তাসাউফ এর ইলম।


প্রাচ্যবাদী বৃত্তি ইউরোপীয় ভাষাতে সূফীবাদ শব্দটি চালু করেছে। সেই সময়ের আগে, ইউরোপীয় ভ্রমণকারীরা ওরিয়েন্টাল ডার্শিসের মাধ্যমে বৈদেশিক ধর্মীয় আচরণের বিবরণ এবং ফকিরস নামে বিবিধ ভারতীয় সন্ন্যাসীদের হিসাব ফিরিয়ে নিয়েছিল, তাদের সামাজিক সংগঠন ইউরোপিয়ান ঔপনিবেশিকতার জন্য একটি সমস্যা উত্থাপন করার পরেই এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল।ফার্সি সুফি কবিতা আবিষ্কার, প্রেম এবং ওয়াইনের রেফারেন্স দিয়ে ভরা, ইউরোপীয়দেরকে স্বতন্ত্র ধর্মের মুফাসসির হিসেবে কল্পনা করতে হয়েছিল যারা ইসলামের সাথে সামান্যই ছিল। শব্দটির "-বাদ" গঠন (মূলত "সুফি-ইসম") প্রকাশ করে যে "সুফিবাদ" আদর্শ ও বিশ্বাস ব্যবস্থার আলোকসম্পাত ক্যাটালগের একটি অংশ এবং প্রায়ই এটি ব্যক্তিগত রহস্যবাদ, পৈনদবাদ এবং তত্ত্বের সাথে সমান হয় মানবতা ঐশ্বরিক হতে পারে স্যার উইলিয়াম জোনস (ডি। 1794) এবং স্যার জন ম্যালকম (ডি। 1833) পন্ডিতদের মতবাদগুলি হিন্দু যোদ্ধ, গ্রীক দর্শনের বা বৌদ্ধধর্ম থেকে উদ্ভূত সূফীবাদ তত্ত্বকে উন্নত করেছিল।ইসলামী ঐতিহ্য, যা তাসাউফ এবং তার সামাজিক বাস্তবায়ন একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছে সঙ্গে (বা সম্ভবত কারণে) ইসলামী ঐতিহ্য, সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা সত্ত্বেও, সুফিবাদ অ ইসলামি চরিত্রের এই ধারণা ব্যাপকভাবে ইউরো-আমেরিকান বৃত্তি মধ্যে গৃহীত হয়েছে।সুতরাং, এর উৎপত্তি অনুসারে, সূফীবাদ শব্দটিকে ইউরোপীয় ভাষায় রূপান্তরিত করা যেতে পারে প্রাচ্যবাদী ভুল ব্যাখ্যাের একটি চমৎকার উদাহরণ হিসেবে, সূফীব্যবাদ মূলত একটি বৈপ্লবিক বুদ্ধিবৃত্তিক মতবাদ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল যা তাত্ত্বিক একেশ্বরবাদ ইসলামের তথাপি, আধুনিকতার শব্দভান্ডারের সাথে দৃঢ়ভাবে জড়িত একটি শব্দ হিসাবে সুফীফ সুফীদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ঘটনাগুলির জন্য বহির্বিশ্বের পরিভাষাকে কাজে লাগাতে পারে, যার সাথে জনপ্রিয় অনুশীলন এবং আন্দোলনগুলি যেগুলির সাথে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে সুফিবাদের আদর্শিক সংজ্ঞা
# ফানা' আরবী শব্দ, যার অর্থ
বিলীনহওয়া,মিশে যাওয়া
ইত্যাদি । প্রচলিত অর্থে ফানা
বলতে নিজের আমিত্বকে বিসর্জন
দিয়ে আল্লাহ্র সাথে মিশে
একাকারহয়ে যাওয়াকে বুঝায় ।
প্রতিটি মানুষের
ভিতরেইআল্লাহ্র এক টুকরা নূর সুপ্ত
রয়েছে ।যিনি সাধনা করে হৃদয়ের
৭ম স্তরের ঐ সুপ্ত নূরকে জাগ্রত
করতে সক্ষম হয়েছেন এবং
নিজেকে ঐনূর দ্বারা আলোকিত
করতে পেরেছেন, তিনিই আল্লাহ্র
নিকট থেকে নির্দেশপেয়ে
থাকেন । ঐ অবস্থায় বান্দা
আল্লাহ্তে বিলীন বা একাকার
হতে সক্ষম হয়। আর এ বিলীন বা
একাকারহওয়াকে ফানাফিল্লাহ্
বলে । পবিত্রকুরআনে
এরশাদহয়েছে- [ওয়ামা রামাইতা
ইজ রামাইতা ওয়ালা
কিন্নাল্লাহা রমা] অর্থ-"(হে
রাসুল) তখন আপনি (বালি)
নিক্ষেপ করেননি আল্লাহ্ই
নিক্ষেপ করেছিলেন" (সূরা-
আনফাল, আয়াত-১৯) ।পবিত্র
কুরআনে আরো এরশাদ হয়েছে-
অর্থ-"(হে রাসুল) যারা আপনার
হাতে বায়াত গ্রহণ করে তারা
আল্লাহ্র হাতেই বায়াত গ্রহণ
করে ।আল্লাহ্র হাত তাদের
হাতের উপর" (সূরা- ফাতাহ্,
আয়াত- ১০) ।হাদীসে কুদসীতে
আল্লাহ্ ফরমান- অর্থ-"আমার
বান্দা নফল ইবাদত দ্বারা আমার
এত নিকটবর্তী হয় যে,আমি তাকে
ভাল বাসতে বাসতে তার কর্ণ হয়ে
যাই,যে কর্ণ দ্বারা সে শোনে;
চক্ষু হয়ে যাই, যে চক্ষু দ্বারা সে
দেখে,হাত হয়ে যাই যে হাত
দ্বারা সে ধরে,পা হয়ে যাই, যা
দ্বারা সে হাঁটে । অবশ্য যখন কোন
বিষয়ে প্রার্থনা করে, তখন উহা
দান করে থাকি এবং যখন কোন
বিষয়ে ক্ষমা চায়, তখনই উহা মাফ
করে থাকি" (বোখারী
শরীফ)প্রতিটি মানুষের রূহ এক সময়
আল্লাহ্তে মিশে ছিল ।আল্লাহ্
নিজের রূহ থেকে রূহ মানব দেহে
ফুঁকে দিলেন ।এই রূহই তাঁর সাথে
পুনরায় মিশে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল
। যেমন- সাগরের পানি
বাষ্পাকারে উত্থিতহয়ে মেঘরূপে
আকাশে ভেসে বেড়ায় ।পরে বৃষ্টি
রূপে জমিনে পতিত হয়ে খাল-বিল,
নদী-নালা, পুকুর-ডোবা ইত্যাদির
পানি নামে পরিচিত হয়ে থাকে ।
যে পানি যাত্রা পথে কোন
ডোবা, পুকুর বা জলাশয়ে বন্ধ হয়ে
আটকা পড়ে যায়, তার পক্ষে
সাগরে মিলিত হওয়া কষ্ট সাধ্য
হয়ে পড়ে ।কিন্তু যখন কোন
প্লাবনে উক্ত ডোবা, পুকুরসহ
লোকালয়ে প্লাবিত হয়ে যায়,
তখনই কেবল আটকে পড়া পানির
পক্ষে নদীবাহিত হয়ে সাগরের
সাথে মিলিত হওয়া সম্ভব হয় ।
অনুরূপভাবে আল্লাহ্থে কে আগত
মানুষের ভিতরে আটকে পড়া রূহ
কোন না কোন মহামানবের
সান্নিধ্যে গিয়ে নিজের মাঝে
ফায়েজের মাধ্যমে আল্লাহ্র
প্রেমের জোয়ার আনতে পারলে
আল্লাহ্তে বিলীন হয়ে চির মুক্তি
লাভ করতে পারে ।আল্লাহ্র নূর
থেকে সৃষ্ট মানুষ সাধনা করে
যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁর সাথে পুনরায়
আল্লাহ্তে মিলিত হতে না
পারবে, ততক্ষণ সে চিরমুক্তি লাভ
করবে না । আল্লাহ্ প্রাপ্ত
সাধকের অভিজ্ঞতালব্ধ
বিশ্লেষণে 'ফানা' সূফীদের
সাধনার একটি অতি উঁচু স্তরের
নাম । যে স্তরে সাধক গভীর
সাধনার মাধ্যমে নিজের
আমিত্বকে আল্লাহ্তে বিলীনকরে
দিয়ে একাকার হয়ে আল্লাহ্র গুনে
গুণান্বিতহয়ে ফানা ফিল্লাহ্
হাসিল করে । মানুষের
নফসপরিশুদ্ধি লাভ করতঃ রূহের
আনুগত্যস্বীকারকরে তার সাথে
মিলিত হতে পারে ।
আল্লাহ্রপ্রতিনিধিত্বকারী
রূহের ভিতরে আল্লাহ্র
যাবতীয়গুণাবলী বিদ্যমান ।
পরিশুদ্ধ নফস রূহের সাথে মিলিত
অবস্থায় আল্লাহ্র অস্তিত্ব
সম্পর্কে অবগত হয়এবং তাঁর
প্রেমাকর্ষণে নিজেকে
সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্তে বিলীন
করে ফেলে । এভাবে মানুষ ফানা
ফিল্লাহ্ হাসিল করে ।আল্লাহ্
প্রাপ্ত সাধক অলী-আল্লাহ্গণ
পবিত্র কুরআন ও হাদীসের
জাহেরী অর্থের পাশাপাশি
তাঁদের সাধনালব্ধ জ্ঞান থেকে
বাতেনী ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে
বলেন- সাধনার পথে সাধকগণকে
৩টি স্তর অতিক্রম করতে হয় ।যথা-
ফানা ফিশ শায়েখ, ফানা ফির
রাসুল এবং ফানা ফিল্লাহ্ ।
প্রত্যেকটি ফানাকে আবার
৩ভাগে ভাগকরা হয়েছে । যেমন-
সাধারণ ফানা,আদর্শ ফানা এবং
মোকাম্মেল ফানা ।সে মতে
ফানা ফিশ শায়েখ এর ৩টি স্তর
হলো-সাধারণ ফানা ফিশ্
শায়েখ, আদশ ফানা ফিশ্
শায়েখএবং মোকাম্মেল ফানা
ফিশ্ শায়েখ । সাধারণফানা ফিশ্
শায়েখ অর্জন হলে আপন
মোরশেদেরকথা স্মরণ হওয়া
মাত্রই সাধকের কান্না আসবে ।
এঅবস্থার আরো উন্নত হলে আদশ
ফানা ফিশ্ শায়েখঅর্জিত হয় ।
তখন সাধক যে দিকে তাকাবে
সর্বত্রইমোরশেদের চেহারা
সামনে দেখতে পায় । এ
অবস্থারআরো এক ধাপ অগ্রগতি
হলে সাধক মোকাম্মেলফানা ফিশ্
শায়েখ এর স্তরে পৌঁছে যায় । এ
অবস্থায়সাধক নিজেকে
মোরশেদের সাধে মিশে
একাকারদেখতে পায় । এ স্তরে
পৌছলে মোরশেদ উক্তমুরীদকে
হযরত রাসুল (সঃ)-এর হাঁতে তুলে
দেন । তখন তার ফানা ফির রাসুল
হাসিল হয় । ফনা ফির রাসুলের
৩টি অবস্থা যথা- সাধারণ ফানা
ফির রাসুল,আদর্শ ফানা ফির
রাসুল এবং মোকাম্মেল ফানা
ফির রাসুল ।সাধক যখন সাধনা করে
সাধারণ ফানা ফির রাসুল অর্জন
করে, তখন হযরত রাসুল (সঃ)-এর
নাম শোনা মাত্রই তার কান্না
আসতে থাকে । এ থেকে আর এক
ধাপ অতিক্রম করে সাধকের যখন
আদর্শ ফানা ফির রাসুল হয়, তখন
সে যে দিকে তাকায় সেদিকেই
রাসুল (সঃ)-এর চেহারা মোবারক
দেখতে পায়। এ অবস্থায় সাধক
সাধনা করতে করতে আরো এক
স্তরে উপরে চলে যায়, যাকে
মোকাম্মেল ফানা ফির রাসুল
বলে । এ অবস্থায় সাধক নিজেকে
রাসুল (সঃ)-এর সাথে মিশে
একাকার দেখতে পায় । তখন হযরত
রাসুল (সঃ) ঐ আশেককে আল্লাহ্র
হাতে তুলে দেন ।তাকে ফানা
ফিল্লাহ্ বলা হয় ।
ফানাফিল্লাহ্র ৩টি অবস্থা
রয়েছে । সাধারণ ফানা ফিল্লাহ্,
আদর্শ ফানা ফিল্লাহ্ এবং
ময়কাম্মেল ফানা ফিল্লাহ্ ।
সাধক যখন সাধনা করে সাধারণ
ফানা ফিল্লাহ্ অর্জন করতে সক্ষম
হয় ঐ অবস্থায় সে আল্লাহ্র নাম
শুনলেই কাঁদতে থাকে । সাধনার
মাধ্যমে যখন সাধক আর এক ধাপ
এগিয়ে যায়, তখন তার আদর্শ
ফানা ফিল্লাহ্ হাসিল হয় । এ
অবস্থায় সাধকযেদিকে তাকায়
সেদিকেই আল্লাহ্র চেহারা
দেখতে পায়।
“কান পেতে শোন বাঁশী (রুহ) কি বলে!
সে বিরহ বিচ্ছেদের (আল্লাহ্‌ তা’আলা থেকে) অভিযোগ করে।”
“যখন থেকে আমাকে বাঁশবন থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে,
আমার কান্না ও আর্তনাদে নারী পুরুষ সকলে কেঁদেছে।”
“বিরহ ব্যথায় যাদের হৃদয় বিদীর্ণ,
আমার প্রেম ব্যথা প্রকাশের জন্য এমন চূর্ণ-বিচূর্ণ হৃদয়ই প্রয়োজন।”
“যে ব্যক্তি নিজের বাসস্থান থেকে দূরে চলে এসেছে ,
সে পুনরায় তা ফিরে পেতে চায়।”
*** ( কবি এখানে রুপকের মাধ্যমে বলছেন যে, বাঁশী যেমন তার সুমধুর করুন সুর এর মাধ্যমে মূলত বাঁশবন থেকে তার বিচ্ছেদের ব্যথা প্রকাশ করে ঠিক তেমনি কবির আত্মা (রুহ) আল্লাহ্‌ তা’আলা থেকে বিচ্ছেদের কারণে সর্বদা কাঁদতে থাকে। কারণ পৃথিবীতে আসার পূর্বে তিনি আল্লাহ্‌ তা’আলা’র পরম সান্নিদ্ধে ছিলেন।) ***
হযরত শাহ #ওয়ালীউল্লাহ মুহাক্কিক ও মুহাদ্দিস দেহলবী সাহেব তাহার "কাউলুল জামীল" পুস্তকের ষষ্ঠ পরিচ্ছেদে পীরের #ছুরত ধ্যান করার বিষয়ে #উপদেশ দিয়াছেন । যথাঃ-"মুর্শিদের অনুপস্থিত অবস্থায় তাহার ছুরত মূরীদ নিজ দুই নয়নের মধ্যে প্রেম ও ভক্তি সহকারে #ধ্যান করিতে থাকিবে, তাহা হইলে সে তাহার পীরের ছুরত ধ্যান দ্বারাই সেই #ফল লাভ করিবে, যাহা তাহার পীরের সঙ্গ ও সোহবত দ্বারা লাভ করিত ।"
মানুষ শয়তানের ওয়াসওয়াসা, ধোকা ও সন্দেহ হইতে মুক্তি লাভ করিতে পারিলে যে গায়বের দৃষ্টি ও সংবাদ পাইতে পারে তৎসন্মন্ধে নিম্নলিখিত #হাদীস প্রমানঃ-
"আদম সন্তানের অন্তরে শয়তানগণ সন্দেহের প্ররোচনা না করিলে সে নভোমন্ডোলে #রাজত্বের দর্শন লাভ করিতে পারিত ।"
ইহার দ্বারা #প্রমানিত হয় যে, যে-সকল পীরে কামেল ও আউলিয়া শয়তানকে দমন ও তিরহিত করিতে সাক্ষম হইয়াছেন,তাহারা আসমান ও যমীনের সকল বস্তুর দর্শন লাভ করিতে পারেন, এবং তাহার অনুপস্থিত মুরীদ তাহাকে #স্মরণ বা ধ্যান করিলে তিনি নিশ্চয় টের করিতে পারেন ।
মানুষ যে নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডোলের রাজত্ব ও আল্লাহ'তায়ালার সকল সৃষ্ট বস্তুর মুশাহেদা (দর্শন) লাভ করিতে পারে, তাহা #কুরআন শরীফের নিম্ন আয়াত দ্বারাও প্রতীয়মান হইতেছেঃ-
"তাহারা কি নভোমন্ডোল ও ভূ-মন্ডলের রাজত্ব এবং আল্লাহর যে সকল বস্তু সৃষ্টি করিয়াছেন, দেখিতেছে না ? [সূরা-আরাফ-আয়াত-১৮৫]
আর আল্লাহ'তায়ালা নিজ কালাম পাকের অন্য এক আয়াতে জ্ঞাত করাইয়াছেন যে, যাহারা আল্লাহর খাস বান্দা ও খাঁটি বন্দেগী করেন, তাহাদিগকে শয়তান প্রতারিত করিতে পারে না । শয়তান আল্লাহর আদেশ লঙ্ঘন করিয়া আদমকে সিজদা না করার অপরাধে আল্লাহর দরবার হইতে বিতারিত হওয়ার ক্ষোভে ও রোষে #বলিলঃ-"শয়তান বলিল, হে আমার প্রতিপালক, তুমি যেমন আমাকে ভ্রষ্ট বলিলে, আমিও মানুষ জাতির সকলকে পৃ্তহিবীর প্রলোভন দেখাইয়া পথভ্রষ্ট করিব, কিন্তু তোমার ঐ সকল বান্দাগণ ছাড়া যাহারা খাঁটি ।"[সূরা-হিজর-আয়াত-৪০]
এখন একটি তর্ক আসিতে পারে যে, তাহা হইলে মানুষের এবং আল্লাহর ক্ষমতায় প্রভেদ কি থাকিল ? তাহার উত্তর এই, মানুষের ক্ষমতা ও শক্তি আল্লাহ হইতে প্রাপ্ত; যেমন আল্লাহ'তায়ালা ফরমাইয়াছেনঃ-
[শুধুমাত্র আরবি থাকার কারণে লিখতে অপারগতা প্রকাশ করছি]
আল্লাহর সহিত ফানা হইতে না পারিলে মানুষের কোন ক্ষমতা নাই, বিল্লাহের অর্থ যাহেরী আলেমগন বুঝিতে পারেন না বলিয়াই এত গন্ডগোল ! আল্লাহ'তায়ালা সকল সময় স্বয়ং নিজ #ক্ষমতায় সম.
'মুর্শিদের অদৃশ্য দান,,
হুজুর পিরানে পীর দস্তগির অলি কুলের শিরোমণি মাহবুবে সবহানি কুতুবে রাব্বানি শেখ সৈয়দ সুলতান মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের জিলানি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর দরবারে এক ব্যক্তি একাধারে বারো বছর পর্যন্ত গোলামী করেন।একদিন, এক দুষ্ট বুদ্ধির লোক, গাউছে পাকের এই ভক্তকে বললো, 'আচ্ছা, তুমি এখানে বছরের পর বছর পরে আছো কেন? ভক্ত জবাব দিলো,'অাল্লাহ কে পাবার জন্য।এবার ঐ কুচক্রী বললো 'পেয়েছো কি অাল্লাহ কে? 'তোমার পীর তোমাকে কিছু দিয়েছে কী?
ভক্ত, মাথা নেড়ে উত্তর দিলো, ''না,,।
তাহলে, খামোকা পড়ে অাছো কোন দুঃখে? চলে যাও.....।
লোকটির কথায় প্রভাবিত হলো গাউছে পাকের ভক্ত।ভাবলো, যদি পীরের কাছে বিদায় চাইতে যাই,তিনি বিদায় দেবেন না।কাজেই গভীর নিশীথে, সকল মায়ার বন্ধন ছিন্ন করে, পুটুলি বেঁধে, গাউছে পাকের এই ভক্ত চলে যাচ্ছে।হঠাৎ সে পেছন ফিরে তাকালো সেই ঘরটির দিকে,যে ঘরে সে বারো বছর ছিলো।মনে মনে বললো,চলে যাচ্ছি,হয়তো অন্য কেউ এসে এ ঘরে থাকবে! আহ! যদি ঘরটি এ মুহূর্তে পুড়ে যেতো!!
এ কী, সেই ঘরেতো সত্যি সত্যিই অাগুন ধরে গেলো।এমত সময় গাউছে পাক সামনে হাজির। 'বাছা,চলে যাচচ্ছো কেন? ভক্ত বললো 'হুজুর এতদিন ধরে আছি, কই কিছুই তো দিলেন না আমায়!! হুজুর মুচকি হেসে বললেন, 'যদি না ই দিতাম, তাহলে তুমি মুখেও বলোনি, শুধু অন্তরে কল্পনা করেছো 'এটা হোক,,সঙ্গে সঙ্গে সেটাই হচ্ছে। এরপরও বলবে দিইনি।
সত্যিই তাই,বহু মুরিদ আছেন, তারা হয়তো অনুভব করতে পারেন না যে তাদের মুর্শিদে কামেল তাদের ঝুলিতে কি রাখছেন দিনের পর দিন!!

Comments

Popular posts from this blog

ছেমা ই দালালাত

ইউসুফে ছানি গাউছুল আজম ছৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাজান কেবলা রহঃ জীবনী দর্পণ।

কোরআন সুন্নার আলোকে পীর ও মুরিদ।