ইউসুফে ছানি গাউছুল আজম ছৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাজান কেবলা রহঃ জীবনী দর্পণ।
ইউসুফে ছানি গাউছুল আজম ছৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাজান কেবলা রহঃ জীবনী দর্পণ।
হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ) হচ্ছেন মাইজভান্ডার দরবার শরীফের দ্বিতীয় মহান ওলী। তিনি ১২৭০ সালের ২৭শে আশ্বিন (মোতাবেক ১০ই অক্টোবর ১৮৬৫ইং এবং ১২ই জামাদিউসসানী ১২৭০ হিজরী) সোমবার ভোর বেলা চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত মাইজভান্ডার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ আবদুল করিম শাহ সাহেব এবং মাতার নাম সৈয়দা মুশাররফজান বেগম সাহেবা। তিনি হযরত গাউছুল আজম শাহ সুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডার (রঃ)- এর আপন ভাতষ্পুত্র। তাঁর জন্মের অব্যবহিত পর নবজাত শিশু অবস্থায় তাঁকে দেখে তাঁর আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীগণ আনন্দে পুলকিত হয়ে মন্তব্য করেছিল, “এ শিশু মানব নয়, বরং একজন সম্মানিত ফেরেশতা। আমরা এরূপ সুন্দর ছেলে কখনও দেখিনি। নিশ্চই ইনি কালে একজন উচ্চ মর্যাদার ওলী হবেন” হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ)-এর শিক্ষা জীবন শুরু হয় তাঁর বাড়ীর আঙ্গিনায় সে সময়ে বিদ্যমান একটি ফোরকানীয়া মাদ্রাসায়। ফোরকানীয়া মাদ্রাসাটির শিক্ষক ছিলেন একজন অভিজ্ঞ আলেম ও ধর্ম পরায়ণ লোক। মাদ্রাসা শিক্ষক হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ)-এর পিতাকে একদিন ডেকে বললেন, “আপনার এ শিশু সন্তানকে পাঠ আরম্ভ করে দিন, কালে ইনি একজন আদর্শ পুরুষ হবেন এবং তাঁর প্রেমের স্পর্শে এসে মাটির মানুষ সোনায় পরিণত হবে।দুনিয়াব্যাপী তাঁর নামের ডঙ্কা বাজবে” শিক্ষকের মন্তব্য শুনে বাবা ভান্ডারী (কঃ)-এর পিতা মুগ্ধ হয়ে যান এবং তিনি বাবা ভান্ডারী (কঃ)-কে প্রথম পাঠদান করার জন্য হযরত গাউছুল আজম শাহ সুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (কঃ) সমীপে নিয়ে যান। হযরত আকদাছ (কঃ) বাবা ভান্ডারী (কঃ) কে শিক্ষার্থীর বেশে দেখে মৃদু হাসলেন এবং বললেন “তুমি কালামুল্লাহ পড়বে? আচ্ছা পড় দেখি” অতপর হযরত আকদাছ (কঃ) পবিত্র কোরআন মজিদ থেকে কিছু আয়াত পাঠ করেন এবং মিলাদ শরীফ পড়ে খোদার দরবারে ভান্ডারী (কঃ)-এর জন্য মুনাজাত করেন। হযরত আকদাছ (কঃ)-এর অনুমোদন পেয়ে হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) উক্ত ফোরকানীয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে যান এবং পড়াশুনা শুরু করে দেন। মাদ্রাসায় ভর্তি হলে কি হবে? হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) এর ঝোঁক ছিল সর্বদা হযরত আকদাছ (কঃ)-এর সান্নিধ্য লাভের প্রতি। তিনি প্রায়শঃ হযরত আকদাছ (কঃ)-এর সান্নিধ্যে থাকতে ভালবাসতেন। যদি কখনও তা সম্ভব না হতো তবে একাকী ধ্যানমগ্ন থাকতেন। । তিনি মাঠে গরু চরাতেন। গরু চরানোর মধ্যে তাঁর একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছিল। তিনি গরুকে বলতেন “দেখ! ফসল নষ্ট করিস না” গরু দিব্যি বাধ্যগত দাসের মত তাঁর কথা মান্য করত। গরুর জমির আলের উভয় পার্শ্বের ঘাস খেয়ে উদর পূর্ণ করত, কিন্তু ফসলের ক্ষতি করত না।
ছোটবেলা থেকেই তিনি নামাজ, রোজা ও কোরআন পাঠে নিজেকে সদাসর্বদা নিয়োজিত রাখতেন।
তিনি প্রতিনিয়ত তাহাজজুদ নামাজও আদায় করতেন। লেখাপড়ায় তিনি ছিলেন মাদ্রাসার সেরা ছাত্র। মোহছেনীয়অ মাদ্রাসায় পড়ার সময় তিনি জায়গীর (লজিং) থাকতেন। জায়গীর থাকাকালে শেষ রাতে চট্টগ্রাম “বহদ্দার মসজিদ” এ সাদা কাপড় পরিহিত সুফিগণের জামাতে তাঁকে বহুবার ইমামতি করতে দেখা গেছে বলে প্রতক্ষদর্শীরা বর্ণনা করেছেন।
হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) যখন ২৩ বৎসর বয়সে পদার্পণ করেন তখন থেকে তিনি সংসার জীবনের প্রতি নিরাসক্ত হয়ে পড়েন। সংসারের দিকে তার মনোযোগ আকর্ষন করার জন্য তাঁর পিতামাতা ফটিকছড়ি থানার সুয়াবিল গ্রাম নিবাসী সৈয়দ কমর চাঁদ শাহ (রঃ)-এর বংশধর আলহাজ্ব সৈয়দ আশরাফ আলী আল-হাছনী সাহেবের প্রথমা কন্যা মোছাম্মৎ জেবুন্নেছা বেগমের সাথে তাঁকে এ সময়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করান। কিন্তু বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন। এক অভিনব ব্যাপার ঘটল তাঁর ২৫ বৎসর বয়সে পদার্পণ করার পর। এ সময় তিনি জমাতে উলার ফাইনাল পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা দিতে যাবার পূর্বে হযরত আকদাছ (কঃ)-এর অনুমতি জন্য তিনি দরবার শরীফে এলেন। কিন্তু বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হবার পরও হযরত আকদাছ (কঃ)-এর সাথে কথা বলার তাঁর সুযোগ হল না; অথচ হযরত আকদাছ (কঃ)-এর অনুমতি ছাড়া তিনি পরীক্ষা দিতে কিছুতেই যাবেন না। অগত্যা পরীক্ষার তারিখ ঘনিয়ে আস, তখন সকলের চাপে পড়ে তিনি সৈয়দ মোহাম্মদ হাসেম (তাৎর ভ্রাতা) এবং হযরত আকদাছ (কঃ)-এর পুত্র সৈয়দ ফজলুল হক সাহেবকে সাথে নিয়ে হযরত আকদাছ (কঃ) এর অনুমতির নিতে যান। হযরত আকদাছ (তঃ) তখন দরবার শরীফের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত কাটাখালী নামক খালের তীরে সরিষা ক্ষেতের ধারে তাঁর অনুগত শিষ্যদের উপবিষ্ট ছিলেন। হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) মস্তক নত করে দাঁড়িয়ে আছেন। হযরত আকদাছ (কঃ) অপলক নেত্রে হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-এর দিকে চেয়ে রইলেন এবং জজবা হালে অনেক কিছু বললেন। হযরত আকদাছ (কঃ)-এর জজবা অবস্থায় উচ্চারিত এ সকল কথার মর্মার্থ সাধারণের বোধগম্য হলনা। কিছুক্ষন পর আকদাছ (কঃ) স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেন এবং বললেন “তোমার পরীক্ষা হয়ে গেছে, বাছা। আমি তোমাকে নাজিরহাটস্থ আশরাফ আলী খলিফার দোকানে খেয়ে মসজিদে থাকতে বলি” কিন্তু এতে সৈয়দ মোহাম্মদ হাসেম ছাহেব পরিতৃপ্ত হলেন না। তিনি হযরত আকদাছ (কঃ) কে বললেন, তাঁর (হযরত বাবা ভান্ডারী) যে পরীক্ষা হযরত আকদাছ (কঃ), তাঁকে শহরে যেতে হবে” এতে হযরত আকদাছ বললেন “যাও! তুমি ও ফয়জুল হক মিঞা আমার হুজরার তাকের উপর হতে পীরানে পীরের হরিণী আবাটি (চৌগা) শীঘ্রই নিয়ে আস”। তারা তাঁর আদেশ মত তাই করলেন। হযরত আকদাছ (কঃ) উক্ত হরিনী আবাটি (এক প্রকার জুব্বা) নিজে পরিধান করলেন। কিছুক্ষন পর তিনি উহা খুলে হযরত বাবা ভান্ডারী গায়ে পরিয়ে দিলেন এবং শহরে যাবার অনুমতি দিলেন। বলাবাহুল্য, এটি ঐতিহাসিক ঘটনা। কারণ এর মাধ্যমে তিনি তাঁর ফয়েজ রহমত বাবা ভান্ডারী (কঃ) কে বর্ষণ করলেন এবং মহান ওলীর সনদ প্রদান করলেন। এভাবে যিনি মহান ও অনন্ত পরীক্ষায় পাশ করলেন, তাঁর সীমিত পার্থিব পরীক্ষায় পাশের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেল। তিনি পরীক্ষার হলে জমাতে উলা ফাইনাল পরীক্ষা দিতে গেলেন। কোন মতে দু’দিন পরীক্ষা দিলেন। পরীক্ষার তৃতীয় দিনে আধ্যাত্মিক আগনের দহনে তিনি আর স্থির থাকতে পারলেন না। কাগজ কলম সব ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে জজবা হালে অনেক দুর্বোধ্য কথা বললে এবং গজল গাওয়া শুরু করলেন। শিক্ষক ও হলের সকল পরীক্ষার্থীগণ হতভম্ব হয়ে গেলো। এরূপ একজন নামীদামী ছাত্র পরীক্ষা দেবেনা এ কেমনতর কথা। শিক্ষক ও সহপাঠিগণ তাঁকে অনেক বুঝালেন। কিন্তু কোন কাজ হল না। দুনিয়া তাঁর কাছে তখন অতি তুচ্ছ, অতি নগণ্য। তিনি শুধু তকন অন্তরে তাঁর প্রমাস্পদকেই দেখছেন। প্রেমাস্পকেই উদ্দেশ্য করে তিনি বলতে থাকলেন, “এসেছেন আপনি? এসেছেন? আপনি কষ্ট স্বীকার করে কেন এসেছেন? আমি মাথায় ভর দিয়ে হেঁটে আপনার খেদমতে হাজির হতাম” এরূপ বলতে বলতে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। তাঁর পরীক্ষা পর্ব এখানেই শেষ হয়। তারপর তাঁকে পরীক্ষা হল থেকে জায়গীর বাড়ী এবং জায়গীর বাড়ী থেকে দরবার শরীফে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনার সাথে হযরত আকদাছ (কঃ)-এর আধ্যাত্মিক যোগসূত্র অপূর্ব। হযরত বাবা ভান্ডারী যখন পরীক্ষার তৃতীয় দিনে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে উক্তরূপ ঘটনা করছিলেন, তখন হযরত আকদাছ (কঃ) হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ)-এর জোষ্ঠ্য ভ্রাতা সৈয়দ গোলাম ছোবহান সাহেবকে ডেকে বললেন, “মিঞা, আমি হ্জ্বে যেতে চাই। আমার সারাটা বাগান খুঁজেও একটি গোলাপ ফুল পেলাম না”। হজ্বে যাবার অর্থ পরলোক গনের ইঙ্গিত বুঝতে পেরে হযরত গোলাম ছোবহান সাহেব কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, “হুজুর, আপনার খাদের গোলামুর রহমান সাহেব (রঃ) শহরে আছেন। তাকে আপনার খেদমতে হাজির করব কি? হযরত আকদাছ (কঃ) বললেন, “তাঁকে বাড়িতে আনলে ভাল হয়”।
হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ)-এর রেয়াজত সাধনার কিছু চিত্র
হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ)-এর রেয়াজন সাধনা অতীব কঠোর এ কষ্টের। জমাতে উলার ফাইনাল পরীক্ষা না দিয়ে দরবার শরীফে ফিরে আসার পর তাঁর কঠোর আত্মিক সাধনা শুরু হয়। তিনি সর্বদা হযরত আকদাছ (কঃ)-এর খেদমতে হাজির থাকতে লাগলেন। অবসর মুহুর্তে ইবাদতে বিভোর থাকতে লাগলেন। তিনি কোন কোন সময় দৈনিক এক খতম কোরআন তিলাওয়াত করতেন।কখনও বিছানায় পিঠ বা পার্শ্বদেশ লাগিয়ে শয়ন করতেন না। অতি অল্প নিদ্রা যেতেন হাঁটুর উপর মাথা রেখে কিংবা ঘরের দেয়ালে হেলান দিয়ে। গৃহের অন্দর কক্ষে মোটেও যেতেন না; কোর রকমে কেউ তাঁকে জোর করে ঘরে নিয়ে গেলেও নরবে ঘর থেকে বের হয়ে যেতেন এবং তাঁর মুরশীদ হযরত আকদাছ (কঃ)-এর খেদমতে হাজির হতেন। শরীরিক কষ্টের ফলে তাঁর জীবন নাশের আশঙ্কায় তাঁর মাতাপিতা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং তাঁরা রেয়াজতের ভার কমিয়ে দেওয়ার জন্য হযরত আকদাছ (কঃ)-এর নিকট প্রার্থনা জানান। প্রত্যুত্তরে হযরত আকদাছ (কঃ) উর্দুতে যা বললেন তার মর্মার্থ এই, “তিনি ইউছুফ (আঃ) হতে চন আর তোমরা তাঁকে মৌলভী বানাতে চাও। খোদা তোমাদিগকে মান্না ও ছালওয়া নামক স্বর্গীয় খাদ্য খাওয়াতে চান। আর তোমরা পেঁয়াজ, রসুন খেতে চাও। তোমরা কি উৎকৃষ্ট বস্তুর বিনিময়ে নিকৃষ্ট বস্তু চাও?”
একবার ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ী ফিরে এস হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ) হযরত আকদাছ (কঃ)-এর সাথে দেখা করতে যেয়ে দেখতে পান যে হযরত আকদাছ (কঃ) আপাদমস্তকে চাদর জড়িয়ে শয়ন করে আছেন। ইহা দেখে তিনি হযরত আকদাছ (কঃ)-এর গৃহে প্রবেশ না করে দরজার সামনে সারারাত দাঁড়িয়ে থাকেন। উল্লেখ্য যে, ঐদিন ওয়াজ মাহফিল থেকে ফিরে আসার সময় তাঁর মুখমন্ডল লোহিত বর্ণ ধারণ করেছিলেন। পরদিন তাঁর অবস্থার নতুন পরিবর্তন দেখা দেয়। তিনি হযরত আকদাছ (কঃ)-এর গৃহে প্রবেশ বন্ধ করে দেন। ঘরের বাহির থেকে হযরত আকদাছ (কঃ)-এর প্রতি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে শুরু করলে। এ সময় তাঁন দু’নয়ন থেকে অশ্রুধারা গড়িয়ে পড়ত; কিন্তু মুখে কোন আওয়াজ ছিলনা। এভাবে কয়েক দিন অনাহারে থেকে তিনি উপবিষ্ট বা দন্ডায়মান অবস্থায় বরজখ ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। শীতকালে ঠান্ডা হওয়ায় তার শরীর বরফের ন্যায় শীতল হয়ে যেত। সাতদিন অন্তর এ সময় তিনি একদিন মাত্র আহার করতেন। এভাবে দু’বৎসর অতিবাহিত হবার পর তিনি আবার হযরতের গৃহে প্রবেশ করতে শুরু করলেন। কিন্তু তাঁর মধ্যে নতুন ভাবের উদয় হলো। মাঝে মাঝে তিনি অজ্ঞান অবস্থায় হযরত আকদাছ (কঃ)-এর চরণ যুগল জড়িয়ে ধরতেন। এতে হযরত আকদাছ (কঃ)-এর চরণ যুগল হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) এর বাহুর বন্ধন থেকে মুক্ত করতে হোত। জোরপূর্বক হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-কে কোন ঘরে বন্ধ করে রাখতে হোত। তখন হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) চিৎকার করে বলতেন, “ছেড়ে দাও, দেখতে দাও, আমার প্রাণ যায়”। এরূপ চিৎকার করতে করতে বেহুঁশ হয়ে যেতেন। জ্ঞান ফিরে আসার পর সুযোগ পাওয়া মাত্র ঘরের বাড়া কিংবা দরজা ভেঙ্গে দৌড়ে দিয়ে পুনরায় হযরত আকদাছ (কঃ)-এর চরণ যুগল জড়িয়ে ধরতেন। ছাড়া পেলেতো কথাই নেই। হযরত আকদাছ (কঃ)-এর চরণ যুগলে পতঙ্গের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়াতেই তিনি অনাবিল শান্তি পেতেন। বস্তুতঃ পক্ষে তাঁর অন্তরে মনছুর হাল্লাজ (রঃ) সামছে ভাবরীজ (রঃ), শাহ-বুআলী কলন্দর (রঃ) ও হাফেজ সিরাজী (রঃ) এর মত প্রেমনেশা ছিল। এভাবে সুদীর্ঘ তিন বৎসর কাল অসাধারণ সাধনা ও ধৈর্য ও প্রতীক্ষার পর তাঁর প্রমাষ্পদ মুরশীদ হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (কঃ)-এর আশীর্বাদ লাভ করে তিনি নব জীবন লাভ করেন এবং আধ্যাত্ম জগতের মহান সম্রাট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। আটাশ বৎসর বয়সে কঠোর আত্মিক ও দৈহিক সাধনার মাধ্যমে নফছ আস্মায়ার সকল কৃপ্রবৃত্তি দমন পূর্বক আত্মার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি, শরীয়ত, তরিকত, হাকীকত ও মারেফাতের বিকাশ সাধনা করতঃ হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-আধ্যাত্মিক জগতের চরম সোপানে উন্নীত হন। ফলশ্রুতিতে তাঁর আত্মায় হযরত আকছাদ (কঃ) এর যাবতীয় আত্মিক শক্তি সঞ্চারিত হয়। এ সময় থেকে হযরত আকদাছ (কঃ) তাঁর মুরীদদেরকে তালিম দেওয়ার জন্য হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-এর সমীপে পাঠাতে লাগলেন এবং এভাবে তিনি পরোক্ষভাবে হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) কে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করলেন। হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) জলে-স্থলে, পাহাড়-পর্বতে ভ্রমণের কাজে নিজেকে ব্যাপৃত রাখেন দীর্ঘকাল যাবত। তিনি সংসারের যাবতীয় মোহমায়া, সুখ-শান্তি প্রভৃতির প্রতি ভ্রূক্ষেপ না করে হযরত আকদাছ (কঃ)-এর নির্দেশক্রমে গাউছিয়তের কার্য পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি হিসেবে পূর্ব পার্বত্য চট্টগ্রাম, দেয়াঙ্গের পাহাড়, উত্তর পাহাড়, সীতকুন্ড পাহাড়, গভীর অরণ্য প্রভৃতি দিবসের অবসানে কিংবা রজনীর ঘোর অন্ধাকারে শ্বাপদ সঙ্কুল পরিবেশকে উপেক্ষা করে ভ্রমণ করে নিজেকে লোকালয় থেকে দূরে রাখেন জীবনের চল্লিশ বৎসর বয়সকালে উপনীত হওয়া অবধি। তাঁর এ সব ভ্রমণের রহস্য সাধরণের বোধগম্য নয়।
হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-এর দৈহিক বৈশিষ্ট্য
তাঁর দৈহিক সৌন্দর্য ছিল অপরূপ ও অতুলনীয়। নবজাত শিশু হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) কে কোলে নিয়ে হযরত আকদাছ (কঃ) বলেছিলেন,
“ইয়ে হামারে বাগকা গোলে গোলাপ হ্যায়। হযরত ইউছুফ (আঃ) কো চেহারা ইছমে আয়া হায়। ইছকো আজিজ রাখো। মায়নে ইছকো নাম গোলামুর রহমান রাখা”।
অর্থাৎ “এ শিশু আমার বাগানের গোলাপ ফুল। হযরত ইউছুফ (আঃ)-এর রূপ লাবণ্য তাঁর মধ্যে বিদ্যমান। তাঁকে যত্ন করো। তাঁর নাম গোলামুর রহমান রাখলাম”।
হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ)-এর স্বভাব, প্রকৃতি ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) ছোট বেলা থেকেই সংযত স্বভাবের ছিলেন। তিনি শিশু অবস্থায় কখনও বিছানা বা দোলনায় প্রস্রাব করেননি। প্রস্রাব পায়খানার সময় হলে তাঁর অবয়বে এমন কতগুলো লক্ষণ দেখা যেত যাতে তাঁর মা ছেলের প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার বিষয় বুঝে নিতে পারতেন। বিছানার বাহিরে নিলেই তিনি বাহ্য প্রস্রাব করতেন। তিনি অন্যান্য ছেলেদের মত কান্নকাটি করে কাউকে বিরক্ত করতেন না। একদা তাঁর আম্মাজান তাঁকে দোলনায় শুইয়ে রেখে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গলে তিনি দেখেন যে দোলনা দুলছে এবং নবজাত শিশু চোখ বুজে ঘুমাচ্ছে। অথচ দোলাবার মত কোন লোক সেখানে উপস্থিত ছিলনা। এরূপ অস্বাভাবিক ব্যাপার দেখে তাঁর মাতা ইহা একটি আলৌকিক ঘটনা বলে অনুমান করেছিলেন। তিনি ছোট বেলায় মিতভাষী, ধর্ম পরায়ণ ও মিতব্যয়ী হিসেবে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। তিনি বিনা প্রয়োজনে কারো সাথে বাক্যালাপ করতেন না। তিনি ছাত্রাবস্থায় কঠোর পাঠাভ্যাস করতেন, অল্প ঘুমাতেন এবং বাকী সময় উপাসনায় মগ্ন থাকতেন। রমজানের ঈদ ও কোরবানের ঈদের সময় ব্যতীত ২৪ ঘন্টার মধ্যে কেবল সন্ধ্যাকালে একবেলা তিনি আহার করতেন। তিনি ছিলেন “ছায়েমুদ্দাহার” অর্থাৎ সারা বছর রোজা পালনকারী। তাঁর কন্ঠ ছিল সুললিত ও সুমধুর। তাঁর সুমধুর আওয়াজ ও কোরআন তেলাওয়াত মানুষকে মুগ্ধ করত। বেলায়তী ক্ষমতা লাভের পর হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ) প্রায়শঃ ধ্যানে বিভোর থাকতেন। প্রায়শঃ তাঁকে আপাদমস্তক চাদর ঢাকা দিয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যেতো। মাঝে মধ্যে তিনি তাঁর হস্ত মোবারকের পানি ছিটিয়ে দিতেন। বলাবাহুল্য, তাঁর এ ছিটানো পানি ছিল সর্ব রোগের মহৌষধ। কত লোক যে তাঁর ছিটানো পানি দ্বারা উপকৃত হয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। তিনি তামাক খেতে পছন্দ করতেন। সৌখিন বিভিন্ন জাতীয় মসলা দ্বারা প্রস্তুত তামাক সৌখিন সুদীর্ঘ নলওয়ালা হুক্কায় সাজিয়ে রাখত ভক্তরা এবং তিনি উহাতে মাঝে মধ্যে টান দিতেন।। যার দিকে তিনি নজর করতেন সে খাঁটি সোনা হয়ে যেত। প্রকৃতপক্ষে তিনি হলেন মজজুবে ছালেক এব মহান ওলী-আল্লাহ।
ওলী হিসেব হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-এর মর্যাদার স্তর
হযরত আকদাছ (কঃ)-এর পর হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) হলেন মাইজভান্ডার শরীফের দ্বিতীয় মহান ওলী। তাঁর সম্পর্কে হযরত আকদাছ (কঃ)-এর মহান বাণীল মধ্যেই তাঁর মর্যাদার প্রকৃষ্ট পরিচয় মেলে। আবদুল মজিন নামে এক বৃদ্ধ খাদেমের কথার উত্তরে হযরত আকদাছ (কঃ) বলেছিলেন,
“মিঞা, উয়হ শাহে জালাল হ্যায়, মুরকে ইয়মন কা রহনে ওয়ালা হ্যায়। আলমে আবহাওয়া মে ছায়ের করতা হ্যায়”।
অর্থাৎ “তিনি জালালিয়তের সম্রাট ইয়ামত (দূর) দেশের অধিবাসী, তিনি রূহ জগতে ভ্রমণ করেন” হযরত আকদাছ (কঃ) একবার তাঁর (বাবা ভান্ডারী (কঃ) এর) মাতাকে বলেছিলেন, “আপ পীরানে পীর ছাহেবকা মা”। হযরত আকদাছ (কঃ)-এর মহান বাণীসমূহ থেকে ইহা স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) একজন মহান ত্রাণ কর্তৃত্ব সম্পন্ন ওলী ছিলেন।
অপূর্ব মাধুর্য মন্ডিত উদার মানবতাকামী হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)
হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) সাধারণত কোন কথা বলতেন না। কোন সময় কিছু কথা বললেও তা ছিল খুব সংক্ষিপ্ত, রূপক ও বহু অর্থবোধক। অবশ্য তাঁর আদেশ-নিষেধ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রবৃতি দর্শনার্থী হাজতী ও মকছুদীগণ ঠিকই বুঝতে পারত। তিনি যাকে যা জানাতে চাইতেন তা সে জানত। তাঁর চরণে কোন নিবেদন পৌছাতে মৌখিক কোন কথার প্রয়োজন হতনা। মনে মনে কংকল্প করলেই যথেষ্ট ছিল। বিভিন্ন ভাষাভাষী লোকের তাঁর দরবারে সমাগম ছিল। তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ জবাব পেত। অনুগ্রহ-প্রত্যঅশীরা তাঁর অনুগ্রহ লাভ করে ধন্য হত। ভক্ত-আশেকদেরকে তিনি মৌখিক কোন উপদেশ দেননি। ইঙ্গিত-ইশারা বা স্বপ্নযোগে ভক্ত-আশকগণ তাঁর আদেশ-নিষেধ বুঝতে পারত, বর্তমানেও পারে। তাঁকে স্বচক্ষে একবার দেখবার সৌভাগ্য যার হয়েছে সে জীবনে তাঁকে বিস্মৃত হতে পারেনি। হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-এর দরবারে হযরত আকদাছ (কঃ)-এর দরবারের ন্যায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অবাধ গমন ছিল। তিনি ছেমা বা গান-বাজনা সহকারে জিকির পছন্দ করতেন। তাঁর চলনে বলতে চিশতিয় ত্বরিকার প্রভাব ছিল অধিক।
ওলী সৃষ্টিতে হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ)-এর অবদান
হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-এর কেরামত সমূহ
হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-এর কেরামতের কথা বলে শেষ করা যাবেনা। তাঁর কেরামত অসংখ্য। সুউচ্চ পাহাড়ের চুড়ায় সাদা পোষাক পরিহিত স্বর্গীয় লোকজনদের সাথে গভীর রাত্রিতে সাক্ষাৎকার, বিষবৎ মাকাল ফল সুমিষ্ট ফলে রূপান্তরিত হওয়া, তাঁকে দেখে হিংস্র রাম কুকুরের ঝাঁকের পলায়ন, তাঁকে হিংস্র বাঘের সালাম নিবেদন, ঝুর্মিয়াকে জীবন দান, আসগর শাহ নামীয় ফকিরকে প্রহার করে সাগরে প্রেরণ, রেল লাইনের উপর হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) এর বসার কারণে আসাম মেইল ট্রেন ছাড়ার পর সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিবর্তে পেছনের দিকে গমন, পাতার রস গরম করে ঢেলে তামার পয়সাকে সোনার পয়সায় পরিণতকরণ, বিশালকায় সাপ ফনা বিস্তার করে হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) কে ছায়া প্রদান, রেল লাইনের উপর বসে চলন্ত ট্রেনকে থামিয়ে বহুদুরে অবস্থিত সম্মুখস্থ গাছের ব্যারিকেড থেকে ট্রেনকে উদ্ধার, এই সময়ে বিভিন্ন স্থানে দর্শন দান, মৃত ব্যক্তিকে জীবিতকরণ প্রভৃতি অজস্র ঘটনা তাঁর আশ্চর্য কেরামতের সাক্ষ্য বহন করে যা নিঃসন্দেহে হযরত বাবা ভান্ডারী (রঃ)-এর মত একজন মহান ওলীর পক্ষেই কেবল সম্ভবপর ছিল।
হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ)-এর তিরোধান
এ মহান ওলী সুদীর্ঘ একত্তর বৎসর ছয় মাস ইহধামে আধ্যাত্মিক লীলা সম্পাদন করে ১৩৪৩ বাংলার ২২শে চৈত্র [মোতাবেক ১৯৩৭ খৃষ্টাব্দের ৫ই এপ্রিল, ১৩৪৬ হিজরীর ২২শে মহররম] রোজ সোমবার ভোর ৭টা ৫৫ মিনিটের সময় সকল ভক্ত অনুরক্তকে শোক সাগরে ভাসিয়ে মহান প্রভুর সাথে মিলনার্থে পরপারে আত্মগোপন করেন। (ইন্না………….রাজিউন
আরেফ সুফি কবি আল্লামা ছৈয়দ আব্দুল হাদী রহঃ এর লেখা বাবাজন কেবলার শানে লেখা শায়ের... পায়ে পড়ি মিনতি করি
যে প্রিয় তোমায়
গাউছে ধনে তোমায় নিতে পাঠায়াছেন রায়। ঐ
পায়ে না ঠেলিয়ও মোরে
প্রিয় এখন চল ঘরে
সিংহাস ছেড়ে কেন আসিলেন হেথায়। ঐ
আখিরো পুতুল করে
নিবে প্রিয় প্রেম আদরে
মাইজ ভান্ডারে সিংহাসনে বসাব তোমায়। ঐ
পুষ্প বিনে অলিকুল
কেন্দে হল ব্যয়কুল
তুমি বিনে দাস হাদীর প্রাণ চলে যায়।
আওলাদঃ
হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলার ইনেত্মকালের সময় তাহার চারি পুত্র ও দুই কন্যা উত্তরাধিকারী রাখিয়া যান। প্রথমপুত্র- শাহজাদা সৈয়দ খায়রুল বশর, দ্বিতীয়পুত্র- শাহজাদা সৈয়দ আবুল বশর, তৃতীয়পুত্র-শাহজাদা সৈয়দ মাহবুবুল বশর, চতুর্থপুত্র-শাহজাদা সৈয়দ শফিউল বশর, প্রথমকন্যা-শাহজাদী সৈয়দা মায়মুনা খাতুন, দ্বিতীয় কন্যা-শাহজাদী সৈয়দা সাজেদা খাতুন। ইহা ছাড়া অসংখ্য আধ্যাত্মিক ওয়ারেশ অলীয়ে কামেল তাহার উত্তারাধিকারী খলিফা বিদ্যমান আছে।
আওলাদঃ
হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলার ইনেত্মকালের সময় তাহার চারি পুত্র ও দুই কন্যা উত্তরাধিকারী রাখিয়া যান। প্রথমপুত্র- শাহজাদা সৈয়দ খায়রুল বশর, দ্বিতীয়পুত্র- শাহজাদা সৈয়দ আবুল বশর, তৃতীয়পুত্র-শাহজাদা সৈয়দ মাহবুবুল বশর, চতুর্থপুত্র-শাহজাদা সৈয়দ শফিউল বশর, প্রথমকন্যা-শাহজাদী সৈয়দা মায়মুনা খাতুন, দ্বিতীয় কন্যা-শাহজাদী সৈয়দা সাজেদা খাতুন। ইহা ছাড়া অসংখ্য আধ্যাত্মিক ওয়ারেশ অলীয়ে কামেল তাহার উত্তারাধিকারী খলিফা বিদ্যমান আছে।
হযরত বাবা ভান্ডারীল বেচালের পর ফয়েজ ও রহমত দানঃ হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা ইহধাম ত্যাগ করিয়া পরলোক গমন করিয়াছেন বটে কিন’ তাহার আধ্যাত্মিক প্রভাব, প্রেম প্রীতি ও আকর্ষণ পূর্বের মতই অপরিবর্তীত ভাবেই বিদ্যমান রহিয়াছে। সশরীরে তাহার দৈহিক দর্শন ও তাহার পবিত্র দেহের মিলনই মানব চোখের ানত্মরালে বিরাজ করিতেছে। তাহার অনুরক্ত ভক্ত ও আশেকান সকল সময় তাহার চোখের সামনে রহিয়াছে। তাহার ধ্যানের ঘোরে অথবা মোরাকবার আসরে তাহার বেলায় তের জ্যোতি প্রত্যক্ষ অবলোকন করিয়া যথারীতি তাহার অনুগ্রহ লাভ করিতেছে। তাহার স্বপ্নযোগে দৈববাণী যোগে তাহার নিকট হইতে াঅদেশ নির্দেশ লাভ করিয়া নিরাপদে জীবন যাপন করিতেছে। বলা বাহুল্য, আল্লাহর পথে যাহারা জীবন উৎসর্গ করিয়া মৃত্যু বরণ করিয়াছেন, তাহারা মরিয়অও অমর হইয়া আছেন। সেই অলি আল্লাহগন তাহাদের অনুরক্ত ভক্তদের সহিত কিরূপ সম্পর্ক রাখিবেন তাহা মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি (রঃ) তাহার মসনবী গ্রনে’ বর্ণনা করিয়াছেন। গোফত জানম াঅজ মুহিবুবাদুর নিসত্ম লেকেবেরু আমদন দস’র নিসত্ম সেই অলিমগণের প্রাণ তা’হাদের শিষ্য ও বন্ধুবর্গের নিকট হইতে দুরে থাকিবে না। কিন’ তাহা (স’ুল দৃষ্টিতে) দেখা যাওয়অর রীতি প্রচলন নাই, তাহা অনুভূতির বিষয়। এই প্রসংগে হযরত বাবাভান্ডারী কেবলার অনত্মর্ধামের পরের কিছু অলৌকিক কেরামত লিপিবদ্ধ করিলাম।
(১) চট্টগ্রাম জিলার পটিয়া থানার অনত্মর্গত নলআন্ধা নিবাসী হাফেজ আবু সৈয়দ শাহের বর্ণনাঃ
পটিয়া থানার ছনহারা মৌজা নিবাসী এজাহার মিঞা নামক এক ছেলে পাগল হওয়ার পর বোবায় পরিণত হয়। সে অমাার সাথে বাবাভান্ডারীর দরবারে যায়। সে দরবারে কেধমতে থাকিয়া রহমত লাভ করার অীভলাষে শাহজাদা সৈয়দ মাহবুবুল বশর সাহেবের কামরায় থাকে। সে তথায় থাকিয়া কিছু কিছু কেধমত কাজ নির্বাহ করিত। একদা কাজের ত্রুটির জন্য সে প্রহৃত হয় এবং কান্নার সাথে সাথে তাহার জবান খুরিয়া যায়। এখন সে নিয়মিত পরিস্কার ভাবে কথা বলিতৈ সক্ষাম। বাবাভান্ডারীল মহিমা বলে এই বোবা ছেলে জবান ফিরিয়া পাইল।
(২) শাহজাদা সৈয়দ আবুল বশর সাহেবের নিকট ডি এস পি ইউছুপ সাহেবের চিঠিঃ
তিনি লিখিয়াছেন, “আমি এখন আজমীর শরীফে আছি। একদিন দেখিলাম সদর রাসত্মার এক পার্শ্বে বাবাভান্ডারী কেবলা উপবিশষ্ট। তিনি আমাকে দেখিয়া বলিলেন “অমনাইয়া তামাক খাওয়াবি”। অর্থাৎ ওহে বৎস আমাকে তামাক পরিবেশন কর। তাহাকে অপ্রত্যাশিত ভাবে সদর রাসত্মার পাশ্বে দেখিতে পাইয়া বুঝিলাম তিনি আজমীর শরীফে াাসিয়াছেন। আমি এক দোকানদারকে একটি টাকা জমা দিয়া তাহার নিকট হইতে একটি হুক্কা সাজাইয়া আনি। ততক্ষনে বাবাভান্ডারী কেবলা ঐ স’ানে হইতে প্রস’ান করিয়াছেন। তারপর বেশ অনুসন্ধানের পর তাহার কোন সন্ধান পাওয়া গেল না। অতত্রব, আপনার নিকট জানিতে চাই যে, তিনি আজমীর শরীফ আসিয়া কোথায় আছেন? এই ঘটনার পূর্বে বাবাভান্ডারী কেবলা ইনেত্মকাল ফরমাইয়াছেন। অতত্রব, তাহার ইনেত্মকাল হওয়ার পর তাহাকে আজমীর শরীফে দেখিতে পাওয়া তাহার কেরামতে পরিগণিত হয়।
(৩) গুজরাটের অনত্মর্গত কাটিয়ার জিলা নিবাসী মসত্মান আহমদ সাহেবের বর্ণনাঃ
আমি মনোহরী মালের সওদাগর ছিলাম। ভারতবর্ষ বিভক্ত হওয়ার কিছুকাল পূর্বে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে সামপ্রদায়িক দাংগা (জরড়ঃ) আরম্ভ হয়। হিন্দু মহল্লায় ছিল আমার দোকান। একদা হিন্দু গুন্ডার দল একত্রিত হইয়া ঐ মহল্লা নিবাসী মুসলমানগরের হাত পা বাধিয়া তাহাদিগকে ট্রাকে উঠাইতেছিল। সকলের সংগে াঅমিও তাহাদের হাতে বন্দী হইলাম। ট্রাকখানা ভর্তি হওয়ার পর রওয়ানা হইল। অল্পক্ষণের মধ্যে ট্রাকখানা হিন্দুদের শ্মাশানে আসিয়া পৌছিাল। তারপর ট্রাক হইতে মুসলমান বন্দীদিগকে নামাইয়অ হত্যা করার পূর্ব আরম্ভ হইল। তখন আমার মনের অবস’া কেমন হইয়াছিল তাহা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এমতাবস’ায় আমি বাবা ভান্ডারীর দরবারে আমার জীবন ভিক্ষা চাইতেছিলাম। অন্য সকল বন্দী গিদকে হত্যা করার পর আমার পালা আসিলেই তাহার। তাড়াতাড়ি করিয়া আমাকে নিহতদের মদ্যে ফেলিয়া ট্রাক লইয়া ছুটিয়া পালাইল। তারপর আমি হাতের বাধন দাতে কাটিয়া বহু কষ্টে গুজরাট শহর হইতে চট্টগ্রাম শহরে চলিয়া আসিলাম। এরপর বাবা ভান্ডারীর দরবারের হাজির হইয়অ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিলাম।
(৪) চট্টগ্রামের অনত্মগর্ত পূর্ব ষোলশহর নিবাসী হাফেজ কালাম আহমদের বর্ণনাঃ
আমি একজন সওদাগর। আমার গাছের ব্যবসায়ে যতেষ্ট উপার্জন আছে। আমার ঔরসে চারিটি মেয়ে সনত্মান জন্মগ্রহণ করে। আমার ধন-সম্পত্তি সামলাইয়াবার জন্য কোন পুরুষ আওলাদ না থাকায় আমি বিশেষ চিনিত্মত হইলাম। একদা চান্দগাও নিবাসী মাওলানা মোহাম্মদ আলীকে আমার এই দুঃখের কথা বলিলাম। তিনি আমার কথা শুনিয়া অনুতপ্ত হইলেন। তাহার উপদেশ অনুসারে হযরত বাবা ভান্ডারীর দরবারে আমার এই ফরিয়াদ পেশ করার জন্য যথারীতি সব কিছু করিলাম। তারপর আমার একটি পুত্র সনত্মান জন্মগ্রহণ করে।
(৫) চট্টগ্রামের অনর্ত্মগত চান্দগাও নিবাসী জনাব ওবেদুর রহমান চৌধুরী সাহেবের বর্ণনাঃ
১৯৪৭ খ্রষ্টাব্দের কথা। তখন আমি কলিকাতা ও মাদ্রাজে কাপড়েরর ব্যবসায়ী ছিলাম। একদা বাবাবভান্ডারী কেবলা আমাকে স্বপ্নযোগে অঅদেশ করিলেন “তুমি চট্টগ্রাম চলিয়া যাও।” তখন মাদ্রাজে প্রায় চারি লক্ষ টাকা পাওনা আছি। এতগুলি টাকা আদয় না করিয়া কিভাবে চলিয়া আসি, তাহাই চিনত্মার বিষয় হইল। তার পরদিন পুনরায় বাবাভান্ডারী কেবলা আদেশ করিলেন, “তুমি চট্টগ্রাম চলিয়া যাও।” আমি তোমার রিজিকের মালিক। অতত্রব বিনাদ্বিধায় সপ্তাহের মধ্যে সমসত্ম মালপত্র গুছাইয়া ষ্টীমার যোগে চট্টগ্রাম পাঠাইয়া দিলাম। আমি টাকা পয়সা সংগেকরিয়া ট্রেনযোগে কলিকাতা হইতে চট্টগ্রাম আসিয়া পৌছিলাম। তখন হিন্দুস’ান ও পাকিসআনের মধ্যে কোন বিবাদ আরম্ভ হয় নাই এবং যাতায়াতের ব্যাপারেও কোন কড়াকড়ি নাই। আমি চট্টগ্রাম পৌছিবার পরদিনই ঘোষিত হয় যে, সরকারী অনুমোদন ছাড়া এক এলাকা হইতেঅন্য এলাকায় মালপত্র আনা নেওয়া নিষিদ্ধ। তখনই বুঝিতে পারিলাম বাবাভান্ডারী কেবলার হুকুমের মহিমা।
পটিয়া থানার ছনহারা মৌজা নিবাসী এজাহার মিঞা নামক এক ছেলে পাগল হওয়ার পর বোবায় পরিণত হয়। সে অমাার সাথে বাবাভান্ডারীর দরবারে যায়। সে দরবারে কেধমতে থাকিয়া রহমত লাভ করার অীভলাষে শাহজাদা সৈয়দ মাহবুবুল বশর সাহেবের কামরায় থাকে। সে তথায় থাকিয়া কিছু কিছু কেধমত কাজ নির্বাহ করিত। একদা কাজের ত্রুটির জন্য সে প্রহৃত হয় এবং কান্নার সাথে সাথে তাহার জবান খুরিয়া যায়। এখন সে নিয়মিত পরিস্কার ভাবে কথা বলিতৈ সক্ষাম। বাবাভান্ডারীল মহিমা বলে এই বোবা ছেলে জবান ফিরিয়া পাইল।
(২) শাহজাদা সৈয়দ আবুল বশর সাহেবের নিকট ডি এস পি ইউছুপ সাহেবের চিঠিঃ
তিনি লিখিয়াছেন, “আমি এখন আজমীর শরীফে আছি। একদিন দেখিলাম সদর রাসত্মার এক পার্শ্বে বাবাভান্ডারী কেবলা উপবিশষ্ট। তিনি আমাকে দেখিয়া বলিলেন “অমনাইয়া তামাক খাওয়াবি”। অর্থাৎ ওহে বৎস আমাকে তামাক পরিবেশন কর। তাহাকে অপ্রত্যাশিত ভাবে সদর রাসত্মার পাশ্বে দেখিতে পাইয়া বুঝিলাম তিনি আজমীর শরীফে াাসিয়াছেন। আমি এক দোকানদারকে একটি টাকা জমা দিয়া তাহার নিকট হইতে একটি হুক্কা সাজাইয়া আনি। ততক্ষনে বাবাভান্ডারী কেবলা ঐ স’ানে হইতে প্রস’ান করিয়াছেন। তারপর বেশ অনুসন্ধানের পর তাহার কোন সন্ধান পাওয়া গেল না। অতত্রব, আপনার নিকট জানিতে চাই যে, তিনি আজমীর শরীফ আসিয়া কোথায় আছেন? এই ঘটনার পূর্বে বাবাভান্ডারী কেবলা ইনেত্মকাল ফরমাইয়াছেন। অতত্রব, তাহার ইনেত্মকাল হওয়ার পর তাহাকে আজমীর শরীফে দেখিতে পাওয়া তাহার কেরামতে পরিগণিত হয়।
(৩) গুজরাটের অনত্মর্গত কাটিয়ার জিলা নিবাসী মসত্মান আহমদ সাহেবের বর্ণনাঃ
আমি মনোহরী মালের সওদাগর ছিলাম। ভারতবর্ষ বিভক্ত হওয়ার কিছুকাল পূর্বে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে সামপ্রদায়িক দাংগা (জরড়ঃ) আরম্ভ হয়। হিন্দু মহল্লায় ছিল আমার দোকান। একদা হিন্দু গুন্ডার দল একত্রিত হইয়া ঐ মহল্লা নিবাসী মুসলমানগরের হাত পা বাধিয়া তাহাদিগকে ট্রাকে উঠাইতেছিল। সকলের সংগে াঅমিও তাহাদের হাতে বন্দী হইলাম। ট্রাকখানা ভর্তি হওয়ার পর রওয়ানা হইল। অল্পক্ষণের মধ্যে ট্রাকখানা হিন্দুদের শ্মাশানে আসিয়া পৌছিাল। তারপর ট্রাক হইতে মুসলমান বন্দীদিগকে নামাইয়অ হত্যা করার পূর্ব আরম্ভ হইল। তখন আমার মনের অবস’া কেমন হইয়াছিল তাহা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এমতাবস’ায় আমি বাবা ভান্ডারীর দরবারে আমার জীবন ভিক্ষা চাইতেছিলাম। অন্য সকল বন্দী গিদকে হত্যা করার পর আমার পালা আসিলেই তাহার। তাড়াতাড়ি করিয়া আমাকে নিহতদের মদ্যে ফেলিয়া ট্রাক লইয়া ছুটিয়া পালাইল। তারপর আমি হাতের বাধন দাতে কাটিয়া বহু কষ্টে গুজরাট শহর হইতে চট্টগ্রাম শহরে চলিয়া আসিলাম। এরপর বাবা ভান্ডারীর দরবারের হাজির হইয়অ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিলাম।
(৪) চট্টগ্রামের অনত্মগর্ত পূর্ব ষোলশহর নিবাসী হাফেজ কালাম আহমদের বর্ণনাঃ
আমি একজন সওদাগর। আমার গাছের ব্যবসায়ে যতেষ্ট উপার্জন আছে। আমার ঔরসে চারিটি মেয়ে সনত্মান জন্মগ্রহণ করে। আমার ধন-সম্পত্তি সামলাইয়াবার জন্য কোন পুরুষ আওলাদ না থাকায় আমি বিশেষ চিনিত্মত হইলাম। একদা চান্দগাও নিবাসী মাওলানা মোহাম্মদ আলীকে আমার এই দুঃখের কথা বলিলাম। তিনি আমার কথা শুনিয়া অনুতপ্ত হইলেন। তাহার উপদেশ অনুসারে হযরত বাবা ভান্ডারীর দরবারে আমার এই ফরিয়াদ পেশ করার জন্য যথারীতি সব কিছু করিলাম। তারপর আমার একটি পুত্র সনত্মান জন্মগ্রহণ করে।
(৫) চট্টগ্রামের অনর্ত্মগত চান্দগাও নিবাসী জনাব ওবেদুর রহমান চৌধুরী সাহেবের বর্ণনাঃ
১৯৪৭ খ্রষ্টাব্দের কথা। তখন আমি কলিকাতা ও মাদ্রাজে কাপড়েরর ব্যবসায়ী ছিলাম। একদা বাবাবভান্ডারী কেবলা আমাকে স্বপ্নযোগে অঅদেশ করিলেন “তুমি চট্টগ্রাম চলিয়া যাও।” তখন মাদ্রাজে প্রায় চারি লক্ষ টাকা পাওনা আছি। এতগুলি টাকা আদয় না করিয়া কিভাবে চলিয়া আসি, তাহাই চিনত্মার বিষয় হইল। তার পরদিন পুনরায় বাবাভান্ডারী কেবলা আদেশ করিলেন, “তুমি চট্টগ্রাম চলিয়া যাও।” আমি তোমার রিজিকের মালিক। অতত্রব বিনাদ্বিধায় সপ্তাহের মধ্যে সমসত্ম মালপত্র গুছাইয়া ষ্টীমার যোগে চট্টগ্রাম পাঠাইয়া দিলাম। আমি টাকা পয়সা সংগেকরিয়া ট্রেনযোগে কলিকাতা হইতে চট্টগ্রাম আসিয়া পৌছিলাম। তখন হিন্দুস’ান ও পাকিসআনের মধ্যে কোন বিবাদ আরম্ভ হয় নাই এবং যাতায়াতের ব্যাপারেও কোন কড়াকড়ি নাই। আমি চট্টগ্রাম পৌছিবার পরদিনই ঘোষিত হয় যে, সরকারী অনুমোদন ছাড়া এক এলাকা হইতেঅন্য এলাকায় মালপত্র আনা নেওয়া নিষিদ্ধ। তখনই বুঝিতে পারিলাম বাবাভান্ডারী কেবলার হুকুমের মহিমা।
(৬) চট্টগ্রামের অনত্মর্গত সীতাকুন্ড নিবাসী মাইজভান্ডারী গানের সর্বপ্রথম বেতার শিল্পী মলকুতুর রহমানের বর্ণনাঃ
আমার প্রতিবেশী এক মাইজভান্ডারী ভক্ত নতুন দায়রা ঘর নিমার্ণ করিয়াছে। আমরা বারজন আশেকানে ভান্ডারী সেই দায়রার মিলাদ পাঠের পর ছেমা, হাল্কা ও অজদের মাহফিল আরম্ভ করিয়াছি। তখন রাত ১১টা গ্রামের তথাকথিত মৌলভীদের প্ররোচনায় প্রায় ৬০ জন লোক আমাদিগকে আক্রমন করিতে আসে তাহারা ঘরে প্রবেশ করিয়া সর্বপ্রথম আমার মাথার উপর লাঠির আঘাত করে। ফলে আমার মাথা ফাটিয়া রক্তধারা প্রবাহিত হইতে থাকে। আমি ঘর হইতে পিছন দরজা দিয়া পালাইতে ছিলাম। এমন সময় বাবাভান্ডারী গায়েবী আওয়াজে আমাকে নির্দেশ করিণে, “বাচ্চা মাত হটো”। সুতরাং আমি আর পালাইতে পারিলাম না। লাঠিয়ালগন শোর করিয়া বলিতেছিল, মার মলকুতকে, জোরে মার। তাহার কেবল মলকুতকে মারিতেছে অতছ একটি লাঠিও আর আমাকে আঘাত করিতেছে না। তাহাদের দলের কয়েকজন লোক মাথা ফাটিয়া মৃত প্রায় হইয়া পড়িল। অতঃপর তাহারা তাহাদের আহত লোকগিদকে লইয়া পলায়ন করিল। বাবাভান্ডারীল মহিমা বলে তাহারা মারিতে আসিয়া মার খাইল।
(৭) চট্টগ্রামের অনত্মর্গত চান্দগাও নিবাসী জহির আহমদ চৌধুরীর বর্ণনাঃ
১৯৬২ খৃষ্টাব্দের রমজানের রোজার দিনে চট্টগ্রামে শহরের লয়েল রোডের পার্শ্বের রিফিউজী ক্যাম্পে আগুন ধরিয়া যায়। রমজানের ঈদ উপলক্ষে প্রায় ত্রিশ হাজার টাকার কাপড় আমার দোকানে মওজুদ ছিল। আগুন ক্রমঃসমপ্রসারিত হইতে থাকে। আমার দোকানের সামনে পরছাতি আগুনে পুড়িয়া যাওয়ার পর মূল দোকান গৃহে আগুন লাগার উপক্রম হইল। আমি অনন্যোপায় হইয়া বাবাভান্ডরীর সাহায্য প্রার্থণা করিতছিলা। তখন আগুন লাফ দিয়া অন্য দিকে চলিয়া গেল। বাবাভান্ডারীর মহিমা বলে আমার সম্পূর্ণ মাল ও দোকান এই প্রচন্ড অগ্নিকান্ড হইতে রক্ষা পাইল।
(৮) চট্টগ্রাম জিলার বোয়ালখালী থানার অনত্মর্গত গোমদণ্ডী গ্রাম নিবাসী কবিয়াল রমেশ চন্দ্রের পুত্র শ্রী জজ্ঞেশ্বরের বর্ণনাঃ
আমার বাড়ীর স্বাবিত্রী বালা শীল দুই তিন মাস ধরিয়া রক্ত স্রাবে বিশেষ কষ্টভোগ করিতেছিল। গ্রাম্য ডাক্তার কবিরাজ তাহার চিকিৎসা করিয়া ব্যর্থ হয়। অতিরিক্ত রক্তস্রাসের ফলে তাহার মুখ মন্ডলের রং বিবর্ণ হইয়া যায়। এইরুপে রোগীনি জীবন আশা পরিত্যাগ করিয়া হতাশ হইয়অ পড়ে। আমি ইহা শুনিয়া তাহাকে বাবাভান্ডালীর রওজা শরীফের কিছুজল পান করাইয়া দিলাম। অতঃপর বাবাভান্ডারী কেবলার করুনা বলে তাহার রক্তস্রাব বন্ধ হইয়া গেল এবং সে সুস’ হইয়া পড়ে।
(৯) চট্টগ্রাম জিলার পাচলাইশ থানার অনত্মর্গত বহদ্দার বাড়ী নিবাসী মৌলভী ছেয়দুর রহান চৌধুরী সাহেবের বর্ণনাঃ
১৯৬৬ খৃষ্টাব্দের জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহের কথা। একদা আমি চকবাজারে পাক নর্দমায় পতিত হইয়া অজ্ঞান হইয়া পড়ি তারপর প্রায় তিন মাস ধরিয়া চিকিৎসা করার পর কোন প্রকার আরোগ্য রঅভ না করিয়া বিশেষ চিহ্নিত হইয়া পড়ি। এমতাবস’অয় এক রাতে বাবাভান্ডারী কেবলা স্বপ্নযোাগে আমাকে দেখা দেন এবং আমার মাথা ও ডান হাতের উপর তাহার পবিত্র হাত বুলাইয়া দেন। পরদিন হইতে আমি আরোগ্য লাভ করি।
(১০) জনাব মাহমুদুল হক, ই,পি,সি,এস (ডেপুটি সেক্রেটারী) ই,উ, ্ খ,এ, উঊচঞঞ (পূর্ব পাকিসত্মান সরকার) নিম্নলিখিত বর্ণনা লিখিয়াছেনঃ
১৯৫৭/৫৮ সালে জমিদারী রাষ্ট্রায়ত্ব করণের জন্র সারা প্রদেশে যে সেটেলমেন্ট কার্য্যক্রম গ্রহণ করা হইয়াছিল তার াাওতায় আমি খুলনা জোনে সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যে নিয়োজিত ছিলাম। একবার রেভেনিউ সার্কেল এবং সেটেলমেন্ট সার্কেলের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের যুক্তভাবে তদনত্ম করিবার জন্য খুলনা জিলার অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার মিঃ কাজমী সি,এস,পি এবং আমি ঐ জিলার সাতক্ষীরা এবং কলারোয়া থানায় এক যুক্ত ভ্রমন প্রোগ্রাম করি। ভ্রমনের যাত্রার দিনের পূর্বৈর রাত্রি আমি স্বপ্ন দেখি, বাবাজান কেবলা কাবা একটি অফিস কক্ষে একটি চেয়ারে উপবিষ্ট আছেন। তাহার সম্মুখে একটি টেবিল ও টেবিলের পাশে আমি দণ্ডায়মান। বাবাজান কেবলা আমাকে লক্ষ্য করিয়া ফরমাইলেন, তোমার আয়ুকঅর শেষ হইয়াছে দেখিতেছি। আমি উৎসুখ হইয়া টেবিেরল দিকে চাহিলে দেখিতে পাইলাম, একটা ছক আকা কাগজে বাবা জান কেবলা হিসাব মিলাইলেন। আমিও বুঝিলাম যে অঙ্কিত ছকের হিসাব ানুযায়ী আমার আয়ু আর নাই। পর্দায় যেমন ছবি দেখায়, এরূপ ভাবে আরও দেখিলাম কাজমী সাহেব এবং আমি একখানি জীপ গাড়ীতে ভ্রমন করিয়া আসিতেছি, সেটেলমেন্ট অফিসের পিয়ন সরাফত আলী ও ঐ গাড়ীতে আছে। আমাদের আগে আগে একটা ট্রাক গাড়ী চলিয়াছে। আমরা ট্রাক গাড়ীটি অতিক্রম করিয়া যাইবার চেষ্টা করিলেই এক দুর্ঘটনার পতিত হই এবং আমি প্রাণ হারাই। আমি এক অস্বসিত্মকর অবস’ার মধ্যে জিহআসু নেত্রে বাবাজার কেবলার দিকে তাকাইয়া রহিলাম। কিছু বলিবার সাহসও পাইতেছিনা এবং কি বলিব ভাবিয়াও পাইতেছি না। এমন সময় হযরতে আকদস আমার পাশে আসিয়া দাড়াইলেন। হযরতে আকদসকে দেখিয়া আমার মনে সাহসের সঞ্চার হইল। আমি হযরতে আকদসকে উদ্দেশ্য করিয়া বলিলাম, “হুজুর আমার আয়ু নাকি ফুরাইয়া গিয়াছে। “এ্যা? দেখি” এই বলিয়া হযরত আকদস টেবিলের উপরের কাগজে অংকিত ঐ ছকের হিসাব মিলাইলেন এবংউচ্চারণলণ করিলেণ “সত্যই তো।” আমি হযরতে আকদসের নিকট নিবেদন কলিাম “হুজুর তাহা হইলে কেমন হইবে।” হযরত আকদস বলিলেন, ‘তাইতো!’ এবং বাবাজান কেবার দিকে ফিরিয়া বলিলেন” একটু ঠিক করিয়া দিলে………” এ পর্যনত্ম শুনার পরই আমার ঘুম ভাঙ্গিয়া যায়। একি দেখিলাম ও শুনিলাম আমি অনুধাবন করিতে থাকি। বাকী রাত অঅর ঘুমাইতে পারি নাই। আমি বেশ বুঝিতে পালিঅম যে আমার কাল ফুরাইয়াছে। হযরত আকদসের শেষ উক্তির ফল কি হইল তাহা জানিবার পূর্বৈই এমন কি উক্তিটা শেষ হইবার পূর্বেই আমি জাগিয়া গিয়াছিলাম। সুতরাং অনত্মরে কোন ভরসা পাইতেছিলামনা। পরেরদিন ভোরে অফিসে গিয়া আমার ব্যাংকে যা টাকা জমা চিল উঠাইয়া আনিলাম এবং আমার স্ত্রীর হাতে দিয়া বলিলাম আজ বিকাল বেলাই টু’র (ভ্রমণ) করিতে যাইতেছি। যান বাহনের ভ্রমণ আজকাল নিরাপদ নয়। যদি কোন অঘটন ঘটে, হৈচৈ না করিয়া, ্এখানকার সংসার গুটাইয়া সোজা বাড়ী চলিয়া যাইবে। আমার স্ত্রী প্রশ্ন করিল হঠাৎ আজ একথা কেন? অঘটন ঘটিবার এমন কি কারণ আছে। তাকে বুঝাইতে ছেস্টা কলিাম যান বাহনে ভ্রমণে তো দূর্ঘটনা লেগৈই আছে, এরূপ ভ্রমণ সর্বদা নিরাপদ হয়না। রেল মোটর ইত্যাদির দুর্ঘটনা তো নতুন কিছু নয়। সে কিছুতেই বুঝতে চায়না, প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে এবং বলে যে, মটর ও জীব ইত্যাদিতে হারদম ই-তো ভ্রমণ করা হইতেছে, অঘটনের কথা আগোতো কোন দিন উঠে নাই। দুর্ঘটনা কোন ক্ষেত্রে হইলেও, ইহা এবার ঘটিতে পারে এরূপ সন্দেহ এবং টাকা আনিয়া হাতে দিয়া তার পরের ব্রবস’া কি কারিতে হইবে তাহার উপদেশ দেওয়া, এটা নেহায়েত নতুন। সুতরাং এর কি কারণ আছে তাহাকে জানিতেই হইবে। অগত্যা তাহাকে স্বপ্নের কাথা কুলিয়া বলিলাম। সে তখন বকলিল ভ্রমনই তাহা হইলে বন্ধ করিতে হইবে সেই দিন টুরে যাওয়া হইবেনা। টুরে না গেরৌ মরণের সমসয়ের এক মিনিট এদিক ওদিক হইবেনা একটু তাহাকে বুঝাইবার চেষ্টা করিলাম; সে বুঝিবেন না। ছেলেেেময়েদের আমার পিছনে লাগিয়ে দিল। অনন্যোপায় হইয়া কাজমী সাহেবকে সেইদিন সাতক্ষীরা ডাক বাংলায় গিয়অ অঅমা রজন্য অপেক্ষা করিতে অনুরোধ করিলাম যাতে পরের দিন গিয়া তথায় আমি তাহার সাক্ষাৎ পাই। পরের দিন যাত্রা করিলাম। আমার স্ত্রী জীপের ড্রাইভারকে আমার স্বপ্নের কথা বর্ণনা করিয়া সর্তকতার সহিত গাড়ী চালাইবার জন্য অনুরোধ করিলেন, সাতক্ষীরা নিরাপদেই পৌছিলাম। তথায় তদনত্ম কাজ সমাধা করিয়া সর্তকতার সহিত গাড়ী চালাইবার জন্য অনুরোধ করিলেন, সাতক্ষীরা নিরাপদেই পৌছিলাম। তথায় তদনত্ম কাজ সমাধা করিয়া কলারোয়া থানার অফিসের দিকে রওয়ানা হইবার সময় জাকমী সাহেব চাইলেন, আমরা দুজনে একই গাড়ীতে আলাপ আলোচনা করিতে করিতে যাই। আমি আমরা উভয়ের একই গাড়ীতে ভ্রমণ এড়াইবার জন্র, আমার কয়েক মিনিট দেরী হইবে বলিয়া তাহাকে কিছুক্ষণ আগেই রওয়ানা করাইয়া দিলাম। পরে কলারোয়া থানার কাজ শেস হইলে কাজমী সাহেব আমাকে তাহার গাড়ীতে যাইবার জন্য অনুরোধ করিয়া তাহার গাড়ীতে উঠিলেন। কিন’ হঠাৎ যেন তাহার গাড়ী বিকল হইয়া গেল, কোন মতেই ষ্টার্ট নিল না। প্রায় ঘন্টা খানেক চেষ্টা করিয়াও তিনি বিফল হইলেন। গাড়ী কোন মতেই নড়িল না। এভাবে তাহাকে ওখানে ফেলিয়া আসা চরম অভদ্রতা হইবে বিধায় বাধ্য হইয়া তাহাকেও আমার গাড়ীতে উঠাইতে হইল। কাজমী সাহেব নিজে ড্রাইভ করিতে চাহিলেন। ড্রাইভিং এ তার হাত পাকাই ছিল। তবুও যৌবনের গতি চঞ্জলতার মাদকতায় বেপরোয়া জোরে গাড়ী চালাইলে দুর্ঘটনাকে টানিয়া আনা হইবে, এ অঅশংকায় আমি তাহাকে বারণ করিতে লাগিলাম। কিন’ তিনি নাছোড়বান্দা, এ দেখিয়া ড্রাইভার তাহাকে স্বপ্নের কথা খুলিয়া বলিল। এইবার তিনি বিরত হইলেন বটে, বুঝাই গেল যে আমাদের সংস্কারের হেতুর যৌকতিকতায় তিনি বিশ্বাস স’াপন করিতে পারেন নাই। কলোরোয়া হইতে যশোহর পর্যনত্ম আসিয়া আমার আরও ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করিলাম। কাজমীসাহেবের ড্রাইভার তাহার জীপ গাড়ীটি নিয়অ আসিয়া পৌছিতে পারিল না। আবার একই গাড়ীতে খুলনার দিকে রওনা হইলাম। এবার কাজমী সাহেব বলিলেন, “হক সাহেব ততক্ষণে বোধ হয় আপনার স্বপ্নের বিপদ কাটিয়া গিয়াছে। আমি উত্তরে বলিলাম, “পথ এখনও ৪০ মাইলের মত বাকী আছে। তিনি আর জোর করিলেন না। যশোহর টাউন ছাড়িয়া ৫/৭ মাইল অঅসিতেই দেখিলাম আমাদের অঅগে আগে রাশি রাশি ধুলা উড়াইয়া একখানা ট্রাক গাড়ী চলিয়াছে। আমাদের গাড়ীর হর্ণটি ঐ জায়গায় আসিয়াই নষ্ট হইয়া গেল। কোনশব্দই হয়না ট্রাকের পিছন ভাগেও কোন লোক ছিল না যে ড্রাইভারকে জানাইয়অ দিবে যে, আমরা তার পিছনে ধুলা খাইতেছি। সুতরাং ট্রাকখানা আমাদের জন্য পথ ছাড়িতেছে না। আমাদের ড্রাইভার স্বপ্নের বৃত্তানত্ম স্মরণ করিয়া ট্রাক গাড়ীটাকে অতিক্রম করিবার কোন চেষ্টাই করিতেছে না, অথচ ধুলা বেশী চিল যে ট্রাকের পিছনে গাড়ী চালাইয়া যাওয়া শুধু বিরক্তিকর নয়, যথেষ্ট কষ্টদাযক এবং অস্বাস’্যকর ও ছিল। আমাদের ড্রাইভারকে অবশেষে বলতেই হলো যে রাসত্মা যথেষ্ট প্রশসত্ম পাওয়া গেলে, সে যেন পাশ কাটিয়া ট্রাকখানা অীতক্রম করিয়া যায়। কিছুদূর যাওয়ার পর বেশ প্রশসত্ম পার্শ্ব পাওয়া গেল এবং আমাদের ড্রাইভার ডান পাশ দিয়া গাড়ীর গতি বাড়াইয়া দিল। কিন’ অমাাদের গাড়ী ট্রাকখানার বনেট বরাবর যাইতেই দেখি আমাদের গাড়ীর সামনে রাসত্মায় এক প্রশসত্ম ও গভীর কাটা খাদ। গাড়ীর বেগ তীব্রই ছিল ফলে ধপ করিয়া গাড়ী পড়িয়া ধাক্কা খাইল এবং এক লাফ দিল। আমার বুকে বেশ শক পাইলাম এবং ষ্টিয়ারিং হইতে ড্রাইভারে রহাত ছুটিয়া গেল। কিন’ লাফ দিয়া উঠিবার সময় গাড়ী নিজে নিজেই বাম দিকে মোড় নিয়া রাসত্মার উপরই উঠিল। দৈবাৎ যদি গাড়ীটি ডান দিকে মোড় নিত এবং ডান পাশে রাসত্মার নায়ান জুলির খাদে পড়িত আমাদের আর রক্ষা ছিল না। গাড়ীর দুএকটি অংশ বাকিয়অ গেল বিশেষ করে টি,সি, রডটি অল।প এবং তার সিপ্রং একটি বাকা হইয়া গেল, গাড়ীটা সম্পূর্ণ অচল হইল না। আমাদের অবস’া দেখিয়া ট্রাক ড্রাইভার থামিয়া গিয়াছিল। কাজমী সাহেব নামিয়অ তাহাকে বকিতে আরম্ভ করিলেন। আমি তাহাকে ফিরাইয়া আনিলাম এবং বলিলাম “যা অদৃষ্টের লিখন ছিল তাহাই ঘটিয়া গেল প্রাণে বাচিয়া গিয়াছি এই যথেষ্ট। তিনি বলিলে হা আপনার স্বপ্ন সত্য হইয়াছে। আমার আর বুঝিতে বাকী রহিল না যে হযরত আকদসের সুপারিশে বাবাজান কেবলা আমার জীবনের চর পরিবতৃণ করিয়া দিয়াছেন এবং এ যাত্রা রক্ষা পেলাম।
আমার প্রতিবেশী এক মাইজভান্ডারী ভক্ত নতুন দায়রা ঘর নিমার্ণ করিয়াছে। আমরা বারজন আশেকানে ভান্ডারী সেই দায়রার মিলাদ পাঠের পর ছেমা, হাল্কা ও অজদের মাহফিল আরম্ভ করিয়াছি। তখন রাত ১১টা গ্রামের তথাকথিত মৌলভীদের প্ররোচনায় প্রায় ৬০ জন লোক আমাদিগকে আক্রমন করিতে আসে তাহারা ঘরে প্রবেশ করিয়া সর্বপ্রথম আমার মাথার উপর লাঠির আঘাত করে। ফলে আমার মাথা ফাটিয়া রক্তধারা প্রবাহিত হইতে থাকে। আমি ঘর হইতে পিছন দরজা দিয়া পালাইতে ছিলাম। এমন সময় বাবাভান্ডারী গায়েবী আওয়াজে আমাকে নির্দেশ করিণে, “বাচ্চা মাত হটো”। সুতরাং আমি আর পালাইতে পারিলাম না। লাঠিয়ালগন শোর করিয়া বলিতেছিল, মার মলকুতকে, জোরে মার। তাহার কেবল মলকুতকে মারিতেছে অতছ একটি লাঠিও আর আমাকে আঘাত করিতেছে না। তাহাদের দলের কয়েকজন লোক মাথা ফাটিয়া মৃত প্রায় হইয়া পড়িল। অতঃপর তাহারা তাহাদের আহত লোকগিদকে লইয়া পলায়ন করিল। বাবাভান্ডারীল মহিমা বলে তাহারা মারিতে আসিয়া মার খাইল।
(৭) চট্টগ্রামের অনত্মর্গত চান্দগাও নিবাসী জহির আহমদ চৌধুরীর বর্ণনাঃ
১৯৬২ খৃষ্টাব্দের রমজানের রোজার দিনে চট্টগ্রামে শহরের লয়েল রোডের পার্শ্বের রিফিউজী ক্যাম্পে আগুন ধরিয়া যায়। রমজানের ঈদ উপলক্ষে প্রায় ত্রিশ হাজার টাকার কাপড় আমার দোকানে মওজুদ ছিল। আগুন ক্রমঃসমপ্রসারিত হইতে থাকে। আমার দোকানের সামনে পরছাতি আগুনে পুড়িয়া যাওয়ার পর মূল দোকান গৃহে আগুন লাগার উপক্রম হইল। আমি অনন্যোপায় হইয়া বাবাভান্ডরীর সাহায্য প্রার্থণা করিতছিলা। তখন আগুন লাফ দিয়া অন্য দিকে চলিয়া গেল। বাবাভান্ডারীর মহিমা বলে আমার সম্পূর্ণ মাল ও দোকান এই প্রচন্ড অগ্নিকান্ড হইতে রক্ষা পাইল।
(৮) চট্টগ্রাম জিলার বোয়ালখালী থানার অনত্মর্গত গোমদণ্ডী গ্রাম নিবাসী কবিয়াল রমেশ চন্দ্রের পুত্র শ্রী জজ্ঞেশ্বরের বর্ণনাঃ
আমার বাড়ীর স্বাবিত্রী বালা শীল দুই তিন মাস ধরিয়া রক্ত স্রাবে বিশেষ কষ্টভোগ করিতেছিল। গ্রাম্য ডাক্তার কবিরাজ তাহার চিকিৎসা করিয়া ব্যর্থ হয়। অতিরিক্ত রক্তস্রাসের ফলে তাহার মুখ মন্ডলের রং বিবর্ণ হইয়া যায়। এইরুপে রোগীনি জীবন আশা পরিত্যাগ করিয়া হতাশ হইয়অ পড়ে। আমি ইহা শুনিয়া তাহাকে বাবাভান্ডালীর রওজা শরীফের কিছুজল পান করাইয়া দিলাম। অতঃপর বাবাভান্ডারী কেবলার করুনা বলে তাহার রক্তস্রাব বন্ধ হইয়া গেল এবং সে সুস’ হইয়া পড়ে।
(৯) চট্টগ্রাম জিলার পাচলাইশ থানার অনত্মর্গত বহদ্দার বাড়ী নিবাসী মৌলভী ছেয়দুর রহান চৌধুরী সাহেবের বর্ণনাঃ
১৯৬৬ খৃষ্টাব্দের জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহের কথা। একদা আমি চকবাজারে পাক নর্দমায় পতিত হইয়া অজ্ঞান হইয়া পড়ি তারপর প্রায় তিন মাস ধরিয়া চিকিৎসা করার পর কোন প্রকার আরোগ্য রঅভ না করিয়া বিশেষ চিহ্নিত হইয়া পড়ি। এমতাবস’অয় এক রাতে বাবাভান্ডারী কেবলা স্বপ্নযোাগে আমাকে দেখা দেন এবং আমার মাথা ও ডান হাতের উপর তাহার পবিত্র হাত বুলাইয়া দেন। পরদিন হইতে আমি আরোগ্য লাভ করি।
(১০) জনাব মাহমুদুল হক, ই,পি,সি,এস (ডেপুটি সেক্রেটারী) ই,উ, ্ খ,এ, উঊচঞঞ (পূর্ব পাকিসত্মান সরকার) নিম্নলিখিত বর্ণনা লিখিয়াছেনঃ
১৯৫৭/৫৮ সালে জমিদারী রাষ্ট্রায়ত্ব করণের জন্র সারা প্রদেশে যে সেটেলমেন্ট কার্য্যক্রম গ্রহণ করা হইয়াছিল তার াাওতায় আমি খুলনা জোনে সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যে নিয়োজিত ছিলাম। একবার রেভেনিউ সার্কেল এবং সেটেলমেন্ট সার্কেলের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের যুক্তভাবে তদনত্ম করিবার জন্য খুলনা জিলার অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার মিঃ কাজমী সি,এস,পি এবং আমি ঐ জিলার সাতক্ষীরা এবং কলারোয়া থানায় এক যুক্ত ভ্রমন প্রোগ্রাম করি। ভ্রমনের যাত্রার দিনের পূর্বৈর রাত্রি আমি স্বপ্ন দেখি, বাবাজান কেবলা কাবা একটি অফিস কক্ষে একটি চেয়ারে উপবিষ্ট আছেন। তাহার সম্মুখে একটি টেবিল ও টেবিলের পাশে আমি দণ্ডায়মান। বাবাজান কেবলা আমাকে লক্ষ্য করিয়া ফরমাইলেন, তোমার আয়ুকঅর শেষ হইয়াছে দেখিতেছি। আমি উৎসুখ হইয়া টেবিেরল দিকে চাহিলে দেখিতে পাইলাম, একটা ছক আকা কাগজে বাবা জান কেবলা হিসাব মিলাইলেন। আমিও বুঝিলাম যে অঙ্কিত ছকের হিসাব ানুযায়ী আমার আয়ু আর নাই। পর্দায় যেমন ছবি দেখায়, এরূপ ভাবে আরও দেখিলাম কাজমী সাহেব এবং আমি একখানি জীপ গাড়ীতে ভ্রমন করিয়া আসিতেছি, সেটেলমেন্ট অফিসের পিয়ন সরাফত আলী ও ঐ গাড়ীতে আছে। আমাদের আগে আগে একটা ট্রাক গাড়ী চলিয়াছে। আমরা ট্রাক গাড়ীটি অতিক্রম করিয়া যাইবার চেষ্টা করিলেই এক দুর্ঘটনার পতিত হই এবং আমি প্রাণ হারাই। আমি এক অস্বসিত্মকর অবস’ার মধ্যে জিহআসু নেত্রে বাবাজার কেবলার দিকে তাকাইয়া রহিলাম। কিছু বলিবার সাহসও পাইতেছিনা এবং কি বলিব ভাবিয়াও পাইতেছি না। এমন সময় হযরতে আকদস আমার পাশে আসিয়া দাড়াইলেন। হযরতে আকদসকে দেখিয়া আমার মনে সাহসের সঞ্চার হইল। আমি হযরতে আকদসকে উদ্দেশ্য করিয়া বলিলাম, “হুজুর আমার আয়ু নাকি ফুরাইয়া গিয়াছে। “এ্যা? দেখি” এই বলিয়া হযরত আকদস টেবিলের উপরের কাগজে অংকিত ঐ ছকের হিসাব মিলাইলেন এবংউচ্চারণলণ করিলেণ “সত্যই তো।” আমি হযরতে আকদসের নিকট নিবেদন কলিাম “হুজুর তাহা হইলে কেমন হইবে।” হযরত আকদস বলিলেন, ‘তাইতো!’ এবং বাবাজান কেবার দিকে ফিরিয়া বলিলেন” একটু ঠিক করিয়া দিলে………” এ পর্যনত্ম শুনার পরই আমার ঘুম ভাঙ্গিয়া যায়। একি দেখিলাম ও শুনিলাম আমি অনুধাবন করিতে থাকি। বাকী রাত অঅর ঘুমাইতে পারি নাই। আমি বেশ বুঝিতে পালিঅম যে আমার কাল ফুরাইয়াছে। হযরত আকদসের শেষ উক্তির ফল কি হইল তাহা জানিবার পূর্বৈই এমন কি উক্তিটা শেষ হইবার পূর্বেই আমি জাগিয়া গিয়াছিলাম। সুতরাং অনত্মরে কোন ভরসা পাইতেছিলামনা। পরেরদিন ভোরে অফিসে গিয়া আমার ব্যাংকে যা টাকা জমা চিল উঠাইয়া আনিলাম এবং আমার স্ত্রীর হাতে দিয়া বলিলাম আজ বিকাল বেলাই টু’র (ভ্রমণ) করিতে যাইতেছি। যান বাহনের ভ্রমণ আজকাল নিরাপদ নয়। যদি কোন অঘটন ঘটে, হৈচৈ না করিয়া, ্এখানকার সংসার গুটাইয়া সোজা বাড়ী চলিয়া যাইবে। আমার স্ত্রী প্রশ্ন করিল হঠাৎ আজ একথা কেন? অঘটন ঘটিবার এমন কি কারণ আছে। তাকে বুঝাইতে ছেস্টা কলিাম যান বাহনে ভ্রমণে তো দূর্ঘটনা লেগৈই আছে, এরূপ ভ্রমণ সর্বদা নিরাপদ হয়না। রেল মোটর ইত্যাদির দুর্ঘটনা তো নতুন কিছু নয়। সে কিছুতেই বুঝতে চায়না, প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে এবং বলে যে, মটর ও জীব ইত্যাদিতে হারদম ই-তো ভ্রমণ করা হইতেছে, অঘটনের কথা আগোতো কোন দিন উঠে নাই। দুর্ঘটনা কোন ক্ষেত্রে হইলেও, ইহা এবার ঘটিতে পারে এরূপ সন্দেহ এবং টাকা আনিয়া হাতে দিয়া তার পরের ব্রবস’া কি কারিতে হইবে তাহার উপদেশ দেওয়া, এটা নেহায়েত নতুন। সুতরাং এর কি কারণ আছে তাহাকে জানিতেই হইবে। অগত্যা তাহাকে স্বপ্নের কাথা কুলিয়া বলিলাম। সে তখন বকলিল ভ্রমনই তাহা হইলে বন্ধ করিতে হইবে সেই দিন টুরে যাওয়া হইবেনা। টুরে না গেরৌ মরণের সমসয়ের এক মিনিট এদিক ওদিক হইবেনা একটু তাহাকে বুঝাইবার চেষ্টা করিলাম; সে বুঝিবেন না। ছেলেেেময়েদের আমার পিছনে লাগিয়ে দিল। অনন্যোপায় হইয়া কাজমী সাহেবকে সেইদিন সাতক্ষীরা ডাক বাংলায় গিয়অ অঅমা রজন্য অপেক্ষা করিতে অনুরোধ করিলাম যাতে পরের দিন গিয়া তথায় আমি তাহার সাক্ষাৎ পাই। পরের দিন যাত্রা করিলাম। আমার স্ত্রী জীপের ড্রাইভারকে আমার স্বপ্নের কথা বর্ণনা করিয়া সর্তকতার সহিত গাড়ী চালাইবার জন্য অনুরোধ করিলেন, সাতক্ষীরা নিরাপদেই পৌছিলাম। তথায় তদনত্ম কাজ সমাধা করিয়া সর্তকতার সহিত গাড়ী চালাইবার জন্য অনুরোধ করিলেন, সাতক্ষীরা নিরাপদেই পৌছিলাম। তথায় তদনত্ম কাজ সমাধা করিয়া কলারোয়া থানার অফিসের দিকে রওয়ানা হইবার সময় জাকমী সাহেব চাইলেন, আমরা দুজনে একই গাড়ীতে আলাপ আলোচনা করিতে করিতে যাই। আমি আমরা উভয়ের একই গাড়ীতে ভ্রমণ এড়াইবার জন্র, আমার কয়েক মিনিট দেরী হইবে বলিয়া তাহাকে কিছুক্ষণ আগেই রওয়ানা করাইয়া দিলাম। পরে কলারোয়া থানার কাজ শেস হইলে কাজমী সাহেব আমাকে তাহার গাড়ীতে যাইবার জন্য অনুরোধ করিয়া তাহার গাড়ীতে উঠিলেন। কিন’ হঠাৎ যেন তাহার গাড়ী বিকল হইয়া গেল, কোন মতেই ষ্টার্ট নিল না। প্রায় ঘন্টা খানেক চেষ্টা করিয়াও তিনি বিফল হইলেন। গাড়ী কোন মতেই নড়িল না। এভাবে তাহাকে ওখানে ফেলিয়া আসা চরম অভদ্রতা হইবে বিধায় বাধ্য হইয়া তাহাকেও আমার গাড়ীতে উঠাইতে হইল। কাজমী সাহেব নিজে ড্রাইভ করিতে চাহিলেন। ড্রাইভিং এ তার হাত পাকাই ছিল। তবুও যৌবনের গতি চঞ্জলতার মাদকতায় বেপরোয়া জোরে গাড়ী চালাইলে দুর্ঘটনাকে টানিয়া আনা হইবে, এ অঅশংকায় আমি তাহাকে বারণ করিতে লাগিলাম। কিন’ তিনি নাছোড়বান্দা, এ দেখিয়া ড্রাইভার তাহাকে স্বপ্নের কথা খুলিয়া বলিল। এইবার তিনি বিরত হইলেন বটে, বুঝাই গেল যে আমাদের সংস্কারের হেতুর যৌকতিকতায় তিনি বিশ্বাস স’াপন করিতে পারেন নাই। কলোরোয়া হইতে যশোহর পর্যনত্ম আসিয়া আমার আরও ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করিলাম। কাজমীসাহেবের ড্রাইভার তাহার জীপ গাড়ীটি নিয়অ আসিয়া পৌছিতে পারিল না। আবার একই গাড়ীতে খুলনার দিকে রওনা হইলাম। এবার কাজমী সাহেব বলিলেন, “হক সাহেব ততক্ষণে বোধ হয় আপনার স্বপ্নের বিপদ কাটিয়া গিয়াছে। আমি উত্তরে বলিলাম, “পথ এখনও ৪০ মাইলের মত বাকী আছে। তিনি আর জোর করিলেন না। যশোহর টাউন ছাড়িয়া ৫/৭ মাইল অঅসিতেই দেখিলাম আমাদের অঅগে আগে রাশি রাশি ধুলা উড়াইয়া একখানা ট্রাক গাড়ী চলিয়াছে। আমাদের গাড়ীর হর্ণটি ঐ জায়গায় আসিয়াই নষ্ট হইয়া গেল। কোনশব্দই হয়না ট্রাকের পিছন ভাগেও কোন লোক ছিল না যে ড্রাইভারকে জানাইয়অ দিবে যে, আমরা তার পিছনে ধুলা খাইতেছি। সুতরাং ট্রাকখানা আমাদের জন্য পথ ছাড়িতেছে না। আমাদের ড্রাইভার স্বপ্নের বৃত্তানত্ম স্মরণ করিয়া ট্রাক গাড়ীটাকে অতিক্রম করিবার কোন চেষ্টাই করিতেছে না, অথচ ধুলা বেশী চিল যে ট্রাকের পিছনে গাড়ী চালাইয়া যাওয়া শুধু বিরক্তিকর নয়, যথেষ্ট কষ্টদাযক এবং অস্বাস’্যকর ও ছিল। আমাদের ড্রাইভারকে অবশেষে বলতেই হলো যে রাসত্মা যথেষ্ট প্রশসত্ম পাওয়া গেলে, সে যেন পাশ কাটিয়া ট্রাকখানা অীতক্রম করিয়া যায়। কিছুদূর যাওয়ার পর বেশ প্রশসত্ম পার্শ্ব পাওয়া গেল এবং আমাদের ড্রাইভার ডান পাশ দিয়া গাড়ীর গতি বাড়াইয়া দিল। কিন’ অমাাদের গাড়ী ট্রাকখানার বনেট বরাবর যাইতেই দেখি আমাদের গাড়ীর সামনে রাসত্মায় এক প্রশসত্ম ও গভীর কাটা খাদ। গাড়ীর বেগ তীব্রই ছিল ফলে ধপ করিয়া গাড়ী পড়িয়া ধাক্কা খাইল এবং এক লাফ দিল। আমার বুকে বেশ শক পাইলাম এবং ষ্টিয়ারিং হইতে ড্রাইভারে রহাত ছুটিয়া গেল। কিন’ লাফ দিয়া উঠিবার সময় গাড়ী নিজে নিজেই বাম দিকে মোড় নিয়া রাসত্মার উপরই উঠিল। দৈবাৎ যদি গাড়ীটি ডান দিকে মোড় নিত এবং ডান পাশে রাসত্মার নায়ান জুলির খাদে পড়িত আমাদের আর রক্ষা ছিল না। গাড়ীর দুএকটি অংশ বাকিয়অ গেল বিশেষ করে টি,সি, রডটি অল।প এবং তার সিপ্রং একটি বাকা হইয়া গেল, গাড়ীটা সম্পূর্ণ অচল হইল না। আমাদের অবস’া দেখিয়া ট্রাক ড্রাইভার থামিয়া গিয়াছিল। কাজমী সাহেব নামিয়অ তাহাকে বকিতে আরম্ভ করিলেন। আমি তাহাকে ফিরাইয়া আনিলাম এবং বলিলাম “যা অদৃষ্টের লিখন ছিল তাহাই ঘটিয়া গেল প্রাণে বাচিয়া গিয়াছি এই যথেষ্ট। তিনি বলিলে হা আপনার স্বপ্ন সত্য হইয়াছে। আমার আর বুঝিতে বাকী রহিল না যে হযরত আকদসের সুপারিশে বাবাজান কেবলা আমার জীবনের চর পরিবতৃণ করিয়া দিয়াছেন এবং এ যাত্রা রক্ষা পেলাম।
১৩। হযরত আক্দস ও বাবা ভান্ডারী কেবলার জীবন চরিত্র প্রণেতা মৌলানা সৈয়দ আবদুস সালাম ইছাপুরী সাহেবের বর্ণনা।
একবার বাবা ভান্ডারী কেবলা মওলানা ইছাপুরীর চাচা ফারুখ আহমদ সাব রেজিষ্ট্রার সাহেবের অফিসে পালংকের উপর প্রায় মাসাধিক কাল অতিবাহিত করেন। সেইখানে প্রতিদিন বহু লোক তাহার খেদমতে হাজির হইত। রাতদিন বাড়ীতে লোকের ভীড় জমিয়া থাকিত। সর্বদা গানবাদ্য হাল্কা অজদ মাহফিল চলিত পিকরের মজলিশে সাধারণত কেবল মাইজভান্ডার দরবারের মুরিদানই উপসি’ত থাকিত। ইহাতে সাধারণ লোকেরা যোগদান করিত না। স’ানীয় আলেমগণ ঐ রূপ জিকিরের মজলিশ করা নাজায়েজ বলিয়অ প্রচার করিতে লাগিল ইহাতে সর্ব সাধারনের মধ্যে একটু চাঞ্চল্য সৃষ্টি হইল বাবা ভান্ডারী কেবলার সঙ্গে মৌলানা আমিনুল হক মাইজভান্ডারী প্রকাশ ছোট মৌলানা সাহেব, মৌলানা আবদুল গণি কাঞ্চনপুরী এবং আহলা নিবাসী মৌলানা আছদ আলী প্রমুখ প্রসিদ্ধ আলেমগণ ও ছিলেন। তাঁহারা রূপ হাল্কা ও জিকির জায়েজ বলিতেন এবং নিজেরাও করিতেন। তখন এক রাতে কয়েকজন আলেম বহু বিরুদ্ধবাদী লোক লইয়া মাইজভান্ডারী তারিকা পন’ী মওলানাগণের সহিত তকৃ করিতে আসিল। ছোট মওলানা সাহেব ও অন্যান্য মুরিদগণ পার্শ্বেও চৌচালা গৃহে ছিলেন সেইখানে বিপক্ষের মৌলানা আবদুস সাহেরগণ সগদলবলে প্রবশ করিয়া ছোট মওলানা সাহেবের সহিত তর্ক আরম্ভ করিল। এই সময়ে যাহারা বাবা ভান্ডারী কেবলার খেদমতে ছিল তাহার ও তর্ব শুলিবার জন্য যাইতে চাহিলে বাব ভান্ডারী কেবলা বলিলেন বাচা একটু পাখা হেলাও। তাই তিনি পাখা করিতে লাগেলেন। অল্পক্ষণের মধ্যে বাবা ভান্ডারী কেবলার চেহারা মোবারক সন্ধ্যাকালীন অস-ায়মান সমূর্যেও মত লোহিত বর্ণ ধারণ করিল তাঁহার দুই নয়ন হইতে যেন অগ্নি স্ফুলিঙ্গ বাহির হইতে এই হাল দেখিয় তিনি ভয়ে জড়সড় হইয়া অতি জোওে পাখা হেলাইতেছিলেন। ঐ দিকে মৌলভী সাহেবদের তর্ক ক্রমর্শ বৃদ্ধি পাইয়া ঝগড়ায় পরিণত হইল। কারণ গোড়া মৌলভী সাহেবগন ক্রোধের বশীভুত হইয়া তর্কের নিয়মাবলী ভুলিয়া পড়িয়অছে। তাহারা যুক্তি প্রমাণের ধার ধারে না নিজেরা বদ্ধমুল ধারণার বিপরীত কিছু কেহ কোরআন দিয়া প্রমাণা করিলেও তাহা তাহারা না মানিয়া উহার রিরুদ্ধে জেহাদেও নামে লড়িতে প্রস-ত হয়। বিপক্ষীয় জনৈক মৌলভী তর্ক করিতে করিতে অবশেষে রাগে অসি’ও হইয়া ক্রুদ্ধস্বরে চেঁচাইয়া উঠিল। মাইজভান্ডারী মুরীদগণ বেদায়াতহী মোশরেক কাফের তাহদের স্ত্রী তালাক হইয়াছে। ইত্যাদি অকথ্য প্রলাপ আরম্ভ করিল। ছোট মওলানা সাহেব ইহা শুনিয়া বাবা ভান্ডারীর সম্মুখে আসিয়া অভিমান স্বরে কাঁদিয়া বলিলেন, আমাদেও উপর এই অত্যাচার হইতেছে আর আপনি বসিয়া তামাসা দেখিতেছেন ইহা শুনা মাত্র বাবা ভান্ডারী কেবলা সিংহের মত গজন করিয়া ঘরের সিড়ির উপর আসিয়া দাঁড়াইলেন, মস-ক মোবারক হেলাইয়া বজ্য নিনাদে হক, হক, হম, বলিয়া এবং সকলের অজদ আরম্ভ হইল। তাহাদেও হক হক আওয়াজে ও পায়ের গুম্ গুম্ শব্দে সারা গ্রাম কাঁপিতে লাগিল। লোককারণ্য আর জনাব বাবা বান্ডারী কেবলা দক্ষিণমুখী হইয়া দাঁড়াইয় আছেনর। ত৭াহার সূর্য কান- মণি সদূশ বদন মোবারকের উপর পুণ শশধরের কিরণ পতিত হইয়া অপূর্ব সৌন্দর্য ধারণ করিয়াছে। তাহার মস-ক সঞ্চালনের সঙ্গে আকর্ণ লম্বিত মসৃণ কেশরাশি ঈষৎ হেলিয়া দুলিয়া যেন নৃত্য করিতেছে। তদ সঙ্গে সপক্ষের ও বিপক্ষের শত শত লোক তাঁহার দিকে তাকাইয়া হক হক আওয়াজ করিয়া অজদ করিতেছে। নানপুর নিবাসী মৌলভী আবুল ফজল প্রকাশ কালা মিয়া ডাক্তার অজদরত ভক্তগণের ঈমাম স্বরূপ সকলের সম্মখের কাতাওে ছিলেন। তিনি আল্লাহু আকবর আকবর বলিয়া সিজদায় পতিত হইলে তাহার পাছেন সব লোক উচ্চস্বও আেল্লাহু আকবর বলিয়া দাঁড়াইয়া অজদ আরম্ভ করিল। ইতিমধ্যে বিরুদ্ধবাদী মৌলভীগণ অন্য কে কোন দিকে পালাইল উহার পাত্তা রহিল না্ বিরুদ্ধবাদী মৌলভীদের অন্য তম সদস্য মৌলভী আবদুল লতীফ প্রকাশ মৌলভী বাচা সাহেবও এই হাল্কায় যোগদান করেন্ অতপর যে কেহ ময়দানে আসিতে লাগিল তাহার অজদ আরম্ভ হইল। পটিয়া থানা নিবাসী ডাকতার কমল কাপ্ত নামক হিন্দু ব্রাক্ষণ সেই স’ানে এক ঘরে থাকিতেন। তিনি এই অপূর্ব দৃশ্য দেখিয়া ভয়ে কামড়ার দরজা বন্ধ করিয়া দিলেন। সেইখানেই তাহার অজদ আরম্ভ হইলা্ ইহা দেখিয়া সমাগত হিন্দুগণ বলিতে লাগিল পালা ও পালাও । ফকির সাহের মক্কা চালান দিয়াছেন। এইখানে যে থধাকিবে তাহার এই অবস’া ঘটিবে মৌলানা আবদুস ছালাম ইছাপুরী সাহেব বাবা ভান্ডারী কেবলাকে পাখা করিতেছিলেন তাহার কলবেও গুরু গুরু শব্দ হইতে ছিল। তাহার চাচা সাব রেজিষ্ট্রার সাহেব ঘরের এক কোনে চেয়াওে বসিয়াছিলেন সেইখানে তাঁহার ও অজদ হয়। অতঃপর বাবা ভান্ডারী কেবলা মৃদুগতিতে নিজ আসনে গিয়া বসিলেন এবং মৌলানা আবদুস ছালাম ইছাপুরীকে আদেশ করিলেন বাচা একটু তামাক সাজাও। তিনি তাড়াতাড়ি তামাক সাজাইয়া দিলেন বাবা ভান্ডারী কেবলা কিছুক্ষণ তামাক সেবন করিয়া হো হো করিয়া হাসিয়অ আপাদমস-কে চাদও আবৃত করিয়া শয়ন করিলেন ঐ দিকে হাল্কা অজদ থামিয়া গেল। ঐ দিনের পর হইতে বাবা বান্ডারী কেবলা যেই বাড়ীতেই যাইতেন সেইখানে ছেমা, হাল্কা ও অজদের মাইফিল হইতে লাগিল। প্রকাশ থাকে যে, এর পূর্বে হযরত আকদসের সম্মুখে এবয় বাবকা ভান্ডারীর সামনে খাছ মুরিদগণই কেবল ছেমা, হাল্কা ও অজদের মাহফিল করিতেন। এই ঘটনার পর হইতেই ভক্ত সাধারণের মধ্যে ও ছেমা হাল্কা এবং অজদ মাইফিলের প্রচলন হইল।
১৪. কুমিল্লা জিলার অন-র্গত কদমতলী গ্রাম নিবচাসী দেওয়ান মৌলভী আবুল কাসেম মুহাম্মদ ইয়াসিন শাহের বণনাঃ
আমি একবার দেশ হইতে আটজন লোকসহ রওয়ানা করিয়া বারিয়া ঢালার নিকটস’ ষ্টেশনে রেলগাড়ী হইতে অবতরণ করি। বারিয়া ঢালার পাথে মাইজভান্ডার শরীফের দিকে যাত্রা করিলাম। কিছুদুর অগ্রসর হওয়ার পর দেখিতে পাইলাম প্রায় পাঁচশত হনুমান পথের উপর লাফালাফি করিয়া ক্রীড়া করিতেছে। ইহা দেখিয়অ আমরা একটু ভীত হইলাম। এমন সময় বাবা ভান্ডারী কেবালার কৃপায় একটা গায়েবী কালাম প্রাপ্ত হইলাম এবং তিনি আদেশ কলিলেন তুমি উহা বলা আমি সেই পবিত্র কামাম পাঠ করার সাথে সাথেই হনুমান দল সেজদায় পড়িয়া আসিলাম। তখন ও হনুমান দল সেজদায় পড়িয়া থাকে। তখন আর একটি কালাম প্রাপ্ত হইলাম। উহা পাঠ করা মাত্রই হনুমানগুলি জঙ্গলে পলাইয়া গেল।
১৫। রংপুর জিলার অন-র্গত লালমাই নিবাসী বসিরুদ্দিন ফকিরের (প্রকাশ রংপুরী) বর্ণনাঃ-
আমি পাটের ব্যবসায়ী ছিলাম। একবার জ্বও আেক্রান- হইয়া অত্যন- দুবর্ল হইয়া পড়ি। এমন অবস’ায় একদিন দ্বিপ্রহরে বন্ধ করিয়া জানালার পাশে বসিয়া নানা বিষয়ে চিন-া করিতেছিলাম। হঠাৎ জানালার পার্শ্বে আসিয়া এক সুপুরুষে অতি মিষ্টি ভাষায় আমার সিকট এক গ্লাস পানি চাহিলেন। তাহাকে জবাবে বলিলাম, “উঠিতে পারিতেছিনা। তবও তিনি আবার পানি চাহিলেন। অগত্যা অতি কষ্টে উঠিয়া ত’াহাকে এক গ্লাস পানিস দিলাম। তিনি ইহা দেখিয়া বলিলেন যে, থাক জল পান করিব না। তোমার পরিশ্রমের পারিতোষিক একটি বস- দিতেছি ইহা গ্রহন কর বলিয়া হস- প্রসারিত করিলেন। আমি হাত বাড়াইয়া সেই বস-টি লইতে উদ্যত হইরৈ তাহা মাটিতে পড়িয়া অদৃশ্য হইয়া যায়। তখন তিনি বলিলেন যে, তুমি এ জিনিশটি বহু কষ্টের পর আবার ফিরিয়া পাইবে। এই বলিযয়া তিনি অদৃশ্য হইয়া যান। আমি কয়েক দিনের মধ্যে আরোগ্য লাভ করিলাম। অতঃপর সেই মহাপুরুষের সন্ধানে কুচবিহার, আসাম, জয়ন-ী ডিগবয় ইত্যাদি স’ান ঘুরিয়া ফিলিয়া ভগ্ন হৃদয়ে বাড়ী ফিরিয়া আসিলাম। তারপর সেই একদিন মনকিরচর গ্রামের রহিমুদ্দিনের নিকট্ একখানা গানের বইয়ে মাইজভান্ডার শরীপের বর্ণনা দেখিতে পাই। তথায় নোয়াখালী নিবাসী জনৈক দর্জিও সাক্ষাতে মাইজভান্ডার শরীফে যাওয়ার বিস-ারিত কথা জান্িয়া খোদার নামের উপর ভরসা করিয়া যাত্রা করিলাম। মাইজভান্ডার শরীফে আসিয়া পৌঁছিলাম। অত্যন- পরিতাপের বিষয়, দৈনিক হাজার হাজার লোক এইখানে আসিয়া বাবা ভান্ডারীর দর্শন লাভ করতঃ স্বীয় মনস্কাম পূর্ন করিয়া চলিয়া যায়। কিন’ আমি হতভাগ্য যখন ত’াহাকে দেখিবার জন্য হুজুরা শরীফে প্রবেশ করি, তখন ত’াহাকে পালংকের উপর দেখিরতে পাই না। আমার পরিতাপের আর সীমা রহিল না। অবশেষে এক সপ্তাহকাল পরে। তিনি দয়াপরবশ হইয়া এই অধমকে দর্শন দান করিয়া কৃতার্থ করিলেন্ ত’াহাকে দেখিবা মাত্রই চিনিতে পারিলাম। তিনি সেই মুসাফির মহাপুুেষ, যিনি কিছুকাল পূর্বে আমার বাড়ীর জানালার ধাওে দাড়াইয়া এক গ্লাস পানি চাহিয়াছিলেন। তারপর হইতে ত’াহার মুসাফির খানায় বাবুর্ছিও পদে কাজ করিয়া প্রায় ৩৫ বৎসরকাল অতিবাহিত করি।
১৬। মযমনসিংহ জিলা নিবাসী মন-ান ইউসুফ আলীর বণর্না
আমি প্রথম মহাযুদ্ধে বৃটিশ সরকারের সিপাহী দলে চাকরী গ্রহন করি। একদা দুপুর বেলায় আমরা ট্রেঞ্চে ঘুমাইতে ছিলাম। সেইখানে স্বপ্নযোগে বাবা ভান্ডারী কেবলা আমাকে বলিলেন, “ইউসুফ আলী, উঠ এবং ত্রিতলায় চলিয়া যাও, অল্পক্ষণ পর এইখানে জার্মানীর বোমা পগিড়বে। আমি ঘুম হইতে জাগিয়া দেখি আমার পাশেই বাবা ভান্ডারী দাড়াইয়া আছেন। আমি তাহাকে দেখিয়া সম্মান সুচক অভিবাদন জানাইলাম এবং বলিলাম বাবাজান ঐ ত্রিতলায় যাইতে পারিব না। ইহা শুনিয়া তিনি আমাকে জোওে টানিয়া সেই ত্রিতলায় পৌঁছাইয়া দিয়া অদৃশ্য হইয়া যান। অল্পক্ষনের মধ্যে জার্মানীর বোমা বিস্ফোরিত হইল। সেই ট্রেঞ্চের উপর। ট্রেঞ্চে অবস’ানরত সিপাহীগণ নিহত হইল।
১৭। হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলার সহোদও ভ্রাতা সৈয়দ আবদুল ওহাব সাহেবের বর্ণনাঃ-
আমি একবার বাবা ভান্ডারীর আদেশক্রমে দুইজন মস-ানকে উট কিনার জন্য দারোয়ানী মেলায় পাঠাইলাম। তারপর আমি সফওে বাহির হইয়া পড়ি। অল্পদিনের মধ্যে দারোয়ানী মেলার নিকটস’ গ্রামে দাওয়াত গ্রহন করি। সেইখানে আমার আগমন সংবাদ জানিয়া সেইমস-ানদ্বয় বিষন্ন বদনে হাজির আমাকে জানাইল যে মেলা ম্যাহিষ্টেট্র উট ক্রয়ের অনুমতি দিতেছেন না। এই সংবাদ পাওয়ার অল্পক্ষণ পরই একজন মজজুব পাগল আসিয়া জানাইয়া গেল, !মেলায় ওলাওঠা ছড়াইয়াকে। মেলার এনে-জাম ভার আপনার উপর র্অপিত হইয়াছে।” আমি সেই মজজুবের কথা শুনিয়া মেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের স্ত্রী মারাত্মকভাবে কলেরায় আক্রান- হইয়াছে। মেলার এনে-জাম ভার আপনার উপর র্অপিত হইয়াছে।” আবাসস’লে উপসি’ত হইলাম। মেলার ডাকতার হতাশ হইয়া পড়িয়াছে। কারণ মেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের সহিত পরিচিত হইয়া তাহার অনুমতিক্রমে রোগিনীকে দেখিতে যাই। হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলার হস- স্পৃষ্ট কয়েক ফোটা জল রোগিনীকে পান করাইলাম, হযরত আক্দসের পরিত্যক্ত পুরানো জুতা তাহার বক্ষের উপর রাখিয়া দিলাম। কয়েক মিনিটের মধ্যে রোগিনীর জ্ঞান ফিরিয়া আসিল। তখন সে পানি চাহিলে বাবা ভান্ডারী হস-স্পৃষ্ট আরও কয়েক ফোটা পানি পান করাইলাম। অল্পক্ষণ পরই রোগীনি বলিয়া উঠিল, বাবা আমাকে বসাইয়া দেন আমি তাহাকে বসাইয়া দিলাম। ডাক্তার আসিয়া রোগিনীর নাড়ী পরীক্ষা করিয়া, বলিল রোগিনীর বিপদসীমা অতিক্রম হইয়াছে, তখন আমি মেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে আদেশ করিলাম যে, বাবা ভান্ডারীর দরবারের জন্য একটি উট দিতে হইবে। তিনি একটি উট কিনিয়া দিলেন। আমি এই উটসহ পাক দরবারে ফিরিয়া আসিলাম।
১৮। চট্টগ্রাম জিলার পাচঁলাইশ নিবাসী মৌলভী আবদুস ছোবহান শাহেন বর্ণনাঃ-
হাটহাজারী থানার অন-র্গত বুড়িশ্চর গ্রাম নিবাসী আলা মিয়া চৌধুরী বেঙ্গুর শহরে বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। তাহার চারি খানা জাহাজ রেঙ্গুন হইতে মান্দিলী লাইনে যাতায়াত করিত পাইন্যা গাঁও নামক স’ানে তাহার অফিস ছিল। একদা দুপুর বেলায তাঁহার পায়খানার উদ্ধেগ হয়। তখন গ্রীস্মকাল ছিল। অত্যধিক গরম পড়িতেছিল তাই তিনি টিনের নির্মিত পায়খানায় না যাইয়া কিছুদুরে ঝোপের আড়ালে যাইতে ছিলেন। এমন সময় বাবা ভান্ডারী কেবলা গায়েবী আওয়াজে আদেশ করিলেন, “আলা মিয়া, সে দিকে যাইও না কাল নাগিণী ওম পাতিয়াছে।” বাবা ভান্ডারীর এই গায়েবী ডাক শুনিয়া তাঁহার সারা দেহ থর থর করিয়া কাপিতে লাগিল। তিনি পায়খানা করার কথা ভুলিয়া গিয়া অফিসের বারান্দায় দাঁড়াইয়া পুব দিকে তাকাইয়া সেই বন পথ ধরিয়া অফিসের দিকে আসিতেছিল। সেইখানে এক ভীষন কাল নাগিনী বাহির হইয়া পালের বড় মহিষটিকে দংশন করিল। তৎক্ষনাৎ মহিষটি ধরাশায়ী হইয়া নিহিত হইল। পালের অন্য মহিষ গুলি ডাক ছাড়িয়া ছুটিয়া পলায়ন করিল। তারপর রাখাল ছেলেটিাকেও দংশন করিল। সে সেইস’ানে আর্তনাদ করিয়া মৃত্যূমুখে পতিত হইল।
১৯। উপরোক্ত বর্ণনাকারীর দ্বিতীয় বর্ণনাঃ-
চট্টগ্রাম নিবাসী জনাব আবদুল বারী চৌধুরী বেঙ্গল ষ্টীমার কোম্পানীর ম্যানেজিং ডিরেক্টও ছিলেন। চট্টগ্রাম ও রেঙ্গুন ষ্টীমার লাইনে বেঙ্গল কোম্পারী ও বলুক ব্রাদার্সেও মধ্যে ভয়ানক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরম্ভ হজয়। বলুক ব্রাদার্স বিনরা টিকেটে যাত্রী বহন করিয়া বিশেষ ক্ষতিগ্রস’ হইয়া পড়ে। সেই বিদেশী কোম্পানী আবদুল বারী চৌধুরী সাহেবচকে নিধন করিবার ষড়যন্ত্র করিয়া তাহার জেরবাদী পালক পুত্রকে হাত করেন। একদা চৌধুরী সাহেব দুপুর বেলায় পানাহার করার জন্য অফিস হইতে আবাসগৃহে ফিরিয়া আসেন। খাবার তৈরীর কাজে একটু বিলম্ভ হওয়াও তিনি আরাম কেদারায় শুইয়া একটু বিশ্রাম নিতেছিলেন। ইহাতে তাহার একটু তন্দ্রার ভাব আসিয়াছিল। তখন সেই পালক পুত্র উম্মুক্ত ছুরি হাতে করিয়া তাহেক বধ করিতে উদ্যত হয়। সেই সময়ে বাবা ভান্ডার ী কেবলা গায়েরী আওয়াজে বলিলেন, “আবদুল বারী, তোম ছোতে হো, তোমকো কতল করতা হ্যায়।” চৌধুরী সাহেব বাবা ভান্ডারীর সেই গায়েবী আওয়াজ শুনিয়া চমকিয়া উঠেন এবং দেখিলেন সত্যই তাহার পালক পুত্র উম্মুক্ত ছুরি হাতে তাহার পাশে দাড়াইয়া আছে। তিনি জোর পূর্বক তাহার হাত হইতে ছুরি কাড়িয়া লন। এই ঘটনার পর তিনি তাহাকে তাড়াইয়া দেন।
২০। চট্টগ্রাম জিলার বোয়ালখালী থানার অন-র্গত কোলাগাঁও নিবাসী ফকির আলী আহমদ মিস্ত্রীর বর্ণনাঃ-
আমি প্রথম মহাযুদ্ধে জাহাজের ড্রাইবার হিসাবে বৃটিশ কোম্পানীর মিলিটারী দফতরে চাকুরী গ্রহন করিয়া বসরা যাই। একদা দুপুর বেলায় বসরা খাড়িতে জাহাজ নঙ্গর করিয়াছি। এমন সময় বাবা ভান্ডারী কেবলা গায়েবী আওয়াজে বলিলেন “আলী আহাম্মদ, কুলে উঠিয়া খেজুর বাগানে ঢুকিয়া পড়।” আমি কাল বিলম্ভ না করিয়া সহকমীগণ সহ খেজুর বাগানে পড়ি। এমন সময় জাহাজ খানার উপর জার্মানরা বোমা বিস্ফোরণ করিয়া ইহাকে চুর্ণ বিচুণৃ করিয়া দিল।
২১। কুমিল্লা জিলা অন-র্গত রাজাপুর নিবাসী জনাব মওলানা অলি উল্লাহ শাহ রাজাপুরীর বর্ণনাঃ-
হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা পূর্ব পাহাড় ভ্রমণ কালে আমি কয়েকদিন তাহার সংগে ছিলাম। একদা তিনি এক পাহাড়ের শৃঙ্গে ঊপবিষ্ট ছিলেন, তখন তিনি আমাকে আদেশ করিয়া ছিলেন “পানি লও।” পাহাড়ের পাদদেশের ছোট ছড়া হইতে পারি আনিতে ছুটিয়া গিয়াছিলাম। সেই স’ানে এক নেকড়ে বাঘ আমার দিকে শিকারে বসিয়াছিল। আমি সেই দিকে না তাকাইয়া পানি লইয়া তাহার খেদমতে হাজির হইলাম এবং আবার পারি আনিতে আদেশ করিলেন, এইভাবে ক্রমান্বয়ে তিনবার পানি আনিয়া তাহার হাত মোবারকে পারি ঢালিতে থাকি। বাবা ভান্ডারীর আদেশের মহিমাবলে সেই নেকড়ে আমার উপর আক্রমণ করিল না।
২২। চট্টগ্রাম জিলার অন-র্গত বড় উঠান নিবাসী জনাব বদরুও হক খাঁন এডভোকেট সাহেব বর্ণনা করেনঃ-
হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা দেয়াং পাহাড় ভ্রমণকালে হামিদ আলী খাঁ সাহেবের বাড়ী তশরীফ লইয়া যান। খাঁ সাহেবের ভ্রাতুস্পুত্র আজিজুর রহমান খাঁ বিবাহের উপযুক্ত হইয়াছিল। তাই আনোয়ার খানের কণিষ্ঠা শালীর সহিত তাহার বিবাহ সম্বন্ধ সি’র করার জন্য ঘটক উকিলগন তদবির করিতেছিল। আনোয়ার আলী খান এই বিবাহে সম্মত ছিলেন না। এমতাবস’ায় জনাব বাবা ভান্ডারী কেবলা হমিদ আলী খানের আন্দর বাড়ী প্রবেশ করেন । সেইখানে তিনি একখানা ধুতি কাপড় মেয়ে লোকের মত পরিধান করিয়া পুকুর হইতে এক কলসী জল উঠাইয়া তাহাদের রান্নাঘরে রাখেন। তারপর সেই কাপড় বদলাইয়া তথা হইতে তিনি প্রস’ান করেন। এরপরই আনোয়ার আলী খান সেই বিবাহে সম্মতি প্রদান করেন এবং বিবাহ কার্য সমাধা করা হয়।
২৩। চট্টগ্রাম জিলার অন-গর্ত চান্দগাঁও নিবচাসী মওলানা মুহাম্মদ আলী সাহেবের বর্ণনাঃ-
মওলানা আমিনুল হক হারবাংগিরি শাহ বাবা ভান্ডারী কেবলার বিশিষ্ট খলিফা ছিলেন। তিনি রেঙ্গুন ছফরে যাইবার জন্য বাবা ভান্ডারী কেবলার দরবারে আরজ পেশ করেন। বাবা ভান্ডারী কেবলা তাহাকে একটি মোমবাতি জ্বালাইয়া দিয়া বিদায় করেন। তার পর তিনি রেঙ্গুন সফওে যান। সেইখানে তাহার বেলায়েত জ্যোতি ছড়াইয়া পড়িল। তিনি সেইখানে কিছুকাল ধরিয়া তরিকতের প্রদীপ জ্বালাইয়া অনি-ম শয্যায় শায়িত হন। তথায় চট্টগ্রাম জিলার অন-র্গত কুলগাঁও নিবাসী মওলানা অলি আহমদ সাহেব তাহার মাজার পাকা করিয়া দেন। সেই হইতে প্রতি বছর তাহার ওরছ করা হয়।
২৪। কুমিল্লা জিলার অন-র্গত ঘিলাতলা নিবাসী মওলানা বেশারত আলী শাহ ছাহেবের বর্ণনাঃ-
তিনি কুমিল্লা মাদ্রাসায় লিখাপড়া শেষ করিয়া হিন্দুস’ান ইউপির রামপুর মাদ্রাসায় হাদীসের কালেম জামায়াতে লেখা পড়া করিতে যান। তিনি কামেল পরীক্ষায় কৃতার্থী ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম হইয়াছিলেন। তারপর রামপুর মাদ্রাসায় কিছুকাল অধ্যাপনার কাজ নির্বাহ করেন। তিনি ১৩২০ বাংলায় রামপুরে ষ্টেটের খানকাহে এনায়েতীয়া আলীয়া মোজাদ্দিদীয়ায় প্রসিদ্ধ পীর খাজা হাফেজ এনায়েত উল্লা খান (রঃ) এর হাতে নকশেবন্দীয়া এবং মোজাদ্দিদীয়া তারিকায় বায়আত গ্রহন করেন। ২৩২৪ বাংলার কথা। একদা তিনি ফয়রের নামাজ শেষ করিয়া যথারীেিত মোরাকবায় ধ্যানমগ্ন ছিলেন। এমতাবস’ায় তিনি এলহাম যোগে জ্ঞাত হইলেন মাইজভান্ডার যাওয়অর কথা। চট্টগ্রাম নিবাসী মওলানা ছফিয়ুর রহমান সাহেব তাহার সহপাঠী বন্ধু ছিলেন। মওলানা ছফিয়ুর রহমান সাহেব উক্ত এল হামের কথা শ্রবণ কলিয়া মাইজভান্ডার শরীফ সমপর্কে বিস-ারিত আলোচনা করিলেন। অতঃপর তিনি ১৩৩৫ বাংলায় মাইজভান্ডার শরীফে হাজির হইয়া হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলার ছোহবত লাভ করিয়া কৃতার্থ হন।
২৫। চট্টগ্রাম শহরের মিয়াখান নগর নিবাসী জনাব আলহাজ্ব মিয়াখান সওদাগর সাহেবের প্রথম পুত্র জনাব আলহাজ্ব ছালামত আলী খান সাহেবের বর্ণনাঃ-
তখন আমি চট্টগ্রাম সরকারী মুসলিম হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র। বার্ষিক পরীক্ষা সন্নিকট। তাই পরীক্ষায় পাশ করার জন্য দোয়াপ্রার্থী হইয়া মইজভান্ডার শরীফে যাই। তখন হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা বিদ্যমান ছিলেন। আমি তাহাকে সাধারণ ফকির মনে করিয়া তাহার কামালিয়ত (পরিপুর্ণতা) পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে আল্ কোরআনের কিছু আয়াত পাঠ করিয়া এক লোটা পানি লই এবং ইহা তাহার হাতের তালুর উপর ঢালিতে থাকে। এমন সময় তিনি এক কোশ পানি আমার চোখের দিকে ছিটাইয়া নিক্ষেপ করেন। আশ্চর্যের বিষয়, পানির বিচ্ছুরিত বিন্দু আমার চোখের উপর বিদ্যুতের আলোর ন্যায় বিচ্ছুরিত হইল। ইহা আমার চোখ ঝলসাইয়া দিল। আমি ভীত হইলাম্ অপরিণত বয়সের হেতুতে ইহার রহস্য বুঝিয়া উঠিতে পারিলাম না। তাই পানির লোটা জনৈক খাদেমের হাতে দিয়ো সরিয়া পড়িলাম। এই ঘটনার পর পাঁচ বৎসরের মধ্যে আমি আর মাইজভান্ডার শরীফ যাই নাই। তারপর আমি খাজা মঈনউদ্দিন চিশতী (রঃ) এর আদেশক্রমে আবার মাইজভান্ডার শরীফ আসি। তারপর বাবা ভান্ডারী কেবলা কবার সহচর্য লাভ করিয়া কৃতর্থি হই।
২৬। চট্টগ্রাম নিবাসী প্রাঙ্গনস প্রাদেশিক যোগাযোগ মন্ত্রী জনাব সুলতান আহমদ সাহেবের বর্ণনাঃ
তিনি ১৯৬৮ খৃষ্টাব্দে মাইজভান্ডার শরীফ জেয়ারতে যান তথায় তিনি বিশিষ্ট জনগনের সমাবেশে বলেন যে, তিনি এর পূর্বে তার পাঠ্য জীবনে। সেই সময়ে মাইজভান্ডের যাওয়ার ভাল কোন রাস-া ছিল না। তাই তাহাকে নৌকাযোগে আসিতে হইয়াছিল। তাহার নৌকা যখন মাইজভান্ডার আসিয়া টৌঁছে তখন সন্ধ্যা ঘনাইয়াছিল। তিনি ও তাহার চাচা, তাহাদেও আনিত সামগ্রী লইয়া হযরত বাবা ভান্ডরী কেবলার হুজরা শরীফে প্রবেশ করেন এবয় দোয়া প্রার্থী হন। হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা তাহার আসনে উপরিষ্ট ছিলেন। তনি িতাহার আনিত ঢাকাই কুল হইতে কয়টি গ্রহন করিয়াছিলেন। মন্ত্রী সাহেব অতি ভক্তির সহিত বলেন যে। তিনি সেই সময়ে হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলায় পবিত্র কপাল হইতে প্রভাতরাগের অনুরূপ রঙ্গিনর আলো উদ্ভাসিত হইতে দেখিয়াছিলেন। উহা তাহাকে অভিভুত করিয়াছিল। আজও সেই দৃশ্য তাহার মানসনয়নে ভাসিতেছে।
একবার বাবা ভান্ডারী কেবলা মওলানা ইছাপুরীর চাচা ফারুখ আহমদ সাব রেজিষ্ট্রার সাহেবের অফিসে পালংকের উপর প্রায় মাসাধিক কাল অতিবাহিত করেন। সেইখানে প্রতিদিন বহু লোক তাহার খেদমতে হাজির হইত। রাতদিন বাড়ীতে লোকের ভীড় জমিয়া থাকিত। সর্বদা গানবাদ্য হাল্কা অজদ মাহফিল চলিত পিকরের মজলিশে সাধারণত কেবল মাইজভান্ডার দরবারের মুরিদানই উপসি’ত থাকিত। ইহাতে সাধারণ লোকেরা যোগদান করিত না। স’ানীয় আলেমগণ ঐ রূপ জিকিরের মজলিশ করা নাজায়েজ বলিয়অ প্রচার করিতে লাগিল ইহাতে সর্ব সাধারনের মধ্যে একটু চাঞ্চল্য সৃষ্টি হইল বাবা ভান্ডারী কেবলার সঙ্গে মৌলানা আমিনুল হক মাইজভান্ডারী প্রকাশ ছোট মৌলানা সাহেব, মৌলানা আবদুল গণি কাঞ্চনপুরী এবং আহলা নিবাসী মৌলানা আছদ আলী প্রমুখ প্রসিদ্ধ আলেমগণ ও ছিলেন। তাঁহারা রূপ হাল্কা ও জিকির জায়েজ বলিতেন এবং নিজেরাও করিতেন। তখন এক রাতে কয়েকজন আলেম বহু বিরুদ্ধবাদী লোক লইয়া মাইজভান্ডারী তারিকা পন’ী মওলানাগণের সহিত তকৃ করিতে আসিল। ছোট মওলানা সাহেব ও অন্যান্য মুরিদগণ পার্শ্বেও চৌচালা গৃহে ছিলেন সেইখানে বিপক্ষের মৌলানা আবদুস সাহেরগণ সগদলবলে প্রবশ করিয়া ছোট মওলানা সাহেবের সহিত তর্ক আরম্ভ করিল। এই সময়ে যাহারা বাবা ভান্ডারী কেবলার খেদমতে ছিল তাহার ও তর্ব শুলিবার জন্য যাইতে চাহিলে বাব ভান্ডারী কেবলা বলিলেন বাচা একটু পাখা হেলাও। তাই তিনি পাখা করিতে লাগেলেন। অল্পক্ষণের মধ্যে বাবা ভান্ডারী কেবলার চেহারা মোবারক সন্ধ্যাকালীন অস-ায়মান সমূর্যেও মত লোহিত বর্ণ ধারণ করিল তাঁহার দুই নয়ন হইতে যেন অগ্নি স্ফুলিঙ্গ বাহির হইতে এই হাল দেখিয় তিনি ভয়ে জড়সড় হইয়া অতি জোওে পাখা হেলাইতেছিলেন। ঐ দিকে মৌলভী সাহেবদের তর্ক ক্রমর্শ বৃদ্ধি পাইয়া ঝগড়ায় পরিণত হইল। কারণ গোড়া মৌলভী সাহেবগন ক্রোধের বশীভুত হইয়া তর্কের নিয়মাবলী ভুলিয়া পড়িয়অছে। তাহারা যুক্তি প্রমাণের ধার ধারে না নিজেরা বদ্ধমুল ধারণার বিপরীত কিছু কেহ কোরআন দিয়া প্রমাণা করিলেও তাহা তাহারা না মানিয়া উহার রিরুদ্ধে জেহাদেও নামে লড়িতে প্রস-ত হয়। বিপক্ষীয় জনৈক মৌলভী তর্ক করিতে করিতে অবশেষে রাগে অসি’ও হইয়া ক্রুদ্ধস্বরে চেঁচাইয়া উঠিল। মাইজভান্ডারী মুরীদগণ বেদায়াতহী মোশরেক কাফের তাহদের স্ত্রী তালাক হইয়াছে। ইত্যাদি অকথ্য প্রলাপ আরম্ভ করিল। ছোট মওলানা সাহেব ইহা শুনিয়া বাবা ভান্ডারীর সম্মুখে আসিয়া অভিমান স্বরে কাঁদিয়া বলিলেন, আমাদেও উপর এই অত্যাচার হইতেছে আর আপনি বসিয়া তামাসা দেখিতেছেন ইহা শুনা মাত্র বাবা ভান্ডারী কেবলা সিংহের মত গজন করিয়া ঘরের সিড়ির উপর আসিয়া দাঁড়াইলেন, মস-ক মোবারক হেলাইয়া বজ্য নিনাদে হক, হক, হম, বলিয়া এবং সকলের অজদ আরম্ভ হইল। তাহাদেও হক হক আওয়াজে ও পায়ের গুম্ গুম্ শব্দে সারা গ্রাম কাঁপিতে লাগিল। লোককারণ্য আর জনাব বাবা বান্ডারী কেবলা দক্ষিণমুখী হইয়া দাঁড়াইয় আছেনর। ত৭াহার সূর্য কান- মণি সদূশ বদন মোবারকের উপর পুণ শশধরের কিরণ পতিত হইয়া অপূর্ব সৌন্দর্য ধারণ করিয়াছে। তাহার মস-ক সঞ্চালনের সঙ্গে আকর্ণ লম্বিত মসৃণ কেশরাশি ঈষৎ হেলিয়া দুলিয়া যেন নৃত্য করিতেছে। তদ সঙ্গে সপক্ষের ও বিপক্ষের শত শত লোক তাঁহার দিকে তাকাইয়া হক হক আওয়াজ করিয়া অজদ করিতেছে। নানপুর নিবাসী মৌলভী আবুল ফজল প্রকাশ কালা মিয়া ডাক্তার অজদরত ভক্তগণের ঈমাম স্বরূপ সকলের সম্মখের কাতাওে ছিলেন। তিনি আল্লাহু আকবর আকবর বলিয়া সিজদায় পতিত হইলে তাহার পাছেন সব লোক উচ্চস্বও আেল্লাহু আকবর বলিয়া দাঁড়াইয়া অজদ আরম্ভ করিল। ইতিমধ্যে বিরুদ্ধবাদী মৌলভীগণ অন্য কে কোন দিকে পালাইল উহার পাত্তা রহিল না্ বিরুদ্ধবাদী মৌলভীদের অন্য তম সদস্য মৌলভী আবদুল লতীফ প্রকাশ মৌলভী বাচা সাহেবও এই হাল্কায় যোগদান করেন্ অতপর যে কেহ ময়দানে আসিতে লাগিল তাহার অজদ আরম্ভ হইল। পটিয়া থানা নিবাসী ডাকতার কমল কাপ্ত নামক হিন্দু ব্রাক্ষণ সেই স’ানে এক ঘরে থাকিতেন। তিনি এই অপূর্ব দৃশ্য দেখিয়া ভয়ে কামড়ার দরজা বন্ধ করিয়া দিলেন। সেইখানেই তাহার অজদ আরম্ভ হইলা্ ইহা দেখিয়া সমাগত হিন্দুগণ বলিতে লাগিল পালা ও পালাও । ফকির সাহের মক্কা চালান দিয়াছেন। এইখানে যে থধাকিবে তাহার এই অবস’া ঘটিবে মৌলানা আবদুস ছালাম ইছাপুরী সাহেব বাবা ভান্ডারী কেবলাকে পাখা করিতেছিলেন তাহার কলবেও গুরু গুরু শব্দ হইতে ছিল। তাহার চাচা সাব রেজিষ্ট্রার সাহেব ঘরের এক কোনে চেয়াওে বসিয়াছিলেন সেইখানে তাঁহার ও অজদ হয়। অতঃপর বাবা ভান্ডারী কেবলা মৃদুগতিতে নিজ আসনে গিয়া বসিলেন এবং মৌলানা আবদুস ছালাম ইছাপুরীকে আদেশ করিলেন বাচা একটু তামাক সাজাও। তিনি তাড়াতাড়ি তামাক সাজাইয়া দিলেন বাবা ভান্ডারী কেবলা কিছুক্ষণ তামাক সেবন করিয়া হো হো করিয়া হাসিয়অ আপাদমস-কে চাদও আবৃত করিয়া শয়ন করিলেন ঐ দিকে হাল্কা অজদ থামিয়া গেল। ঐ দিনের পর হইতে বাবা বান্ডারী কেবলা যেই বাড়ীতেই যাইতেন সেইখানে ছেমা, হাল্কা ও অজদের মাইফিল হইতে লাগিল। প্রকাশ থাকে যে, এর পূর্বে হযরত আকদসের সম্মুখে এবয় বাবকা ভান্ডারীর সামনে খাছ মুরিদগণই কেবল ছেমা, হাল্কা ও অজদের মাহফিল করিতেন। এই ঘটনার পর হইতেই ভক্ত সাধারণের মধ্যে ও ছেমা হাল্কা এবং অজদ মাইফিলের প্রচলন হইল।
১৪. কুমিল্লা জিলার অন-র্গত কদমতলী গ্রাম নিবচাসী দেওয়ান মৌলভী আবুল কাসেম মুহাম্মদ ইয়াসিন শাহের বণনাঃ
আমি একবার দেশ হইতে আটজন লোকসহ রওয়ানা করিয়া বারিয়া ঢালার নিকটস’ ষ্টেশনে রেলগাড়ী হইতে অবতরণ করি। বারিয়া ঢালার পাথে মাইজভান্ডার শরীফের দিকে যাত্রা করিলাম। কিছুদুর অগ্রসর হওয়ার পর দেখিতে পাইলাম প্রায় পাঁচশত হনুমান পথের উপর লাফালাফি করিয়া ক্রীড়া করিতেছে। ইহা দেখিয়অ আমরা একটু ভীত হইলাম। এমন সময় বাবা ভান্ডারী কেবালার কৃপায় একটা গায়েবী কালাম প্রাপ্ত হইলাম এবং তিনি আদেশ কলিলেন তুমি উহা বলা আমি সেই পবিত্র কামাম পাঠ করার সাথে সাথেই হনুমান দল সেজদায় পড়িয়া আসিলাম। তখন ও হনুমান দল সেজদায় পড়িয়া থাকে। তখন আর একটি কালাম প্রাপ্ত হইলাম। উহা পাঠ করা মাত্রই হনুমানগুলি জঙ্গলে পলাইয়া গেল।
১৫। রংপুর জিলার অন-র্গত লালমাই নিবাসী বসিরুদ্দিন ফকিরের (প্রকাশ রংপুরী) বর্ণনাঃ-
আমি পাটের ব্যবসায়ী ছিলাম। একবার জ্বও আেক্রান- হইয়া অত্যন- দুবর্ল হইয়া পড়ি। এমন অবস’ায় একদিন দ্বিপ্রহরে বন্ধ করিয়া জানালার পাশে বসিয়া নানা বিষয়ে চিন-া করিতেছিলাম। হঠাৎ জানালার পার্শ্বে আসিয়া এক সুপুরুষে অতি মিষ্টি ভাষায় আমার সিকট এক গ্লাস পানি চাহিলেন। তাহাকে জবাবে বলিলাম, “উঠিতে পারিতেছিনা। তবও তিনি আবার পানি চাহিলেন। অগত্যা অতি কষ্টে উঠিয়া ত’াহাকে এক গ্লাস পানিস দিলাম। তিনি ইহা দেখিয়া বলিলেন যে, থাক জল পান করিব না। তোমার পরিশ্রমের পারিতোষিক একটি বস- দিতেছি ইহা গ্রহন কর বলিয়া হস- প্রসারিত করিলেন। আমি হাত বাড়াইয়া সেই বস-টি লইতে উদ্যত হইরৈ তাহা মাটিতে পড়িয়া অদৃশ্য হইয়া যায়। তখন তিনি বলিলেন যে, তুমি এ জিনিশটি বহু কষ্টের পর আবার ফিরিয়া পাইবে। এই বলিযয়া তিনি অদৃশ্য হইয়া যান। আমি কয়েক দিনের মধ্যে আরোগ্য লাভ করিলাম। অতঃপর সেই মহাপুরুষের সন্ধানে কুচবিহার, আসাম, জয়ন-ী ডিগবয় ইত্যাদি স’ান ঘুরিয়া ফিলিয়া ভগ্ন হৃদয়ে বাড়ী ফিরিয়া আসিলাম। তারপর সেই একদিন মনকিরচর গ্রামের রহিমুদ্দিনের নিকট্ একখানা গানের বইয়ে মাইজভান্ডার শরীপের বর্ণনা দেখিতে পাই। তথায় নোয়াখালী নিবাসী জনৈক দর্জিও সাক্ষাতে মাইজভান্ডার শরীফে যাওয়ার বিস-ারিত কথা জান্িয়া খোদার নামের উপর ভরসা করিয়া যাত্রা করিলাম। মাইজভান্ডার শরীফে আসিয়া পৌঁছিলাম। অত্যন- পরিতাপের বিষয়, দৈনিক হাজার হাজার লোক এইখানে আসিয়া বাবা ভান্ডারীর দর্শন লাভ করতঃ স্বীয় মনস্কাম পূর্ন করিয়া চলিয়া যায়। কিন’ আমি হতভাগ্য যখন ত’াহাকে দেখিবার জন্য হুজুরা শরীফে প্রবেশ করি, তখন ত’াহাকে পালংকের উপর দেখিরতে পাই না। আমার পরিতাপের আর সীমা রহিল না। অবশেষে এক সপ্তাহকাল পরে। তিনি দয়াপরবশ হইয়া এই অধমকে দর্শন দান করিয়া কৃতার্থ করিলেন্ ত’াহাকে দেখিবা মাত্রই চিনিতে পারিলাম। তিনি সেই মুসাফির মহাপুুেষ, যিনি কিছুকাল পূর্বে আমার বাড়ীর জানালার ধাওে দাড়াইয়া এক গ্লাস পানি চাহিয়াছিলেন। তারপর হইতে ত’াহার মুসাফির খানায় বাবুর্ছিও পদে কাজ করিয়া প্রায় ৩৫ বৎসরকাল অতিবাহিত করি।
১৬। মযমনসিংহ জিলা নিবাসী মন-ান ইউসুফ আলীর বণর্না
আমি প্রথম মহাযুদ্ধে বৃটিশ সরকারের সিপাহী দলে চাকরী গ্রহন করি। একদা দুপুর বেলায় আমরা ট্রেঞ্চে ঘুমাইতে ছিলাম। সেইখানে স্বপ্নযোগে বাবা ভান্ডারী কেবলা আমাকে বলিলেন, “ইউসুফ আলী, উঠ এবং ত্রিতলায় চলিয়া যাও, অল্পক্ষণ পর এইখানে জার্মানীর বোমা পগিড়বে। আমি ঘুম হইতে জাগিয়া দেখি আমার পাশেই বাবা ভান্ডারী দাড়াইয়া আছেন। আমি তাহাকে দেখিয়া সম্মান সুচক অভিবাদন জানাইলাম এবং বলিলাম বাবাজান ঐ ত্রিতলায় যাইতে পারিব না। ইহা শুনিয়া তিনি আমাকে জোওে টানিয়া সেই ত্রিতলায় পৌঁছাইয়া দিয়া অদৃশ্য হইয়া যান। অল্পক্ষনের মধ্যে জার্মানীর বোমা বিস্ফোরিত হইল। সেই ট্রেঞ্চের উপর। ট্রেঞ্চে অবস’ানরত সিপাহীগণ নিহত হইল।
১৭। হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলার সহোদও ভ্রাতা সৈয়দ আবদুল ওহাব সাহেবের বর্ণনাঃ-
আমি একবার বাবা ভান্ডারীর আদেশক্রমে দুইজন মস-ানকে উট কিনার জন্য দারোয়ানী মেলায় পাঠাইলাম। তারপর আমি সফওে বাহির হইয়া পড়ি। অল্পদিনের মধ্যে দারোয়ানী মেলার নিকটস’ গ্রামে দাওয়াত গ্রহন করি। সেইখানে আমার আগমন সংবাদ জানিয়া সেইমস-ানদ্বয় বিষন্ন বদনে হাজির আমাকে জানাইল যে মেলা ম্যাহিষ্টেট্র উট ক্রয়ের অনুমতি দিতেছেন না। এই সংবাদ পাওয়ার অল্পক্ষণ পরই একজন মজজুব পাগল আসিয়া জানাইয়া গেল, !মেলায় ওলাওঠা ছড়াইয়াকে। মেলার এনে-জাম ভার আপনার উপর র্অপিত হইয়াছে।” আমি সেই মজজুবের কথা শুনিয়া মেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের স্ত্রী মারাত্মকভাবে কলেরায় আক্রান- হইয়াছে। মেলার এনে-জাম ভার আপনার উপর র্অপিত হইয়াছে।” আবাসস’লে উপসি’ত হইলাম। মেলার ডাকতার হতাশ হইয়া পড়িয়াছে। কারণ মেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের সহিত পরিচিত হইয়া তাহার অনুমতিক্রমে রোগিনীকে দেখিতে যাই। হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলার হস- স্পৃষ্ট কয়েক ফোটা জল রোগিনীকে পান করাইলাম, হযরত আক্দসের পরিত্যক্ত পুরানো জুতা তাহার বক্ষের উপর রাখিয়া দিলাম। কয়েক মিনিটের মধ্যে রোগিনীর জ্ঞান ফিরিয়া আসিল। তখন সে পানি চাহিলে বাবা ভান্ডারী হস-স্পৃষ্ট আরও কয়েক ফোটা পানি পান করাইলাম। অল্পক্ষণ পরই রোগীনি বলিয়া উঠিল, বাবা আমাকে বসাইয়া দেন আমি তাহাকে বসাইয়া দিলাম। ডাক্তার আসিয়া রোগিনীর নাড়ী পরীক্ষা করিয়া, বলিল রোগিনীর বিপদসীমা অতিক্রম হইয়াছে, তখন আমি মেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে আদেশ করিলাম যে, বাবা ভান্ডারীর দরবারের জন্য একটি উট দিতে হইবে। তিনি একটি উট কিনিয়া দিলেন। আমি এই উটসহ পাক দরবারে ফিরিয়া আসিলাম।
১৮। চট্টগ্রাম জিলার পাচঁলাইশ নিবাসী মৌলভী আবদুস ছোবহান শাহেন বর্ণনাঃ-
হাটহাজারী থানার অন-র্গত বুড়িশ্চর গ্রাম নিবাসী আলা মিয়া চৌধুরী বেঙ্গুর শহরে বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। তাহার চারি খানা জাহাজ রেঙ্গুন হইতে মান্দিলী লাইনে যাতায়াত করিত পাইন্যা গাঁও নামক স’ানে তাহার অফিস ছিল। একদা দুপুর বেলায তাঁহার পায়খানার উদ্ধেগ হয়। তখন গ্রীস্মকাল ছিল। অত্যধিক গরম পড়িতেছিল তাই তিনি টিনের নির্মিত পায়খানায় না যাইয়া কিছুদুরে ঝোপের আড়ালে যাইতে ছিলেন। এমন সময় বাবা ভান্ডারী কেবলা গায়েবী আওয়াজে আদেশ করিলেন, “আলা মিয়া, সে দিকে যাইও না কাল নাগিণী ওম পাতিয়াছে।” বাবা ভান্ডারীর এই গায়েবী ডাক শুনিয়া তাঁহার সারা দেহ থর থর করিয়া কাপিতে লাগিল। তিনি পায়খানা করার কথা ভুলিয়া গিয়া অফিসের বারান্দায় দাঁড়াইয়া পুব দিকে তাকাইয়া সেই বন পথ ধরিয়া অফিসের দিকে আসিতেছিল। সেইখানে এক ভীষন কাল নাগিনী বাহির হইয়া পালের বড় মহিষটিকে দংশন করিল। তৎক্ষনাৎ মহিষটি ধরাশায়ী হইয়া নিহিত হইল। পালের অন্য মহিষ গুলি ডাক ছাড়িয়া ছুটিয়া পলায়ন করিল। তারপর রাখাল ছেলেটিাকেও দংশন করিল। সে সেইস’ানে আর্তনাদ করিয়া মৃত্যূমুখে পতিত হইল।
১৯। উপরোক্ত বর্ণনাকারীর দ্বিতীয় বর্ণনাঃ-
চট্টগ্রাম নিবাসী জনাব আবদুল বারী চৌধুরী বেঙ্গল ষ্টীমার কোম্পানীর ম্যানেজিং ডিরেক্টও ছিলেন। চট্টগ্রাম ও রেঙ্গুন ষ্টীমার লাইনে বেঙ্গল কোম্পারী ও বলুক ব্রাদার্সেও মধ্যে ভয়ানক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরম্ভ হজয়। বলুক ব্রাদার্স বিনরা টিকেটে যাত্রী বহন করিয়া বিশেষ ক্ষতিগ্রস’ হইয়া পড়ে। সেই বিদেশী কোম্পানী আবদুল বারী চৌধুরী সাহেবচকে নিধন করিবার ষড়যন্ত্র করিয়া তাহার জেরবাদী পালক পুত্রকে হাত করেন। একদা চৌধুরী সাহেব দুপুর বেলায় পানাহার করার জন্য অফিস হইতে আবাসগৃহে ফিরিয়া আসেন। খাবার তৈরীর কাজে একটু বিলম্ভ হওয়াও তিনি আরাম কেদারায় শুইয়া একটু বিশ্রাম নিতেছিলেন। ইহাতে তাহার একটু তন্দ্রার ভাব আসিয়াছিল। তখন সেই পালক পুত্র উম্মুক্ত ছুরি হাতে করিয়া তাহেক বধ করিতে উদ্যত হয়। সেই সময়ে বাবা ভান্ডার ী কেবলা গায়েরী আওয়াজে বলিলেন, “আবদুল বারী, তোম ছোতে হো, তোমকো কতল করতা হ্যায়।” চৌধুরী সাহেব বাবা ভান্ডারীর সেই গায়েবী আওয়াজ শুনিয়া চমকিয়া উঠেন এবং দেখিলেন সত্যই তাহার পালক পুত্র উম্মুক্ত ছুরি হাতে তাহার পাশে দাড়াইয়া আছে। তিনি জোর পূর্বক তাহার হাত হইতে ছুরি কাড়িয়া লন। এই ঘটনার পর তিনি তাহাকে তাড়াইয়া দেন।
২০। চট্টগ্রাম জিলার বোয়ালখালী থানার অন-র্গত কোলাগাঁও নিবাসী ফকির আলী আহমদ মিস্ত্রীর বর্ণনাঃ-
আমি প্রথম মহাযুদ্ধে জাহাজের ড্রাইবার হিসাবে বৃটিশ কোম্পানীর মিলিটারী দফতরে চাকুরী গ্রহন করিয়া বসরা যাই। একদা দুপুর বেলায় বসরা খাড়িতে জাহাজ নঙ্গর করিয়াছি। এমন সময় বাবা ভান্ডারী কেবলা গায়েবী আওয়াজে বলিলেন “আলী আহাম্মদ, কুলে উঠিয়া খেজুর বাগানে ঢুকিয়া পড়।” আমি কাল বিলম্ভ না করিয়া সহকমীগণ সহ খেজুর বাগানে পড়ি। এমন সময় জাহাজ খানার উপর জার্মানরা বোমা বিস্ফোরণ করিয়া ইহাকে চুর্ণ বিচুণৃ করিয়া দিল।
২১। কুমিল্লা জিলা অন-র্গত রাজাপুর নিবাসী জনাব মওলানা অলি উল্লাহ শাহ রাজাপুরীর বর্ণনাঃ-
হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা পূর্ব পাহাড় ভ্রমণ কালে আমি কয়েকদিন তাহার সংগে ছিলাম। একদা তিনি এক পাহাড়ের শৃঙ্গে ঊপবিষ্ট ছিলেন, তখন তিনি আমাকে আদেশ করিয়া ছিলেন “পানি লও।” পাহাড়ের পাদদেশের ছোট ছড়া হইতে পারি আনিতে ছুটিয়া গিয়াছিলাম। সেই স’ানে এক নেকড়ে বাঘ আমার দিকে শিকারে বসিয়াছিল। আমি সেই দিকে না তাকাইয়া পানি লইয়া তাহার খেদমতে হাজির হইলাম এবং আবার পারি আনিতে আদেশ করিলেন, এইভাবে ক্রমান্বয়ে তিনবার পানি আনিয়া তাহার হাত মোবারকে পারি ঢালিতে থাকি। বাবা ভান্ডারীর আদেশের মহিমাবলে সেই নেকড়ে আমার উপর আক্রমণ করিল না।
২২। চট্টগ্রাম জিলার অন-র্গত বড় উঠান নিবাসী জনাব বদরুও হক খাঁন এডভোকেট সাহেব বর্ণনা করেনঃ-
হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা দেয়াং পাহাড় ভ্রমণকালে হামিদ আলী খাঁ সাহেবের বাড়ী তশরীফ লইয়া যান। খাঁ সাহেবের ভ্রাতুস্পুত্র আজিজুর রহমান খাঁ বিবাহের উপযুক্ত হইয়াছিল। তাই আনোয়ার খানের কণিষ্ঠা শালীর সহিত তাহার বিবাহ সম্বন্ধ সি’র করার জন্য ঘটক উকিলগন তদবির করিতেছিল। আনোয়ার আলী খান এই বিবাহে সম্মত ছিলেন না। এমতাবস’ায় জনাব বাবা ভান্ডারী কেবলা হমিদ আলী খানের আন্দর বাড়ী প্রবেশ করেন । সেইখানে তিনি একখানা ধুতি কাপড় মেয়ে লোকের মত পরিধান করিয়া পুকুর হইতে এক কলসী জল উঠাইয়া তাহাদের রান্নাঘরে রাখেন। তারপর সেই কাপড় বদলাইয়া তথা হইতে তিনি প্রস’ান করেন। এরপরই আনোয়ার আলী খান সেই বিবাহে সম্মতি প্রদান করেন এবং বিবাহ কার্য সমাধা করা হয়।
২৩। চট্টগ্রাম জিলার অন-গর্ত চান্দগাঁও নিবচাসী মওলানা মুহাম্মদ আলী সাহেবের বর্ণনাঃ-
মওলানা আমিনুল হক হারবাংগিরি শাহ বাবা ভান্ডারী কেবলার বিশিষ্ট খলিফা ছিলেন। তিনি রেঙ্গুন ছফরে যাইবার জন্য বাবা ভান্ডারী কেবলার দরবারে আরজ পেশ করেন। বাবা ভান্ডারী কেবলা তাহাকে একটি মোমবাতি জ্বালাইয়া দিয়া বিদায় করেন। তার পর তিনি রেঙ্গুন সফওে যান। সেইখানে তাহার বেলায়েত জ্যোতি ছড়াইয়া পড়িল। তিনি সেইখানে কিছুকাল ধরিয়া তরিকতের প্রদীপ জ্বালাইয়া অনি-ম শয্যায় শায়িত হন। তথায় চট্টগ্রাম জিলার অন-র্গত কুলগাঁও নিবাসী মওলানা অলি আহমদ সাহেব তাহার মাজার পাকা করিয়া দেন। সেই হইতে প্রতি বছর তাহার ওরছ করা হয়।
২৪। কুমিল্লা জিলার অন-র্গত ঘিলাতলা নিবাসী মওলানা বেশারত আলী শাহ ছাহেবের বর্ণনাঃ-
তিনি কুমিল্লা মাদ্রাসায় লিখাপড়া শেষ করিয়া হিন্দুস’ান ইউপির রামপুর মাদ্রাসায় হাদীসের কালেম জামায়াতে লেখা পড়া করিতে যান। তিনি কামেল পরীক্ষায় কৃতার্থী ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম হইয়াছিলেন। তারপর রামপুর মাদ্রাসায় কিছুকাল অধ্যাপনার কাজ নির্বাহ করেন। তিনি ১৩২০ বাংলায় রামপুরে ষ্টেটের খানকাহে এনায়েতীয়া আলীয়া মোজাদ্দিদীয়ায় প্রসিদ্ধ পীর খাজা হাফেজ এনায়েত উল্লা খান (রঃ) এর হাতে নকশেবন্দীয়া এবং মোজাদ্দিদীয়া তারিকায় বায়আত গ্রহন করেন। ২৩২৪ বাংলার কথা। একদা তিনি ফয়রের নামাজ শেষ করিয়া যথারীেিত মোরাকবায় ধ্যানমগ্ন ছিলেন। এমতাবস’ায় তিনি এলহাম যোগে জ্ঞাত হইলেন মাইজভান্ডার যাওয়অর কথা। চট্টগ্রাম নিবাসী মওলানা ছফিয়ুর রহমান সাহেব তাহার সহপাঠী বন্ধু ছিলেন। মওলানা ছফিয়ুর রহমান সাহেব উক্ত এল হামের কথা শ্রবণ কলিয়া মাইজভান্ডার শরীফ সমপর্কে বিস-ারিত আলোচনা করিলেন। অতঃপর তিনি ১৩৩৫ বাংলায় মাইজভান্ডার শরীফে হাজির হইয়া হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলার ছোহবত লাভ করিয়া কৃতার্থ হন।
২৫। চট্টগ্রাম শহরের মিয়াখান নগর নিবাসী জনাব আলহাজ্ব মিয়াখান সওদাগর সাহেবের প্রথম পুত্র জনাব আলহাজ্ব ছালামত আলী খান সাহেবের বর্ণনাঃ-
তখন আমি চট্টগ্রাম সরকারী মুসলিম হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র। বার্ষিক পরীক্ষা সন্নিকট। তাই পরীক্ষায় পাশ করার জন্য দোয়াপ্রার্থী হইয়া মইজভান্ডার শরীফে যাই। তখন হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা বিদ্যমান ছিলেন। আমি তাহাকে সাধারণ ফকির মনে করিয়া তাহার কামালিয়ত (পরিপুর্ণতা) পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে আল্ কোরআনের কিছু আয়াত পাঠ করিয়া এক লোটা পানি লই এবং ইহা তাহার হাতের তালুর উপর ঢালিতে থাকে। এমন সময় তিনি এক কোশ পানি আমার চোখের দিকে ছিটাইয়া নিক্ষেপ করেন। আশ্চর্যের বিষয়, পানির বিচ্ছুরিত বিন্দু আমার চোখের উপর বিদ্যুতের আলোর ন্যায় বিচ্ছুরিত হইল। ইহা আমার চোখ ঝলসাইয়া দিল। আমি ভীত হইলাম্ অপরিণত বয়সের হেতুতে ইহার রহস্য বুঝিয়া উঠিতে পারিলাম না। তাই পানির লোটা জনৈক খাদেমের হাতে দিয়ো সরিয়া পড়িলাম। এই ঘটনার পর পাঁচ বৎসরের মধ্যে আমি আর মাইজভান্ডার শরীফ যাই নাই। তারপর আমি খাজা মঈনউদ্দিন চিশতী (রঃ) এর আদেশক্রমে আবার মাইজভান্ডার শরীফ আসি। তারপর বাবা ভান্ডারী কেবলা কবার সহচর্য লাভ করিয়া কৃতর্থি হই।
২৬। চট্টগ্রাম নিবাসী প্রাঙ্গনস প্রাদেশিক যোগাযোগ মন্ত্রী জনাব সুলতান আহমদ সাহেবের বর্ণনাঃ
তিনি ১৯৬৮ খৃষ্টাব্দে মাইজভান্ডার শরীফ জেয়ারতে যান তথায় তিনি বিশিষ্ট জনগনের সমাবেশে বলেন যে, তিনি এর পূর্বে তার পাঠ্য জীবনে। সেই সময়ে মাইজভান্ডের যাওয়ার ভাল কোন রাস-া ছিল না। তাই তাহাকে নৌকাযোগে আসিতে হইয়াছিল। তাহার নৌকা যখন মাইজভান্ডার আসিয়া টৌঁছে তখন সন্ধ্যা ঘনাইয়াছিল। তিনি ও তাহার চাচা, তাহাদেও আনিত সামগ্রী লইয়া হযরত বাবা ভান্ডরী কেবলার হুজরা শরীফে প্রবেশ করেন এবয় দোয়া প্রার্থী হন। হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা তাহার আসনে উপরিষ্ট ছিলেন। তনি িতাহার আনিত ঢাকাই কুল হইতে কয়টি গ্রহন করিয়াছিলেন। মন্ত্রী সাহেব অতি ভক্তির সহিত বলেন যে। তিনি সেই সময়ে হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলায় পবিত্র কপাল হইতে প্রভাতরাগের অনুরূপ রঙ্গিনর আলো উদ্ভাসিত হইতে দেখিয়াছিলেন। উহা তাহাকে অভিভুত করিয়াছিল। আজও সেই দৃশ্য তাহার মানসনয়নে ভাসিতেছে।
২৭)খলিফায়ে গাউছুল আযম মাইজভাণ্ডারী মাও. আজিজুল হক শেরে বাংলা রহ. বর্ণনা করেন: আমি যখন গাউছুল আযম মাওলায়ে রহমান বাবাভান্ডারী ক.'র রওজা মোবারকে উপস্থিত হলাম আমি স্বকর্ণে শুনতে পেলাম গাউছুল আযম মাওলায়ে রহমান বাবাভান্ডারী ক.'র রওজা শরীফ হতে সুমধুর কন্ঠে পবিত্র কুর'আন তেলাওয়াতের ধ্বনি ভেসে আসছে! আমি বরযখ করে দেখলাম আমার মাওলায় রহমান উনার পবিত্র রওজা পাকে বসে সর্বক্ষণ পবিত্র কুর'আন তেলাওয়াত মগ্ন থাকেন, আমি গোলাম বিনয়ের স্বরে বললাম, আসসালাম আলাইকুম ইয়া গাউছুল আযম মাওলায়ে রহমান বাবাভান্ডারী, আমার প্রতি দয়া করুন এবং সুন্নিয়তের প্রচার-প্রসারে আপনি আমায় সাহায্য করুন। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার মাওলায়ে রহমান আমার সালামের জবাব দিয়ে উনার পবিত্র হস্ত মোবারক রওজা শরীফ হতে প্রসারিত করেন এবং সুমধুর কন্ঠে গায়েবী আওয়াজে বলেন, "যা বেটা, সুন্নিয়াত ক্যা খেদমত কার না" অতঃপর আমি গোলাম তাঁর হস্ত মোবারক তাজিম করে চুম্বনপূর্ব মনোবাঞ্ছা পূরণ করি...!!! (তথ্য সূত্র: দরবারে গাউছুল আযম মাইজভাণ্ডারী জীবিনী ও কারামত পৃষ্ঠা -১৩৭।)
আল্লামা গাজী আজিজুল হক শেরে বাংলা রঃ কে মৃতপ্রায় হতে পূন:জীবন ও ফয়েজ দান:-
মৃত্যুর কবল হতে উদ্ধার: ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা ছৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল কাদেরী (ক:) ছাএ জীবনে তাঁর শ্রদ্ধেয় পিতা হজরত মাওলানা ছৈয়দ আব্দুল হামিদ (ক:) যিনি হজরত আকদাসের ছোহবত প্রাপ্ত ছিলেন।পিতার সাথে মাইজভান্ডার শরীফে বাবাভান্ডারী (ক:) এর খেদমতে হাজিরা দিতে গেলে বাবাভান্ডারী (ক:) মুখমন্ডলের চাঁদর সরিয়ে তাঁর দিকে তাকিয়ে হাসতেন ও তিনি অভিভূত হয়ে বাবাভান্ডারী (ক:) চেহারা মোবারকের দিকে তাকিয়ে থাকতেন।তাছাড়া ১৯৩৭ সনে হজরত বাবাভান্ডারী (ক:) বেছাল প্রাপ্ত হলে তাঁর পিতার সাথে তিনি ও জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করেছিলেন কিন্তু পরবর্তিতে তার সুন্নিয়তের ঝান্ডা উড্ডয়নের সময় মাইজভান্ডারী ত্বরিকার কার্যক্রম সম্পর্কে বিরক্তি প্রকাশসহ প্রকটভাবে সমালোছনা করতেন।ত্বরিকার অনুসারীদের কর্মকান্ডে বিশেষ করে ছেমা বা আধ্যাতিক সঙ্গীগ সম্পর্কে তিনি ঘোর বিরোধী ছিলেন। অথছ ১৯৫১ ইং সনের ২রা জুন ২৩ শে শাবান ১৩৭০ হি:১৮ই জ্যৈষ্ঠ তারিখে রোজ সনিবার খন্দকিয়া গ্রামের ওহাবি নজদীদের ষড়যন্ত্রে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মিলাদ মাহফিলের দাওয়াতের নাম দিয়ে হায়েনার ন্যায় তাঁর উপর ঝাপিয়ে পড়ে।তদ্বীয় দেহ মোবারককে আঘাতে ঝাঝরা করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।অতপর অবচেতন ও বেহুশ অবস্থায় থাকার ৮ ঘন্টা পর প্রান বায়ু ফিরে আসলে তদস্থলে ছিলেন পটিয়া থানার শিকলবাহা নিবাসী মাওলানা আবদুল গফুর (ক:) ও অন্যান্যদেরকে জিঞ্জেস করেছিলেন "আমি এখন কোথায়" এখান থেকে মাইজভান্ডার শরীফ কত দুরে? আমাকে মাইজভান্ডার নিয়ে চল"তখন তারা বলেন আপনিতো ঐ দরবারের ঘোর বিরোধী।এখন কেন সেখানে যেতে ব্যাকুল হয়েছেন? তাঁর প্রশ্নের উওরে তিনি বলেছিলেন আমি এতদিন ভূলের মধ্যে ছিলাম।উক্ত দরবারে যে মহান দুই জন গাউছুল আজম শায়িত আছেন তা আবেগে বশীভূত হয়ে ভূলেই গিয়েছিলাম।আমার প্রান ফিরিয়ে দিতে দয়াল নবী (দ:) উনারদের দুইজন গাউছুল আজমকে সাথে নিয়ে এসেছিলেন।আমাকে নতুন জীবন দান করার সাখে সাথে উনাদেরকে পরিছয় করিয়ে দিয়েছিলেন যে ইনি গাউছুল আজম আহম্মাদ উল্লাহ এবং ইনি হজরত বাবাভান্ডারী (ক:) উভয়কে পরিচয় করার সময় কালাম করেছিলেন-ইনি হচ্ছেন হজরত গাউছুল আজম মাওলানা ছৈয়দ গোলামুর রহমান (ক:) এর পর পরই বাবাভান্ডারী (ক:) তাঁর নুরানী পিঠ মোবারক দেখায়ে বলেছিলেন "আজিজুল হক" তুমি আমার কি অবস্থা করেছ দেখ।তিনি তাঁর পিঠ মোবারকে দেখলেন নুরানী দেহের পিঠে অসংখ্য রক্তাক্ত আঁচড়।তিনি বলেন-যা দেখে লজ্জিত হয়ে আমি বাবাভান্ডারীর (ক:) কাছে খমা ছেয়ে নিলাম।কথা হচ্ছে আমি তাঁর ত্বরিকার ফতোয়া দলিল দিয়ে যে তাঁর আশেক ভক্তের অন্তরে আঘাৎ করেছি তাতে তিনি নিজে আঘাৎ প্রাপ্ত হয়েছেন।তাই রক্তাক্ত পিঠ দেখালেন সে হতে উক্ত দরবারের গোলামিতে শরীক হওয়া আমার আবশ্যিক কর্তব্য।উনাদের সন্তষ্টি অর্জন করতে পারলেই আমার মিশন সাপল্য মন্ডিত হবে।কারণ উনারাই তো আহলে বায়তে রাসুল (দ:) হাটহাজারী থানার উওর মার্দাশার মাওলানা ছৈয়দ আহসানুজ্জামান শেরে বাংলার (ক:) বর্ণনা সুএে তথ্য দেন যে,বাবাভান্ডারী (ক:) রুহানী ভাবে একাধিকবার তাকে হাসপাতালে দেখতে গেছেন।প্রতিবার তিনি বলেছেন আমার ছেলে ভালো হয়ে যাবে।এর পর হতে তাঁর গ্যান ফিরে আসে তিনি চিকিৎসার মাধ্যমে ধীরে ধীরে সুস্থতা লাভ করেন।এ ঘটনার পর হতে শেরে বাংলা (ক:) শএুদলের সাথে কোন তর্ক যুদ্ধে অবতির্ন হওয়ার পূর্বে হজরত বাবাভান্ডারী (ক:) কে বার বার স্বরন করতেন।যার রুহানী বেলায়তী শক্তির উছিলায় তিনি শত্রুপখ্যের বড় বড় আলেমদেরকে ধরাশায়ী করে ফেলতেন।যাতে স্পষ্ট হয় যে এ দেশে ছুন্নিয়ত প্রতিষ্ঠায় মাঠে ময়দানে শেরে বাংলার (ক:) সর্বসময় বাবাভান্ডারী (ক:) এর অদৃশ্য সাহায্য ছিল।
আউলাদে রাসূল ইউছুপে ছানি জামালে মোস্তফা ইউছুফ আলাইহি সাল্লাম রুপে মাওলানা হযরত গাউছুল আযম মাওলানা শাহ্-ছুফি সৈয়দ গোলামুর রহমান আল্ হাসানী আল্ মাইজভাণ্ডারী-প্রকাশ-(বাবা-ভাণ্ডারী-(কঃ)-কেবলা কাবার ফয়েজ প্রাপ্ত খলিফা দের নাম,,,,
#বিঃদ্রঃ->এইখানে ক্রমিক নাম্বার অনুসারে একের ওপর অপরের উচ্চ মর্যাদা নির্ণয় নহে!!শুধু মাত্র গণনা ও পড়ার সুবিধার জন্য ক্রমিক নাম্বার দিয়ে লেখা হয়েছে
🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱
১/👉 মৌলানা আব্দুছ ছালাম ইছাপুরী মাইজভাণ্ডারী (কঃ),,ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম,,
২/👉 মৌলানা আবদুল লতিফ্ শাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ),,#চন্দনাইশ_দরবার_শরীফ,,চন্দনাইশ চট্টগ্রাম,,,
৩/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি রজব আলী মাইজভাণ্ডারী (কঃ),, সাকরাপুর কুমিল্লা,,,
৪/👉 মৌলানা হাফেজ নজীর আহমদ মাইজভাণ্ডারী (কঃ),, পাঠানটুলি ডবলমুরিং চট্টগ্রাম,,,
৫/👉 মৌলানা ছৈয়দুর রহমান মাইজভাণ্ডারী (কঃ),, খিতাপচর বোয়ালখালী চট্টগ্রাম,,,
৫/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি বসারত আলী ছাহেব মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ঘীলাতলা বুড়িচং কুমিল্লা,,,
৬/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি ওয়ালী উল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) কুলগাঁও পাচঁলাইশ চট্টগ্রাম,,,
৭/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি আবুল খায়ের মাইজভাণ্ডারী (কঃ) সাতগাছিয়া পটিয়া চট্টগ্রাম,,,
৮/👉 মৌলানা শেখ আহমদুল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ফরহাদাবাদ হাটহাজারী চট্টগ্রাম,,,,
৯/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি আব্দুল কুদ্দুস মাইজভাণ্ডারী (কঃ) আকুবদন্ডী পটিয়া চট্টগ্রাম,,
১০/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি আবু ছৈয়দ হায়দার মাইজভাণ্ডারী (কঃ) পাগার টুঙ্গি ঢাকা,,
১১/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি জমির উদ্দিন লতিফ সিকদার মাইজভাণ্ডারী (কঃ) চিওরা কুমিল্লা,,
১২/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি ওবাইদুল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ভোলা বরিশাল,,
১৩/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি মাছউদুল করিম মাইজভাণ্ডারী (কঃ) কালারমারছড়া মহেশখালী চট্টগ্রাম,,
১৪/👉 মৌলানা হাফেজ ফজলুর রহমান মাইজভাণ্ডারী (কঃ) সাতবাড়িয়া চন্দনাইশ চট্টগ্রাম,,
১৫/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি মোহাম্মদ আলা ছাহেব মাইজভাণ্ডারী (কঃ) চান্দগাঁও,চট্টগ্রাম,,,
১৬/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি সিরাজুল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) নোয়াপাড়া রাঙ্গুনিয়া,চট্টগ্রাম,,
১৭/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি নুরুল্লাহ্ বকস্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) নোয়াখালী,,, চ
১৮/👉 মৌলানা সুলতান আহমদ শাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) চরফরিদ,কর্ণফুলি,চট্টগ্রাম,,
১৯/👉 মৌলানা ছৈয়দ কামাল মাইজভাণ্ডারী (কঃ) মইশফরম,নোয়াপাড়া,চট্টগ্রাম,,,
২০/👉 মৌলানা আবদুল মান্নান ফকির মাইজভাণ্ডারী (কঃ) প্রঃ মনুমুন্সি) কল্যাণ নগর,নোয়াখালী,,,
২১/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি আব্দুল হামিদ মুন্সী মাইজভাণ্ডারী (কঃ) কাঞ্চনপুর,ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম,,,
২২/👉 মৌলানা মোজাহেরুল ইসলাম মাইজভাণ্ডারী (কঃ) আহল্লা দরবার,চট্টগ্রাম,,,
২৩/👉 মৌলানা ছৈয়দ আলী শাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) চিতোশী,কুমিল্লা,,,
২৪/👉 মৌলানা নুরুল ইসলাম মাইজভাণ্ডারী (কঃ) বোয়ালখালী চট্টগ্রাম,,,,
২৫/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি সরাফত উল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) লক্ষীপুর,ফেনী,নোয়াখালী,,
মৌলানা শাহ্ছুফি আছু ফকির মাইজভাণ্ডারী (কঃ) রাঙ্গামাটি, পার্বত্য,চট্টগ্রাম,,,
২৬/👉 মৌলানা আবদুল লতিফ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) মতলব কুমিল্লা,,,
২৭/👉 মৌলানা ইয়াসিন ফকির মাইজভাণ্ডারী (কঃ) মতলব কুমিল্লা,,,
২৮/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি এয়াকুব মাইজভাণ্ডারী (কঃ) হরিণকাটার গাজী, নোয়াখালী,,
২৯/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি মনির উদ্দিন মুন্সি মাইজভাণ্ডারী (কঃ) সন্দ্বীপ চট্টগ্রাম,,,
৩০/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি পচন মিয়া ফকির মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম,,,,
৩১/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি ইছলাম মাষ্টার মাইজভাণ্ডারী (কঃ) হায়দার গঞ্জ, নোয়াখালী,,
৩২/👉 মৌলানা মোহাম্মদ শরীফ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) শিকলবাহা পটিয়া চট্টগ্রাম,,,
৩৩/👉 মৌলানা গোলাম মোস্তফা ফকির মাইজভাণ্ডারী (কঃ) নোয়াখালী,,,
৩৪/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি মতিউর রহমান মাইজভাণ্ডারী (কঃ) খিতাপচর নোয়াখালী,,,
৩৫/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি চান্দমিয়া মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ভৈরব, কিশোরগঞ্জ,,,
৩৬/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি পাঞ্জাবী হাফেজ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) কেওয়ার ঢাকা,,
৩৭/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি আব্দুস ছোবাহান মাইজভাণ্ডারী (কঃ) রুপচন্দ্র পুর,ময়মনসিংহ,,,
৩৮/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি বছির শাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) হালিশহর, চট্টগ্রাম,,
৩৯/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি ইসমাইল তালুকদার মাইজভাণ্ডারী (কঃ) রাম গোপালদি, বরিশাল,,
৪০/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি সৈয়দুল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) করণকাটি,বরিশাল,,,
৪১/👉 মৌলানা বছির উদ্দিন ফকির মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ছিনুই,রংপুর,,,
৪২/👉 মৌলানা আবুল ফজল (কালামিয়া ডাক্তার) মাইজভাণ্ডারী (কঃ) নানুপুর, চট্টগ্রাম,,,
৪৩/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি আব্দুস সমদ পন্ডিত মাইজভাণ্ডারী (কঃ) হাজীগঞ্জ, কুমিল্লা,,
৪৪/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি হামিদুল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) পাচাই, লাকসাম, কুমিল্লা,,,
৪৫/👉 মৌলানা শাহ্ছুফি সৈয়দ মোছাহেব উদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) সাহ্পুরী-কুমিল্লা,,,
৪৬/👉 মৌলভী তরফ আলী মাইজভাণ্ডারী (কঃ) টেজসিন ফকির ঈদগাহ্, ডবলমুরিং চট্টগ্রাম,,
৪৭/👉 মৌলভী ইউছুপ আলী মাইজভাণ্ডারী (কঃ) খিতাপচর, বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম,,
৪৮/👉 মৌলভী আকরাম শাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ) মনছুরাবাদ,ডবলমুরিং, চট্টগ্রাম,,,
৪৯/👉 মৌলভী আবদুল আজিজ (গাট্রি ফকির) মাইজভাণ্ডারী (কঃ) মনছুরাবাদ, চট্টগ্রাম,,,
৫০/👉 মৌলভী আবুল খায়ের মাষ্টার মাইজভাণ্ডারী (কঃ) গোমদন্ডী,বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম,,,
#বিঃদ্রঃ এছাড়া গাউছুল আযম বাবা-ভাণ্ডারী (কঃ)র আরো অসংখ্য ফয়েজপ্রাপ্ত খলিফা আছেন তাদের নাম আগামী পোষ্টে দেওয়া হবে,,সংলিপ্ত আকারে পড়ার সুবিধার্তে অল্পসংখ্যক খলিফাদের নাম দেওয়া হল,,
হযরত গাউছুল আযম গোলামুর রহমান প্রকাশ (বাবা ভান্ডারী) (কঃ) শানে
খলিফায়ে গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী হযরত আজিজুল হক শেরে বাংলার কঃ রচিত কছিদাঃ
১।মারহাবা ছদ মারহাবা ছদ মারহাবা ছদ মারহাবা
বাহারে ছানী গাউছুল আযম শাহ গোলামুর রহমানো মা
অর্থঃ শত শত অভিনন্দন ২য় গাউছুল আযম আমাদের শাহ গোলামুর রহমানের জন্য
২।বা খেতাবে বাবাজান কেবলা লা মশহুরে শোদা
দাঁ উ গোলে আজ বাগে আঁ শাহ আহমদ উল্লাহ বেগুমা
অর্থঃ জেনে রাখ তিনি বাবাজান কেবলা উপাধিতে প্রসিদ্ধ এবং নিশ্চয় তিনি বাগে আহমদীর ফুল
৩।বোয়ে আ গোলে কর্দা শায়দা ছায়েরে আহলে জাঁহা
গাস্তে মাইজভান্ডার আ জাগা ছজিদা গাহে আশেকা
অর্থঃ সে ফুলের খোশবুতে জগতবাসী মাতোয়ারা যার কারণে মাইজভান্ডার শরীফ খোদাপ্রেমিকদের সেজদার স্থানে পরিণত হয়েছে।
৪।বুদে উ মজ্জুবে ছালেক দরমেয়ানে আউলিয়া
নুরে চশমে আহমদ উল্লাহ গাউছুল আযম মারহাবা
অর্থঃ আউলিয়া কেরামদের মধ্যে তিনি ছিলেন মজ্জুবে ছালেক তাঁকে অভিনন্দন।যেহেতু তিনি গাউছুল আযম আহমদ উল্লাহর কঃ নয়নমণি।
৫।ইউছুফে ছানী বেলাশক বুদদর আখের জামা
মাজহারে নূরে খোদা উরা বেদানী বেগুমাঁ
অর্থঃ নিঃসন্দেহে আখেরী জামানায় তিনি ছানীয়ে ইউছুফ আঃ জেনে রাখ।তিনি খোদায়ী নূরের প্রকাশস্থল।
৬।নামে নাজেম গরতু খাহী শেরে বাঙ্গালা বেদা
মুনকেরানে আউলিয়া ছাইফে ইরা বেগুমাঁ
অর্থঃ যদি কবিতা লেখকের পরিচয় জানতে চাও তাহলে শেরে বাংলা বলে জান।যিনি দুশমনে আউলিয়াদের বিরুদ্ধে তেজস্বী তরবারী স্বরূপ।
(দেওয়ানে আজিজ)
Comments
Post a Comment