়িলে কেহ কেহ দৌড়াইয়া হযরতের হুজরা শরীফে যাইয়া তাহাকে সংবাদ দিল। হযরত তশরীফ নিয়া দেখিলেন, তিনি মৃত। তখন হযরত কি আর নীরব থাকিতে পারেন। তিনি তো হযরতের ভাবী খলিফা! তাহারই এক উত্তরাধিকারী। এক্ষেত্রে কি তিনি তাহার গুপ্ত রহস্য ব্যক্ত না করিয়া পারেন ! তবুও তিনি খোলাখুলি ক্ষমতা জাহির করিতে নারাজ। তাহার নিরাবরণীয় বেলায়তী শক্তির উপর আবরণ দিতে চেষ্টা করিতেছেন, একটি উছিলা ঠিক করিলেন “কে আছ, একটি জলপূর্ণ কলসী উঠানে নিক্ষেপ কর। তাহাই করা হইল। কলসী ভাঙ্গার সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাহার আধ্যাত্মিক নয়ন দৃষ্টিতে তদীয় নয়ন পুত্তলী পৌত্রের পানে রহমত বর্ষণ করিতে লাগিলেন। কলসী ভাঙ্গার শব্দ ও হযরতের দৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে তিনি কাদিয়া উঠিলেন। তখন আর তাহার মুমূর্ষ অবস্থা নাই। রোগ যেন সারিয়া গেল। সেই দিন হইতে তাহার দাদী আম্মা হযরতের সাহেবানী প্রায় বলিতেন, তুমি তো জয়নাল আবেদীন । তোমাকে তো হযরত কারবালা প্রান্তরের মৃত্যু কবল হইতে ফিরাইয়া আনিয়াছেন।
**হযরতের আধ্যাত্মিক প্রভাবে গরুর দুগ্ধ তিক্ত স্বাদে রূপায়িতঃ-
হযরত প্রতিবেশী মোহাম্মদ ওয়াশীল নামক এ ব্যক্তি একটি বাজা অথাৎ বন্ধ্যা গরু খরিদ করে। লোকটি খোদার দরবারে প্রার্থনা জানায় যে, যদি তাহার গুরুটি প্রসব করে, প্রথম দিনের সমস্ত দুধ হযরতের জন্য নিয়া যাইবে। কিছুদিন পরে আল্লাহর রহমতে গরুটি গর্ভবর্তী হইল এবং যথাসময়ে একটি বাচ্ছা প্রসব করে। দুগ্ধ দোহন করিয়া সে খাইবার জন্য ঘরে রাখিয়া দেয়। অনেক দিনের কথা হওয়ায় নিয়তের কথা তাহার স্মরণ ছিল না। রাত্রে সে মেহমান লইয়া খাইতে বসিল। খাওয়ার পর দুধ আনা হইল। দুধ মুখে দিয়ে দেখিল, এত তিক্ত যে, খাওয়া অসম্ভব কেহই দুধ খাইতে পারিলনা। মনে করিল দুধে কিছু পড়িয়াছে। দুধ তিক্ত হওয়ার কোন কারণ দেখিতে পাইল না। অনুসন্ধানে জানিল দুধে কিছু পড়েও নাই। গরুর দুধ তিক্ত হইতে জীবনে শুনেও নাই। কি অস্বাভাবিক ব্যাপার। হঠাৎ তাহার স্মরণ হইল যে প্রথম দিনের দুগ্ধ লইয়া হযরতের জন্য আনিবার নিয়ত করিয়াছিল। অতত্রব পরদিন দুগ্ধ সে হযরতের দরবারে আনিল। দুধ হযরতের সামনে রাখিতেই তিনি বলিয়া উঠিলেন, “প্রথম দিনের দুগ্ধই আমাকে দেওয়ার কথা, ইহ তুমি লইয়া যাইও।” ছেলেমেয়ে লইয়া খাইও।” তখন মোহ্মমদ ওয়াশীল মিঞা হযরতের খেদমতে ক্ষমা ভিক্ষা চাহিল। বলিল, “হুজুর আমি একেবারে ভূলিয়া গিয়াছিলাম। আমাকে ক্ষমা করুন। দুগ্ধ ভাল হওয়ার জন্য দোয়া চাই।” তখন হযরত দুগ্ধ গ্রহণ করিলেন পরদিন হইতে দেখা গেল গাভীর গুদ্ধ স্বাভাবিক হইয়াছে। তার কোন দোষ বা তিক্ততা নাই। সকলে ব্যাপার বুঝিতে পারিল। অলি আল্লাহদের কোন কাজে অবহেলা বা গাফেলতি করা অন্যায়।
**হযরতের আধ্যঅত্মিক প্রভাবে বন্য জন্তর কবল হইতে ইক্ষু ক্ষেত রক্ষাঃ
এক ব্যক্তি সাদা আখের ক্ষেত করিত। প্রতি বৎসর বন্য শৃগাল তাহার ক্ষেত নষ্ট করিত। কয়েক বৎসর ক্ষতিগ্রস্ত হইয়া সে নিয়ত করিল যে, এবার আল্লাহ যদি তাহার ক্ষেত নিরাপদে রাখেন, তবে সে গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী হযরত সাহেব কেবলার জন্য এক গাইট ইক্ষু ও এক কলসী ইক্ষুগুড় হাদিয়া নিবে। আল্লাহতায়ালার অসীম কৃপা। এই বৎসর তাহার ক্ষেত অক্ষয় অবস্থায় রহিল। বৎসরান্ত ইক্ষু চিবাইয়া সে মনে করিল, “এতগুলি নিব কেন! অল্প করিয়া নিয়া যাই।” অতত্রব তাহার খেয়াল মতো দুইখানা ইক্ষু ও দুই সের মিঠা লইয়া হযরতের দরবারে আসিল। ইহা দেখিয়া হযরত অতিশয় রাগান্বিত হইয়া উঠিল, আমি সারা বৎসর তোমার ক্ষেত পাহারা দিয়া শৃগাল তাড়াইয়া হযরান হয়েছি; আর তুমি এক গাইট ইক্ষু ও এক কলসী মিঠা দিতে কুন্ঠিত? যাও আমি কৃপন লোকের দ্রব্য খাইনা। নিয়া যাও এই বলিয়া দ্রব্যগুলিসহ তাহাকে তাড়াইয়া দিলেন লোকটি পুনরায় নিয়ত মত দ্রব্য লইয়া হযরতের খেদমতে আসিল। অনেক ক্ষমা চাওয়া ও কাতর মিনতির পরও হযরত আর উহা গ্রহণ করিলেন না। ইহার পর বৎসরও লোকটি আবার নিয়ত করিল। কিন্ত আর তাহার নিয়ত ফলে নাই।
**ধান্য ক্ষেত হেফঅজতে হযরতের প্রভাব ঃ
হাটহাজারী থানার অন্তর্গত এনায়েতপুর নিবাসী সৈয়দ ওহাব উল্লাহ সাহেব বলেন, তাহাদের গ্রামের প্রাণকৃষ্ণ ধুপি এক বৎসর তাহাদের পাহাড়ী জমিতে ধান্য রোপন করিয়াছিল। সে এলাকায় প্রতি বৎসর বন্যাবরাহ ও বানর দ্বারা ফসল নষ্ট হইত। কেহ ধান্য আনিতে পারিত না। প্রাণ কৃষ্ণ নিয়ত করিল, আল্লাহ যদি তাহার ধান্য নিরাপত্তা বাড়ীতে আনিয়া দেয় তবে সে প্রতি বৎসর ফকীর মাওলানা সাহেবের জন্য কিছু কিছু চাউল দিবে। খোদার ফজরে সেই বৎসর তাহার ধান্য সম্পর্ণ নিরাপদে রহিল। কোন জানোয়ারই তাহার ধানের কাছে আসিল না। নিরাপদে ধান্য বাড়ীতে আনিল এবং একমন চাউল তৈয়ার করিয়া হযরতের দরবারে চাউল দিত। ইহা দেখিয়া অন্যাণ্য কৃষকগনও নিয়ত করিতে লাগিল। ইহাতে তাহারা বুঝিতে পারিল বনের হিংস্র পশু পক্ষী পযন্ত হযরতের আধ্যাত্মিক প্রভাবে প্রভাবান্বিত এবং হযরতের চরণে অনুগত।
**হযরতের পবিত্র জুতা মোবারকের ধুলার বদৌলেত দুরারোগ্য ব্যাধি নিরাময়ঃ
হযরত মৌলানা কাঞ্চনপুরী সাহেবের মামু সাহেব কঠিন কলিজা কামড়ী রোগে ভুগিতেছিলেন। অনেক চিকিৎসার পরও কোন ফল না হওয়ায় হযরতের দরবারে দোয়ার জন্য আসিবেন মনস্থ করিয়াছেন। এমন সময় ডাক্তার সামসুজ্জামান তাহাকে একটি ঔষধ লিখিয়া দিলেন। ইহা দেখিয়া মির্জাপুরী মৌলানা সৈয়দ মছিউল্লাহ সাহেবের পুত্র মৌলভী ফজলুল বারী সাহেব তাহাকে বলিলেন যে এক নিয়তে হযরতের জুতা মোবারকের ধুলা মালিশ করিলে তাহার কামড়ী রোগ আরোগ্য হইয়া যাইবে। তাহার অত্যন্ত বিশ্বাস হইল। তিনি দরবার শরীফ বসিয়া হযরত কেবলা কাবার জুতা মোবারক হইতে কিছু মাটি নিয়া দরদের জাযগায় মালিশ করিতে লাগিলেন। আল্লাহর রহমতে এবং হযরতের আলৌকিক প্রভাবে তাহার কামড়ী রোগ চিরতরে নিমুল হইয়া যায়। তিনি বলেণ, তাহার শেষ জীবন পর্যন্ত এই কামড়ী রোগ আর আক্রমণ করে নাই। এইরূপ হযরতের জুতা মোবারকের মাধ্যমে ফয়েজ প্রাপ্ত হইয়া শতশত লেখক রোগারোগ্য হইয়াছে বলিয়া প্রমাণ আছে। “আয়নায়ে বারী”

**কাঠালের অর্ধাংশ রাখিয়া বাকী অংশ ফেরত দানে কাশ্‌ফ শক্তির পরিচয়ঃ
ইছাপুরী জনাব মৌলানা আবদুচ্ছালাম সাহেব বলেন, একদিন তাহার জেঠা মুন্সী আবদুল আজিজ সাহেব নিয়ত করিণে, “এয়া আল্লাহ! আমার কাঠাল গাছে যদি কাঠাল ফলে, সবচেয়ে বড় ফলটি মাইজভান্ডারী ফকীর মাওলানা সাহেবকে হাদিয়া দিব।” কয়েক বৎসর যাবত তাহার এই কাঠাল গাছে কোন ফলই ফলিতে ছিলনা। খোদার মহিমায় সেই বৎসর গাছে যথেষ্ট পরিমাণ ফল ফলিল। তিনি যখন বড় কাঠালটি কাটিয়া হযরতের জন্য নিতে প্রস্তুত হইলেন, তখন তাহার স্ত্রী বলিলেণ, ফকীর মাওলানা সাহেব কি এতবড় কাঠাল সবটা খাইতে পারিবেন। অর্ধেক কাঠাল নিলো তো চোরে। ইহাতে তাহার জেঠা আবদুল আজিজ সাহেব তাহার জেঠাই সাহেবার উপর অতি অসন্তষ্ট হইলেন এবং তাহাকে তিরস্কার করিলেন। অতঃপর তিনি কাঠালটা লইয়া হযরতের দরবারে পৌছিলেন। হযরতের সামনে কাঠালটি রাখা হইল। হযরত তাহাকে বলিলেন “মুন্সী সাহেব! ফকীর সাহেব কি এতবড় কাঠাল খাইতে পারেন। আপনি অর্ধেক কাঠাল রাখিয়া বাকী অর্ধেক আপনার বিবি সাহেবানীর জন্য বাড়ীতে নিয়ে যান।” ইহা বলিয়া হযরত নিজ হাতে ছুড়ি দিয়া কাঠালটিকে দুই ভাগ করিলেন এবং অর্ধেক রাখিয়া বাকী অর্ধেক তাহাকে ফেরত দিলেন। হযরত মানুষের অন্তরের কথার পর্যন্ত খবর রাখিলেন। কোন প্রকারের নিয়ত বেশ কম কিছু হইলে তাহা গ্রহণ করিতেন না এবং কেহ মনে কষ্ট আনিয়া কিছু তাহাকে দিলে তাহা তিনি ফেরত দিয়া দিতেন তাহার নিকট কিছু হাদিয়া আনিতে হইলে অতি পবিত্র ও খালেছ নিয়তে আনিতে হইত।
**হযরতের প্রভাবে দোয়াতের মাধ্যমে জীবিকা অর্জণঃ
নানুপুর নিবাসী জনাব মৌলভী আবদুল লতিফ সাহেব অনেক বৎসর দরবার শরীফ হযরত সাহেবের পুত্র জনাব মৌলভী শাহ সৈয়দ ফয়েজুল হক সাহেবকে পড়াইতেন। বিদায়কালে তিনি হযরতের খেদমতে আরজ করিলেন, “হুজুর আমি গরীব ও মাজুর মানুষ! এতদিন হুজুরের দরবারে শাহজাদাকে পড়াইয়াছি। বর্তমানে আমি বাড়ী যাইতেছি! আমি কোন কাজকর্ম করিতে পারি না। হুজুর দয়া করিয়া সম্মানের সহিত জীবিকার্জন করিতে পারি মত কোন উপায় আমাকে করিয়া দেন।” হযরত সাহেব তাহার প্রার্থনা কবুল করিলেন। তাহাকে একটি দোয়াত দান করিয়া বলিলেন, “আপনি এই দোয়াতটি নিয়া ঘরে বসিয়া থাকুন। দোয়াতের কালি শুকাইতে দিবেন না আল্লাহতায়ালা আপনার রিজিক ঘরেই মিলাইয়া দিবেন।” মৌলভী সাহেব হযরত প্রদত্ত দোয়াতটি লইয়া বাড়ীতে গেলেন এবং উহা লইয়া হযরতের আদশে মত বসিয়া রহিলেন। এরপর দেখা গেল প্রত্যহ তাহার বাড়ীতে তাবিজের জন্য লোকজন আসিতে লাগিল। তিনি উক্ত দোয়াতের কালি দিয়া তাবিজ লিখিয়া দিতেন। হযরতের কালামে ও প্রদত্ত দোয়াতে এমনই খোদার রহস্য নিহিত ছিল যে, এই দোয়াতের দ্বারা তিনি যাহাই লিখিতেন, অবশ্যই সুফল ফলিত। প্রতিদিন তাহার যথেষ্ট পরিমাণ টাকা পয়সা আয় হইতে লাগিল এই দোয়াতের উছিলায়। তিনি প্রায় ত্রিশ বৎসর কাল অতি সুখে সম্মান ও সুনামের সহিত স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করিয়া পরলোক গমন করেন। তাহার পর এই দোয়াতটি এখনও উত্তরাধিকারীগনের নিকট বিদ্যমান আছে।
** টাকার মাধ্যমে প্রভাব বিসত্মার ও কর্জ হইতে মুক্তি দান ঃ
চট্টগ্রাম হাজীরখিল গ্রামের আবদুল হালিম চৌধুরীর পুত্র আহমদ মিঞা চৌধুরী বলেন, আমার বয়স যখন ৯/১০ বৎসর তখন একদিন আমার পিতার সহিত আমি দরবার শরীফ হযরতের খেদমতে আসি। আমরা আসিতে হযরতের জন্য এক সের গরুর দুধ সঙ্গে আনি। আমিও আমার বাবা হযরতের কদমবুচি করিয়া দুধগুলি তাহার সামনে পেশ করিলাম। তিনি আমাকে দেখিয়া আমার বাবাকে জিজ্ঞেস করিলেন, “এই ছেলেটি কার?” বাবা নিজের ছেলে পরিচয় দিলেন। হযরত সাহেব আমাকে বলিলেন “তোমার পেট খুব বড়। তুমি সাত গ্লাস সরবত পিও।” এই বলিয়া আমাদের আনিত দুধ দ্বারা সরবত তৈয়ার করিয়া এক গ্লাস নিজে পান করিলেন এবং আমাকে সাত গ্লাস সরবত পান করাইলেণ। উপস্থিত আরো দশ বারোজন লোক ছিল। তাহাদের প্রত্যেককে এক গ্লাস করিয়া সরবত পান করাইলেণ। ইহা ও দেখি যে আমাদের আনিত দুধ দ্বারা প্রায় বিশ গ্লাস সরবত তৈয়ার করার পর দুধ যেন পূর্ব পরিমাণ মত জমা রহিয়াছে। তৎপর হযরত নিজ হাতে পচিশটি টাকা দিয়া বলিলেন, “তোমার পেট বড় ভারী তুমি টাকাগুলি খাও।” আমি টাকাগুলি হাতে লইতে চাহিলাম। তিনি আমার হাতে না দিয়ে টাকাগুলি আমার মুখের মধ্যে প্রবেশ করাইয়া দিলেন এবং বলিলেন, চলিয়া যাও। তুমি আমার গোলাম।” বিদায়ের পর আমার মনে নানা প্রকার প্রশ্ন জাগিতে লাগিল তাহার কার্য্যকলাপ কিছুই বুঝিতে পারিলাম না। সবই আমার কাছে বিপরীত মনে হইল। আমার বাবাকে জিজ্ঞাসা করিলাম কি নিয়তে এখানে আসিয়াছেন। আমাকে কেন এইরূপ বলিলেন বাবা উত্তরে বলিলেন যে, বর্তমানে তিনি অনেক টাকার কর্জদার আছেন। আমরা বাড়ীতে গেলাম। অপ্রত্যাশিতভাবে আমার বাবার রোজগার হইতে লাগিল। এমন কি এক বৎসরের মধ্যে আমার বাবা সমস্ত কর্জ পরিশোধ করিয়া স্বচ্ছল হইয়া গেলেন। তখন আমার বুঝে আসিল, হযরত কেন আমাকে টাকা মুখে প্রবেশ করাইয়া দিয়াছিলেন। ইহাতে তিনি হযতঃ ইঙ্গিত দিয়াছিলেন যে, বিনা চেষ্টা আমাদের উপার্জন হইবে। বাসত্মবিকই আমার বাবাকে লোকে ডাকিয়া নানা উছিলায় টাকা দিতেন। ইহা একমাত্র হযরতের দোয়া ও আধ্যাত্মিক শক্তিতেই হইয়াছিল।
**উকিল বাবুর প্রেরিত কলা রাখিয়া দুগ্ধ ফেরৎঃ
ফটিকছড়ি থানা, নাম অতি সুন্দর, মাইজভান্ডার গ্রাম এক, তাহার ভিতর। শুভক্ষণে শুভযুগে দয়া করি আল্লাহ, সেই দেশে জম্মাইল শাহ আহমদ উল্লাহ সুপন্ডিত আরবীতে মুখস্ত কোরান, ফকির মাওলানা বরে বিস্তর সম্মান। বাল্যাবধি স্ব ধর্মেতে ছিলেন নিষ্টাবান, করিতেন জগতের সতত কল্যাণ। নিরপেক্ষ লোক তিনি প্রসিদ্ধ ফকির, মনুষ্য কুলেতে হন সকলের পীর। মানবের উপকার করিবার তরে, সতত প্রস্তুত ছিলেন প্রফুল্ল অন্তরে। নানা জিলা হতে লোক আসিয়া তথায়, ইচ্ছামত কার্য্যলয়ে তাহার কৃপায়। দেশ দেশান্তরে আছে তাহার বড় নামে, সর্বলোকে গোয় যশঃ কীর্তি অনিবার।। লোকের মনের কথা জানিতেন তিনি, নানা প্রকার গুণ ছিল অতি বড় জ্ঞানী।। ভোগ লিপসা নাহি ছিল তাহার অন্তরে, খেতে দিতেন অতিথিদের নানা উপচারে।। শিষ্য সাগরিদ আছে তার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে কার্য্যসিদ্ধ হয় সবার তার নাম নিলে।। ফটিকছড়ির নববাবুর উকিল সরকার, জ্ঞাতি জ্যেষ্ঠ ভাই হয় সম্পর্কে আমার।। কার্য্যেপলক্ষে আমি সেই বাসায় ছিনু, ফকিরের গুণ দেখি আচর্য্য হইনু। উকিল বাবুর এক গাভী প্রসবিল, বহুদুগ্ধ গাভী হইতে পাইতে লাগিল।। ভাগ্যক্রমে সেই সময় বাসাতে তাহার, পাকিল কাবুলি কলা অতি চমৎকার।। তাহা দেখি বাবু ভক্তি সহিতে, দুদ্ধ কলা দিতে চাইলেন ফকীর বাড়ীতে।। কহিল মনের কথা কেরানীর ঠাই, অদ্যকার দুগ্ধ সব তথা দিতে চাই। কেরানী শুনিয়া তাহার মনে মনে ভাবে, তিন সের দুগ্ধ ফকির নাহি খাইবে। জনৈক বাহক দিয়া কলা দুই কান্দি, এক সের দুগ্ধ দিল ভান্ড মুখ বান্দি।। ফকীরের কাছে গিয়া বাহক কহিল, উকিল সরকার বাবু দ্রব্য পাঠাইল।। “এত দুধ নাহি খায়”, ফকির কহিয়া, কলা রাখি দুগ্ধ সব দিলেন ফিরাইয়া বলিলেণ ফকির এত দুগ্ধ নাহি খায় বুঝিতে না পারি তার কিবা অভিপ্রায়। তদন্ত করিয়া জানি কেরানীর কথা, পরদিন পাঠাইল সবদুধ তথা ফকীর, সম্ষ্টি হইয়অ রাখে সেই দুগ্ধ, চক্ষে তাহার গুন দেখি হইলাম মুগ্ধ।। রচনায়।

**মোক্তার অনুকুল চন্দ্র বিশ্বাস-চট্টগ্রাম কোর্ট হয়রতের নির্দেশে বিস্ময়কর উন্নতিঃ

একদা রাউজান থানার গচ্ছিকুল নিবাসী হযরতের এক ভক্ত ওয়ালী মসত্মান সাহেব, অত্যনত্ম অভাব অনটনে ছিলেন। তাহার বহু টাকা র্জ হইয়া গিয়াছিল। তিনি একদিন নিরূপায় হইয়া হযরতের কেধমতে আসিয়া আরজ করিলেন, “হুজুর আমি একজন হুজুরের গোাম। খুব অভাব অনটনে আছি। অনেক টাকা কর্জ হইয়াছে। আমার এমন জায়গা জমি নাই, যাহাতে কর্জ শোধ করিয়া দৈনন্দিন খরচ নির্বাহ করিয়া জীবন যাপন করিতে পারি। আমাকে এই অনটনের আজাব হইতে রক্ষা করার আদেশ হয়। না হইলে আমার ইজ্জত রক্ষা হইতেছে না। হযরত উত্তর করিলেন, “হিজরত কর।” ওয়ারী মাসত্মান, হযরতের আদেশ মত গচ্ছিকুল ত্যাগ করিয়া রাঙ্গামাটি হিজরত করিনে। ততায় তাহার নানা প্রকার উপার্জন হইতে লাগিল। লেঅকজন তাহাকে খুব ভক্তি করিত। ইহাতে ক্রমে তাহার াবস’ার সম্পূর্ণ পরিবর্তণ হইয়অ গেল। তাহার বিসত্মর জায়গা জমিও টাকা পয়সা জমিয়া গেল। বর্তমানে মসত্মান সাহেবের ছেলে-হাজী ইমামুদ্দিন সাহেব সেখানকার বাসিন্দা হিসেবে বিদ্যমান াঅছেন। তিনি একজন ধনীলোক বরিয়া লোক সমাজে পরিচিত। সেখানে তাহার পিতা ওয়ালী মাসত্মানের মাজার আছে। তাহার মাজারের উপর পাকা দালান নির্মাণ করা হইয়াছে। এইরূপ হযরত তাহাকে হিজরত করাইয়অ তাহার শুভদৃষ্টি দ্বারা ধনী ও সুপরিচিত করাইলেন।

**সুদখোরের পয়সা নিক্ষেপানেত্ম দেহে প্রভাব বিসত্মার রহস্যময় কেরামত প্রদর্শনঃ

নোয়াখালী জেলার রৌসন আলী নামক এক সুদখোর একদিন হযরতের কেধমতে াঅসিল। সে হযরতের সামনে আট আনা পয়সা দিল। তাহার প্রতি হযরতের দৃষ্টি পড়িতেই হযরত জাঅর হইয়া উঠিলেন এবং পয়সা বাহিরে নিক্ষেপ করিয়া দিলেন। সে পয়সাগুলি আবার আনিয়া হযরতের সামনে দিল। হযরত পয়সাগুলি পুনরায় বাহিরে ফেলিয়অ দিলেন। সে আবার যাইয়অ পয়াসগুলি কুড়াইয়া পুনরায় বাহিরে ফেরিয়অ দিলেণ। সে আবার যাইয়অ পয়সাগুলি কুড়াইয়া আনিয়া বলিতৈ লাগিল, হুজুর আট আনা পয়সা আপনার কাছে কিছুই নহে বটে কিন’ আমার কাছে মূল্যবান। আপনি ছাড়া আমার গোনাহ্‌ মাফ করাইতে পারে-এমন আর কেহ নাই মনে করিয়অই আপনার খেদমতে আসিয়াছি।” ইহা বরিযঅ আবার পযসাগুলি হযরতের সামনে রাখিল। হযরত এবারও পয়সাগুলি সজোরে বাহিরে নিক্ষেপ করিলেন। সে আবার উহা কুড়াইয়া আনিল এবং বলিতে লাগিল” আমার গোনাহ মাপ না হওয়া পর্যনত্ম আমি যাইব না। আমার গোনাহ্‌ মাফ করাইতেই হইবে। তৎপর হযরত যেন তাহার প্রতি সহৃদয় দৃষ্টিপাত করিলেন। তাহার হাতে একখানা বাতাসা দিলেন এবং বলিলেন, “মসজিদের পুকুরে গোসল করিয়া ইহা খাইয়া ফেল।” সে হযরতের আদেশে মসজিদের পুকুরে গোসল করিয়া উহা খাইতেই তাহার অবস’া পরিবর্তন হইয়া গেল। সে পাগলামী করিতে করিতে লোকজনকে মারিতে লাগিল হযরতের কাছে নালিশ করিলে হযরত তাহাকে বাধিয়া রাখার আদেশ দেন। বাধা অবস’ায় ঘরে সে পায়খানা প্রস্রাব করাতে তাহাকে চাড়িয়া দেওয়া হয়। পুনরায় সে অশানিত্ম সৃষ্টি করায় কুলাল পাড়ার লোকেরা তাহাকে পুকুরে ফেলিয়া এমন ভীষন ভাবে প্রহার করে যে তাহার শরীর ক্ষতবিক্ষত হইয়া যায়। পুনরায় তাহাকে হযরতের সামনে আনা হয়। হযরত তহার হাতে একখানা মিঠাই দিয়া খাইতে আদেশ দেন। সে মিঠাই খানা খাইতেই তাহার পাগলামী ভাবের পরিবর্তন হইয়অ শানত্মভাব ফিরিয়া আসে এবং সুস’ হইয়া উঠে। ইহার পর হইতেই সে হারাম ব্যবসা ছাড়িয়া দীনদার মুওকী ও খোদায়ী প্রেম প্রেরণায় দিন কাটায়। এমন করিয়া তাহার আধ্যাত্মিক প্রভাবে সুদখোরকে সংশোধন করিয়া দীনদার আশেক করিয়া লইলেন ও হারাম কার্য্য ত্যাগ করাইলেন।

**হযরতের আলৌকিক প্রভাবে বৃষ্টি বারি বরিষণঃ

এক বৎসর চাষের মৌসুমে ভাদ্রমাসে বৃষ্টিপাত একেবারে বন্ধ হইয়অ যায়। সমসত্ম দেশ খাল-বিল শুকাইয়া গ্রীষ্মকালের রূপ ধারণ করে। পানির অভাবে চাষ বন্ধ থাকে। রৌদ্রের প্রখরতার ধান্য চারাসমূহ মরিয়া যাইতে আরম্ভ হয়। কৃষকদের মদ্যে হাহাকার পড়িয়া যায়। চারিদেক দাওয়াত, খতমে কোরআন ও নানা প্রকার আল্লাহর দরবারে বৃষ্টির জন্র দোয়া প্রার্থণা শুরু হয়; কিন’ কিছুতেই বৃষ্টিপাত হইল না! সেই সময় শহর কুতুব নজির শাহ মিঞা, যিনি হযরতের একজন অন্যতম ভক্ত ছিলেন, তিনি দরবার শরীফ আসিয়া হযরতের দরবারে বৃষ্টির জন্য ফরিয়াদী হন। তিনিই দু্‌ই দিন না খাইয়া দায়েরা শরীফে পড়িয়া থাকেন। ইহার পর শেষ রাত্রে উঠিয়অ তিনি বকাবকি আরম্ভ করেন। “লেঅকে ধান চাউল না পাইলে খোদার জন্য কোথা হইতে দিবে? খোদা কি দেখিতেছে না এই সমসত্ম বলিতে বলিতে তিনি এ’দিন ওদিক পায়চারী করিতে লঅগিলেন। প্রভাত হইল। হযরত সাহেব কেবলা; খাদেম মৌলভী আহমদ ছফা সাহেবকে বলিলেন, “মিঞা! আমি নাজিরহাট যাইব্‌। আমার কাপড় আন।” মৌলভী সাহেব তাহার জামা কাপড় আনিয়অ দিলেন। হযরত একখানা ঢিলা তহবন্দ, একটি কোর্ত্তা ও হলদে রঙ্গের একখানা আবা গায়ে পড়িয়অ বাড়দিক্ষিণ দিক বাহির হইলেন। সঙ্গে সঙ্গে খাদেমগণ ও অন্যাণ্য হাজতী, মুকছদি অনেক লোক তাহার পিছনে পিছনে যাইতে লাগিল। বাড়ীর দক্ষিণ পশ্চিমে অবসিত্মথ মরা খালটি পার হইয়া বিলে উঠতেই একজন রোক আসিয়া হযরতকে সালাম জানাইলেন। হযরত তাহাকে বলিলেন, “মিঞা, তোমার বাড়ী কোথায়?” লোকটি উত্তর করিল, “হুজুর খন্দকিয়া” ইহাতে হযরত জালাল হইয়া লোকটিকে তিরস্কার করিয়অ বলিতৈ লাগিলেণ, “মিঞা খন্দকে বেঙই থাকে। তুমি খন্দকে থাক কেমনে?” লোকটি কাতরভাবে বলিলেন হুজুর আমার গ্রামের নাম খন্দকিয়া” হযরত ভীষন জালাল হইয়অ তাহার হসত্মসি’ত লাঠি দিয়া লোকটিকে দুই তিনটি আঘাত করিলেন। পরে দক্ষিণ দিকে হাটিতে লাগিলেন। রহম আলী নামক খাদেম হযরতের হাতি ধরিয়া পিছনে যাইতেছিলেন। কিছুদূর যাইয়া হযরতকে বলিলেন, হুজুর, নাজিরহাট যাইতে হইলে পশ্চিম দিকে যাইতে হইবে। হযরত তিরস্কার করিয়া তাহাকে আড়াইলে তিনি দূরে সরিয়া গেলেন। তখন রৌদ্রের প্রখর তেজ। হযরতের গায়ে সুর্য়ের কিরণ পড়িতেছে। হযরত সূর্যের প্রতি তাকাইয়অ তিরস্কার করিতে করিতে পথ চলিতেছেন। সামনে বাশের সেতু দেখিয়া আরো অধিক জালাল ও রাগান্বিত হইয়অ উঠিলেন। এমন সময় রাউজান নিবাসী ডাক্তার আবদুল হামিদ সাহেব একজাম সরবত লইয়া, হযরতের সামনে পেশ করিলেন। হযরত সরবতগুলি এক চামিচ করিয়া সকলকে বাটিয়া দিতে নির্দেশ করিলেন। সেই সময় হযরতের চতুর্পাশ্বে ৫০/৬০ জন লোক জমায়েত হইয়া গিয়েছে। সকলকৈ এক চামিচ করিয়া সরবত দেওয়া হইল। হযরত জিজ্ঞাসা করিলেন, “আর কি পরিমাণ আছে?” তিনি বলিলেন, “হুজুর আরো অনেক আছে।” আদেশ দিলেন, “তুমি এক চামিচ খাও, আমাকে এক চামিচ দাও।” তাহা করা হইলে আবার বলিলেন, “তুমি আরো এক চামিচ খাও।” তৎপর মাটির প্রতি লক্ষ্য করিয়া বলিলেন “এক চামিচ এই হারামজাদীর “গুপ্ত স’ানের ফাটলের মধ্যে দাও।” তিনি আরো এক চামিচ খাইলেরন এবং এক চামিচ মাটিতে ঢালিয়া দিলেন। তৎপর আবার জিজ্ঞাসা করিলেন “আর কি আছে?” উত্তর করিলেন হুজুর এখনও আরো কিছু আছে।” বলিলেন, “হারাম জাদীকে আরো তিন চামচ দাও। “মাটিতে আরো তিন চামচ ঢালিয়া দেওয়অ হইল। হযরত আবার বলিলেন, আর কি আছে? আরো কিছু আছে বলাতে হযরত জালালী হালতে উচ্চঃস্বরে গর্জিয়া বলিলেন, “সব তাহার ফোরজের” মধ্যে ঢালিয়অ দাও। সব মাটিতে ঢালিয়া দেওয়া হইল। অতঃপর হযরত দ্রুত বাড়ী রওয়ানা হইলে, অন্যাণ্যরাও তাহাদের নিজ নিজ পথে চলিয়া যায়। খোদার কি অসীম করুনা। হঠাৎ দক্ষিণ দিক হইতে একখানা মেঘ আসিয়া সমসত্ম আকাশ ছাইয়া ফেলিল। দেখিতে দেখিতে বৃষ্টিাত আরম্ভ হইয়া গেল। সকলে দৌড়াদৌড়ি করিয়া বৃষ্টি জলে ভিজিতে ভিজিতে বাড়ী পৌছিল। প্রথমে কিছু বৃষ্টি হইয়অ একটুখানি থামিল। তারপর আবার বৃষ্টি আরম্ব হইয়া অনেকক্ষন রহিল। পুনঃ কিছুক্ষন থামিয়া এমনভাবে বৃষ্টি পড়িতে আরম্ভ হইল যে, লোকজন পর্যনত্ম বাহির হওয়া অসম্ভব হইয়া উঠিল। একদিনের বৃষ্টিতে সমসত্ম নদী নালা খাল বিল ভরিয়া মাঠঘাট জলে ডুবিয়া রহিল। আবদুল হামিদ সাহেব বলেন, পরদিন হুজুর আমাকে বাড়ী যাইতে আদেশ দিলেন। আমি অতি কষ্টে বৃষ্টির জল ভাঙ্গিয়া বাড়ী পৌছিলাম।

**হযরত কেবলার বেলায়তী প্রভাব ষ্টিমার রক্ষা ও মহমারী নিবারণঃ

জনৈক মৌলভী সাহেব বলেন, “আমি বহুপ্রকার ব্যবসা বাণিজ্রেল চেষ্টা করিয়া ক্ষতিগ্রসত্ম হইয়াছি। কোন ব্যবসাতেই সফলখাম হইতে না পারিয়া দেওয়ার জন্য একদিন কিছু বাতাসা হাদিয়া লইয়া হযরতের কেধমতে রওয়ানা হইলাম। দরবার শরীফ ৗেছিতেই দেখিতে পাইলাম হযরত সাহেব মসজিদের দক্ষিনের রাসত্মা দিয়া যাইতেছেণ। আমিও পিছনে পিছনে চলিলাম। তিনি মাঠের মধ্যে যাইয়াই একটি মাটির ঢেলা লইয়া জমিনের ফাটলে রাখিয়া নিজ পাদুকা দিয়া উহাকে ভিতরে প্রবেশ করাইয়া জমিনের ফাটল বন্ধ করিতে চেষ্টা করিতেছেন। আমি একটি মাটির ঢেলা লইয়অ বলিলাম হুজুর! আমি বন্ধ করিয়া দিব কি? তখন হযরত অঅমার প্রতি মুখ ফিরাইয়অ বলিলেন, মিঞা, দেখিতেছনা, দুইটি বলিষ্ট ভইস ঠেলাঠেলি করিয়অ উপর দিকে উঠিতেছে। আমি তাহা বন্ধ করিয়া দিলাম।” তৎপর হযরত যাইয়া বিনাজুরী খালের ধারে বসিলেন! চারিদিক হইতে হাদিয়া লইয়া আগন’কগণ তথায় আনিত দ্রব্যাদি সামনে পেশকরিতে লাগিল। আমিও আমার বাতাসাগুলি হযরতের সামনে দিলাম। হযরত পাচখানা বাতাসা আমাকে দিয়অ বলিলেন, মিঞা! চলিয়া যাও। বাড়ীতে সকলকে খাইতে দিও এবং নিজেও খাইও। সহসা চলিয়অ যাও। আসিয়া দেখিলাম আমাদের পাড়ায় কলেরা আরম্ভ হইয়াছে। দুইজন লোক মারা গিয়াছে। আরো চারি পাঁচজন লোক আক্রানত্ম অবস’ায় আছে। আমি তাড়াতাড়ি তবারোকগুলি বাড়ীস’ সকলকেবণ্টন করিয়অ দিলাম। সামান্য নিজেও খাইলাম। কলেরায় পাড়ার অনেক লোক মারা গেল। প্রায় সকলেই আক্রানত্ম হইল। খোদার কৃপায় আমাদের বাড়ীতে যাহারা এই তবারোক খাইয়াছিল, তাহার সকলেই নিরাপদে রহিল। কিছুদিন পরে আমি পুনরায় মাইজভান্ডার শরীফে যাই। সেই দিন আরো একজন ব্যভসায়ী লোক, হযরতের দরবারে সওগাত হাদিয়া লইয়া উপসি’ত হন। তিনি দরবারের লোকের নিকট প্রকাশ করেন যে, কিছুদিন পূর্বৈ তিনি ছোট একখানা ষ্টিমারে করিয়া কিছু সওদা লইয়া আরকান হইতে আসিতেছিলেন। পথে সমুদ্রে তাহার ষ্টিমারখানা বিপদে পতিত হয় এবং ষ্টিমার ছিদ্র হইয়া যায়। তখন ষ্টিমারে প্রবলবেগে পানি উঠিতে থাকে, তিনি নিরূপায় হইয়অ নিয়ত করিলেন, আল্লাহতা’লা যদি তাহাকে জানে মালে নিরাপদে রক্ষা করেন তিনি বাড়ী যাইয়া মালগুলি বিক্রয় করিয়া মাইজভান্ডারী হযরত সাহেব কেবলার জন্য হাদিয়া লইয়া দরবার শরীফ যাইবেন। ষ্টিমার কর্মচারীগণ তখন ছিদ্র বন্ধ করিতে প্রাণপণ চেষ্টা করিতেছে। ষ্টিমার তখন প্রায় ঘাটের কাছে আসিয়া পৌছিয়াছে। হঠাৎ কোথা হইতে কি যেন হইয়া গেল। ষ্টিমারের পানি উঠা বন্ধ হইল। ষ্টিমার ধীরে ধীরে ঘাটে আসিয়া ভিড়িল। খোদার আপার রহমতে এবং হযরতের দয়ায় তাহার মালপত্র রক্ষা পাইল। তিনি তাই তাহার নিয়ত মতে দরবারে পাকে হাজির হইয়াছেন। লোকটির বর্ণনামতে দেখিলাম-তাহাদের ষ্টিমার দূর্ঘটনার তারিখ এবং আমি যেইদিন হযরতের দরবারে বাতাসা লইয়া আসিয়াছিলাম এবং হযরত সাহেরে মাটির ঢিলা দিয়অ জমির ফাটিল বন্ধ করিয়াচিলেন তাহা একই তারিখ ও একই সময়। হযরতের পবিত্র কালাম “আগুন জ্বলিতেছে সহসা বাড়ী যাও।” তাহার মর্ম আমি বাড়ীতে গিয়াই বুঝিয়াছিলাম কিন’ তাহার ঢেলা দিল ফটল বন্ধের তাৎপর্য উপরোক্ত ঘটনা বর্ণনার পর বুঝিতে পারিলাম। কিছুদিন পর আমি গাছের ব্যবসা আরম্ভ করি। হযরতের দোয়ায় তাহাতে বিশেষভাবে লাভবান হই। বর্তমানে চট্টগ্রাম ষ্ট্রান্ড রোডে আমার যেই হোটেলটি আছে, তাহা হযরত সাহেবেরই দান।




গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী'র খলিফাঃ 



সৈয়দ গোলামুর রহমান আল মাইজভাণ্ডারী (প্রকাশঃ বাবা ভাণ্ডারী)গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী'র ভ্রাতুষ্পুত্র,মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ।

 ২, সৈয়দ দেলওয়ার হোসাইন মাইজভকণ্ডারী (প্রকাশঃ দেলা ময়না) গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী'র নাতি,মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ।

৩, সৈয়দ আমিনুল হক ওয়াসেল মাইজভাণ্ডারী (প্রকাশঃছোট মওলানা)গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী'র  ভ্রাতুষ্পত্র,মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ।

৪, মাওলানা শেখ অছিউর রহমান আল-ফারুখী,   চরণদ্বীপ, বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম।

 ৫, মাওলানা আসাদ আলী, আহলা, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।

, মাওলানা আমিনুল হক হারবাঙ্গিরী, বোয়াখালী, চট্টগ্রাম।

 ৭, মাওলানা খলিলুর রহমান,রাঙ্গোনিয়া, চট্টগ্রাম।

 ৮, মাওলানা আমান উল্লাহ্ আলী, বাঁশখালী,চট্টগ্রাম।

৯, মাওলানা মোহছেন আলী,  বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।

 ১০, মাওলানা মোহসেফ আলী,বাঁশখালী,চট্টগ্রাম।

 ১১, মাওলানা আকম উদ্দীন,মহেশখালী,চট্টগ্রাম।

 ১২, মাওলানা মিয়া হোসাইন,  কানোচি, আরাকান, মায়ানমার।

 ১৩, মাওলানা আবদুল আজিজ,মণ্ডল, আরাকান, মায়ানমার।

 ১৪, মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান,পাচঁলাইশ, সাতকানিয়া,চট্টগ্রাম।

১৫, মাওলানা আহমদ সাফা,কাঞ্চন নগর, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।

১৬, মাওলানা মুজিবুল্লাহ্ সুলতানপুরী,   রাউজান, চট্টগ্রাম।

 ১৭, মৌলভী আবদুর রাজ্জাক (হাকিম শাহ),

        চাঁদবারীয়া, চট্টগ্রাম।

 ১৮, বাহারুল উলুম মাওলানা আবদুল গণি (প্রকাশঃ মকবুল কাঞ্চনপুরী),কাঞ্চনপুর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১৯, মাওলানা আবদুল সালাম ভূজপুরী,,কাঞ্চনপুর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

২০, মাওলানা মুফতী আমিনুল হক ফরহাদাবাদী,হাদাবাদ, হাটহাজারী,চট্টগ্রাম।

 ২১, মাওলানা মোহাদ্দেস হাফেজ ক্বারী তফাজ্জল হোসাইন মির্জাপুরী।

২২, মাওলানা আবদুল আজিজ কাঞ্চনপুরী,নোয়াখালী, চট্টগ্রাম।

২৩, মাওলানা আশরাফ আলী,দোগাইয়াহ, চাঁদপুর, কুমিল্লা।

২৪, মাওলানা আলী আজম মণ্ডল,  খণ্ডল, নোয়াখালী।

২৫, মাওলানা ইয়াকুব গাজী,   হরিণকাটা, শ্রীপুর,নোয়াখালী।

২৬, মাওলানা আহমদ উল্লাহ,   মিয়াজভাঙ্গা,সন্দ্বীপ।

২৭, মাওলানা কেরামত আলী নেজামপুরী, মিরশ্বরাই, চট্টগ্রাম।

২৮, মাওলানা সিরাজুল হক,কাওখালী।

২৯, মাওলানা সালেকুর রহমান (দুলহায়ে হযরত), রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।

৩০, মাওলানা এনায়েত উল্লাহ,পাঠানতলী,চট্টগ্রাম।

৩১, মাওলানা ইয়াকুব নূরী, আলীপুর,নোয়াখালী।

৩২, মৌলভী ওজীর আলী,নোয়াখালী।

৩৩, মাওলানা হাসমত আলী,ছিপাইতলি,গোমান মরডান,হাটহাজারী,চট্টগ্রাম।

৩৪, মাওলানা ইউছুপ আলী,

        হাওলা, বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম।

৩৫, মাওলানা আবদুর রশিদ,

        সাতবারিয়া,চট্টগ্রাম।

৩৬, মাওলানা কাজী আবদুল বারী,

       সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।

 ৩৭, মাওলান আবদুল গফুর শাহ,

      সারওয়াতলী,বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম।

৩৮, কাজী মাওলানা মনোয়ার আলী,

       বরওথাত,পটিয়া, চট্টগ্রাম।

৩৯, মাওলানা আবদুল হাদী কাঞ্চনপুরী,

     ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

৪০, গাউছুল আজম আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী'র একমাত্র পুত্র মাওলানা ফয়েজুল হক মাইজভাণ্ডারী।

৪১, মাওলানা জাফর আলী শাহ শাহবাজ হিজরতকারী,

       করাচী,পাকিস্তান।

৪২, মাওলানা আবদুর রহিম,

        বাবুনগর,ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

৪৩, মাওলানা রিজুয়ান উদ্দীন শাহনগরী,

       ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

 ৪৪, মাওলানা মুহাব্বত আলী,

      বিবিরহাট, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

৪৫, মিয়া আবদুল জলিল(বালু ফকির),

       ছাদেকনগর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

৪৬, হাছী ফকির কুতুব কলন্দর,

       চারিয়া,হাটহাজারী,চট্টগ্রাম।

৪৭, ইউছুপ আলী ফকির ছায়া,

       চট্টগ্রাম।

 ৪৮, মাওলানা নজির আহমদ (নজির শাহ শাহার কুতুব),

       স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম।

 ৪৯, মামু ফকির (মজ্জুব মাকতোল),

       রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।

৫০, ওবায়দুল হক মিয়া (মাস্ত কালাণ্ডার),

       চাঁদগাও,চট্টগ্রাম।

৫১, আজগর শাহ (মজ্জুব কালাণ্ডার),

       চকবাজার, চট্টগ্রাম।

৫২, খলিল শাহ (ছায়া কালাণ্ডার),

      খনদকিয়া,হাটহাজারী।

৫৩, জাফর আহমদ (মামু ফকির),

       ইয়াঙ্গুন, ছুলিয়াগলি, মায়ানমার।

৫৪, বাঙ্গালী বাবা,

       করাচী, পাকিস্তান।

৫৫, বেলায়ত আলী শাহ আবদাল কুতুব,

      চৈতন্যগলি, চট্টগ্রাম।

৫৬, মাওলানা আমিরুজ্জামান মজ্জুবে সালেক আউলিয়া,

       পটিয়া।

৫৭, মৌলভী আবদুর রহমান মিয়া কালাণ্ডার শাহ,

       মোন সিকদার বাড়ি,ফরহাদাবাদ, চট্টগ্রাম।

৫৮, আবদুল ওয়াহেদ শাহ,

      মালিবাগ, ঢাকা।

৫৯, মৌলভী আবদুল আজিজ কুতুব কালাণ্ডার,

        ফেনী।

৬০, পাগলা মৌলভী (ফেনী মিয়া),

৬১, পাগলা মিয়া,

      রাউজান,চট্টগ্রাম।

৬২, আমীর মোজাফফর আহমদ শাহার কুতুব,

     কক্সবাজার,চট্টগ্রাম।

৬৩, মোজ্জব আলী উল্লাহ্,

         (জনাব জাকের হোসাইন, এক্স-গভর্নর,পূর্ব-পাকিস্তান-এর পিতা।)

৬৪, মৌলভী মুনীর উল্লাহ,

      নাসিরাবাদ,চট্টগ্রাম।

৬৫, মৌলভী নুরোস-সফা,

      কাজী-পাড়া,কাঞ্চননগর,পটিয়া।

৬৬, মাওলানা লুতফর রহমান,

     পটিয়া।

৬৭, জাহেদ মিয়া,

      পটিয়া।

৬৮, মৌলভী আবদুর রহমান,

      সারতা, রাউজান,চট্টগ্রাম।

৬৯, মাওলানা  করিম বক্স (বজলুল করিম মন্দাকিনী।)

৭০, মাওলানা রাহাত উল্লাহ্,

     রাঙ্গুনিয়া,চট্টগ্রাম।

৭১, মাওলানা ফরিদুজ্জামান,

      সাতকানিয়া,চট্টগ্রাম।

 ৭২, মাওলানা আবদুল হামিদ,

      বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।

 ৭৩, মাওলানা রহিমুল্লাহ্,

       রাউজান, চট্টগ্রাম।

৭৪, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস হাওলাপুরী,

      বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।

৭৫, মাওলানা সুলতানুদ্দীন বাচা ফকির,

        রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।

 ৭৬, আহমদ বশির (বাচা শাহ ফতেপুরী)।

৭৭, ওয়ালী মাস্তান (ওয়ালী শাহ),

       রাউজান,চট্টগ্রাম।

 ৭৮, আব্দুল গফুর (কম্বলী শাহ),

     মহানপুর,ফরিদপুর।

৭৯, মতিউর রহমান শাহ,

      ফরহাদাবাদ।

৮০, হাজী মাওলানা আবদুর রশিদ,

      সাতকানিয়া,চট্টগ্রাম।

৮১, সুফি নূরুজ্জামান,

      বৈজ্জারখীল,রাউজান,চট্টগ্রাম।

৮২, মাওলানা মীর আহমদ,

      বরমা, পটিয়া।

৮৩, মৌলভী ফররুখ আহমদ (উপ-প্রধান নিয়ন্ত্রক),

     নানুপুর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

৮৪, মৌলভী ইখলাসুর রহমান,

      বাহাদ্দার-বারী, চট্টগ্রাম।

৮৫, মৌলভী রেজাত উল্লাহ্ (উপ-প্রধান নিয়ন্ত্রক),

       কুমিল্লা।

৮৬, আবদুল আজিজ মিয়া (কুমিল্লার রাজা হোসাইনুল হায়দার-এর প্রধান কর্মচারী),

      কাজী বাড়ি,  কুমিল্লা।

৮৭, আলী মিয়া (ঘাওয়ার-এর রাজা),

      কুমিল্লা।

৮৮, আলী বাহাদূর (বাগিচা বাড়ির রাজা),

       কুমিল্লা।৮৯, ডক্টর আবুল ফজল (কালা মিয়া),

     নানুপুর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

৯০, খুইল্লা মিয়া ফকির,

      নানুপুর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

৯১, ওমেদ আলী ফকির,

      নানুপুর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

৯২, সুফি মমতাজ আলী,

      আজিমনগর।

৯৩, আবদুর রহমান সুফি,

      আজিমনগর।

৯৪, মৌলভী ডক্টর শামসুজ্জামান,

      বকশী বাড়ি, চট্টগ্রাম।

৯৫, মৌলভী মতিউর রহমান,

       মহেশখালী, বাতাকান্দী, কুমিল্লা।

৯৬, হাফেজ আবদুর রহমান,

        ক্বাদির সরদার বাড়ি, ভ্রাহ্মণ শাকুয়া,বেগরা বাজার,কুমিল্লা।

৯৭,  মৌলভী আবদুল্লাহ্ শাহ,

       ওখিয়া,হারবাঙ্গ,চকরিয়া,কক্সবাজার।

 ৯৮, নূর আহমদ খান,

       খন্দকিয়া, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

৯৯, মূন্সি ইসহাক,

     ফরহাদ-নগর, নোয়াখালী।

 ১০০, মৌলভী আবদুল গণী মোখতার,

          বাইন্নার টিলা, চট্টগ্রাম।

১০১, কালা মিয়া চৌধুরী।

১০২, আবদুল করিম,

        মগদাইর, রাউজান, চট্টগ্রাম।

১০৩, মাওলানা রমজান আলী,

        কাদুরখীল, বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম।

১০৪, মাওলানা আনোয়ার আলী,

        কাদুরখীল, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।

১০৫, আজিজুর রহমান,

         বিজ্জারখীল, বৈজ্জাখালী, চট্টগ্রাম।

১০৬, মৌলভী হামিদ উল্লাহ্,

        বারয়ঘোনা,রাউজান, চট্টগ্রাম।

১০৭, ওবাইদুল্লাহ্ চৌধুরী,

         মিরশ্বরাই,চট্টগ্রাম।

১০৮, দেলওয়ার আলী চৌধুরী,

        মিরশ্বরাই, চট্টগ্রাম।

১০৯, আলতাফ আলী মিয়া,

        কাউখালী, ফেনী।

১১০, মাওলানা সুফি চাঁদ মিয়া মন্দাকিনী,

        হাটহাজারি, চট্টগ্রাম।

১১১, মাস্টার ফজলুর রহমান মন্দাকিনী,

        হাটহাজারি, চট্টগ্রাম।

 ১১২, আনোয়ার মিয়া,

         দৌলতপুর।

 ১১৩, হযরত চুন্নো মিয়া চৌধুরী।

১১৪, তুতুন মিয়া ফকির,

        দৌলতপুর।

১১৫, ফজলুর রহমান চৌধুরী,

        দৌলতপুর।

১১৬, মালেকুজ্জামা মিয়া,

        দৌলতপুর।

১১৭, মাওলান আমজাদ আলী,

      দৌলতপুর।

 ১১৮, লেখক আবদুল ওয়ারেজ শাহ,

         ভুজপুর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১১৯, ডক্টর খায়ের উদ্দীন,

            নানুপুর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

১২০, মৌলানা আবদুল লতিফ,

        নানুপুর,ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

১২১, মৌলানা আবদুল গণী,

          মিয়াজি পাড়া,মাইজভাণ্ডার।

১২২, মুন্সী নাছের আহমদ,

          নানুপুর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১২৩, খায়েজ আহমদ মিয়াজি,

         মাইজভাণ্ডার।

১২৪, হায়দার আলী গোমস্তা,

          নানুপুর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১২৫, মোহাম্মদ ওয়াছিন,

          কুলালপাড়া।

১২৬, মৌলানা নজির আলী শাহ,

         বারধুনা, সাতকানিয়া।

১২৭, আবদুল জব্বার চৌধুরী,

         রাঙ্গুনিয়া,চট্টগ্রাম।

১২৮, আবদুল হক ফকির,

         আজিমনগর,ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

 ১২৯, তুতুন ফকির,

       আজিমনগর,ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১৩০, মৌলভী জিয়াউল হোসাইন,

         মাইজভাণ্ডার।

১৩১, গুরু দাশ ফকির,

         সুয়াবিল,ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১৩২, ধনঞ্জয়,

১৩৩, নূর আলী মিয়া,

        ফরহাদাবাদ,চট্টগ্রাম।

১৩৪, ফয়েজ আহমদ চৌধুরী,

       ধলয়, হাটিহাজারি,চট্টগ্রাম।

১৩৫, সাধু মন-মোহন দত্ত (মলয়),

       সাজমার, কুমিল্লা।

১৩৬, মাওলানা আফাজ উদ্দীন আলী,

       কালুরুমার ছরা, মহেশখালী,কক্সবাজার।

১৩৭, মৌলানা আজিজ সাহেদ,

      সোনাপুর, বোয়ালখালী।

১৩৮, মাওলানা আবদুর রহমান,

       কাঞ্চনপুর, চট্টগ্রাম।

১৩৯, আব্দুল মজিদ,

         আজিমনগর,ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

১৪০, মাওলানা আমিন-উল হক পানি শাহ,

        ধলই,হাটহাজারি,চট্টগ্রাম।

 ১৪১, মৌলানা গোলামুর রহমান,

         বরিশাল।

১৪২, মতিউর রহমান শাহ,

         পূর্ব-ফরহাদাবাদ, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১৪৩, মৌলানা আবদুল আজিজ, 

       ফেনী।

 ১৪৪, মুহাম্মদ আবদুর রহমান (ফকির শাহ আবদুল্লা দরবেশ),

       বাঞ্চারামপুর(বড় বাড়ি),ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

১৪৫, আফজাল শাহ পাটোয়ারি,

       বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী।

১৪৬, মাওলানা রজব আলী সাকরাপুরী,

       সাকরাপুরী, কুমিল্লা।

১৪৭, মোহাম্মদ হোসাইন,

        ঢাকা।

১৪৮, মোহাম্মদ আইয়ুব আলী,

       হাটহাজারী,চট্টগ্রাম।

১৪৯, মৌলভী আবদুল আজিজ,

      বাঁশখালী,চট্টগ্রাম।

১৫০, মাওলানা আবদুল হাকিম,

        চৌরতপাড়া।

১৫১, মাওলানা ফজু মিয়া চৌধুরী,

       ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

১৫২, কাজী মোসাহেব উদ্দীন সাহপুরী,

       শাহপুরী, কুমিল্লা।

১৫৩, এইচ মকবুল ফকির,

         পাঁচলাইশ,চট্টগ্রাম।

১৫৪, হাফেজ ফজলুর রহমান,

        হাফেজনগর, চন্দনাইশ,চট্টগ্রাম।

১৫৫, আফাজ উদ্দীন মিয়াজী (ছুল্লা ফকির),

         রাউজান, চট্টগ্রাম।

১৫৬, আমেত আলী,

        রাঙ্গুনিয়া,চট্টগ্রাম।

১৫৭, নবিদুর রহমান শাহ,

         নানুপুর,ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

১৫৮, মকবুল পণ্ডিত,

        কুতুবদিয়া,চট্টগ্রাম।

১৫৯, মাওলানা নূরুদ্দীন,

         কুতুবদিয়া,চট্টগ্রাম।

১৬০, ইয়াকুব সিকদার,

          কুতুবদিয়া,চট্টগ্রাম।

১৬১, দোলা ফকির,

         দোলাহাজরা,কক্সবাজার।

 ১৬২, খাইরুজ্জামা,

        চন্দনাইশ,চট্টগ্রাম।

১৬৩, আস্কর আলী পণ্ডিত,

         চন্দনাইশ,চট্টগ্রাম।

১৬৪, ইয়াছিন মুন্সী,

        কালিশিমুল,ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

১৬৫, এহসান উল্লাহ,

        রশিদের ঘোনা, লোহাগাড়া,চট্টগ্রাম।

১৬৬, মাওলানা আব্দুল গণী,

         ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১৬৭, খালেকুজ্জামা মিয়া, 

     দৌলতপুর।

১৬৮, কবি আবদুল হাকিম,

          বাংলাদেশ।

১৬৯, মাওলানা ওবায়দুর রহমান,

       নানুপুর,ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১৭০, মাওলানা আমিন উদ্দীন মোনসেফ,

       নানুপুর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

১৭১, আসমত আলী,

      কুদালা, রাঙ্গুনিয়া,চট্টগ্রাম।

১৭২, আবদুল কাদের,

          নাসিরাবাদ,চট্টগ্রাম।

১৭৩, মাওলানা ওদায়থ উল্লাহ্,

        জাহাপুর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

 ১৭৪, মাওলানা এজাবত উল্লাহ্,

       বখতপুর,ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

 ১৭৫, মাওলানা আমিন উল্লাহ্ শাহ সুন্দরপুরী,

         সুন্দরপুর,ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

 ১৭৬, মাওলানা আব্দুল হাকিম,

       ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১৭৭, মাওলানা ডক্টর আবদুল মজিদ,

        বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম।

১৭৮, মাওলানা আব্দুল মালেক,

        বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।

১৭৯, হেদায়ত আলী,

         বাংলাদেশ।

১৮০, মাওলানা জমির উদ্দীন,

        লতিফ সিকদার, ত্রিপুরা,ইন্ডিয়া।

১৮১, মাওলানা আমিন উল্লাহ্,

        বখতপুর,ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১৮২, মিয়া ফকির,

        আজিম নগর, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

১৮৩, রাউফ মিয়া সিদ্দিকী,

          আকুবদন্দী পুর,বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম।

১৮৪, মুহাম্মদ রহিম আলী,

        বাংলাদেশ।

১৮৫, অছিউর রহমান (লাল মিয়া),

        হাইথকান্দি, মিরশ্বরাই, চট্টগ্রাম।

১৮৬, জিন্নাত আলী শাহ,

          হারবাং, চকরিয়া,চট্টগ্রাম।

 ১৮৭, আবদুল গণী চৌধুরী,

         দমদমা, ফটিকছড়ি,চট্টগ্রাম।

 ১৮৮, খারু ফকির (চুনু মিয়া ফকির),

       সাদেকনগর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

১৮৯, মাওলানা কালিমুল্লাহ,

        সৌর্থান শত্যা, রাউজান,চট্টগ্রাম।

 ১৯০, শেখ আবদুল ওয়াহাব শাহ,

      গণি তলা দরবার, মিরশ্বরাই, চট্টগ্রাম।

১৯১, মুহাম্মদ আবদুর রউফ চৌধুরী, 

     কৃষ্ণা জাফরাবাদ,  মিরশ্বরাই,চট্টগ্রাম।

১৯২, হোমেদ আলী চৌধুরী,

          মিরশ্বরাই, চট্টগ্রাম।

১৯৩, জোবেদ আলী চৌধুরী,

         মিরশ্বরাই, চট্টগ্রাম।

 ১৯৪, ফজল কবির শাহ,

       সেন্ট্রাল কাদুরখীল, বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম।

১৯৫, আলিম উদ্দীন শাহ,

         কাদুরখীল,চট্টগ্রাম।

১৯৬, এহসান উল্লাহ্,

        কাদুরখীল, বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম।

১৯৭, মাওলানা আমানত উল্লাহ্,

        পাঠানতলি, নজির ভাণ্ডার,চট্টগ্রাম।

১৯৮, মাওলানা মতিউর রহমান সুলতানপুরী,

       সাতগাছিয়া।

১৯৯, মাওলানা জমির উদ্দীন আহমদ (নূর নগরী),

      চিওরা,কুমিল্লা।

২০০, মাওলানা নূরুজ্জামা,

         ছারকিজুর-পুর।

২০১, জমির উদ্দীন,

          তিসনা,কুমিল্লা।

 ২০২, আলী উল্লাহ্, 

       রাজাপুর, কুমিল্লা।

২০৩, নূর বক্স, 

       গাউলিয়া,নোয়াখালী।

 ২০৪, আব্দুল্লাহ্ 

     বাঁশখালী, চট্টগ্রাম। বিঃদ্রঃ এখানে কোন খলিফাকে নাম্বার করণ মানে একের পর অন্য জন বুঝানো হয়নি। শুধু তালিকার ধারাবাহিকতার জন্য নাম্বার করণ করা হয়েছে।)




Comments

Popular posts from this blog

ছেমা ই দালালাত

ইউসুফে ছানি গাউছুল আজম ছৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাজান কেবলা রহঃ জীবনী দর্পণ।

কোরআন সুন্নার আলোকে পীর ও মুরিদ।