শাবে বারাতের দালালাত।



বরকতময় রজনী "শবে বরাত" সম্পর্কে আলোকপাত, যা বিদায়াত নামক বিষে আক্রান্ত!! 
--------------- --------------- --------------- --------------- --------------- 
শবে বারাআত কি?

শব” শব্দটা ফার্সি। যার অর্থ হল-রাত। আর বরাআত এটি আরবী শব্দ। মূলত হল-براءت যার অর্থ হল “মুক্তি” তথা জাহান্নাম থেকে মুক্তির রাত হল শবে বারাআত।

শবে বারাআতকে হাদিসের পরিভাষায় বলা হয়েছে “লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান”(ليلة النصف من شعبان) তথা শাবানের অর্ধ মাসের রাত। কেউ কেউ “শবে বরাআত” নামে হাদিসে শব্দ না থাকায় এ রাতকে অস্বিকার করার মত খোড়া যুক্তি দিয়ে থাকেন। তাদেরকে আমি বলি-আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়া আবশ্যক বলি কুরআন হাদিসে বর্ণিত নির্দেশের কারণে। কিন্তু কুরআন হাদিসের কোথাও কি "নামায" শব্দ আছে? আমরা যাকে "নামায" বলি সেই অর্থবোধক কুরআন হাদিসের উদ্ধৃত শব্দ “সালাত”ই হল নামায। তেমনি আমরা যাকে “শবে বারাআত” বলি তথা শাবানের পনের তারিখের রাত বলে থাকি এই অর্থবোধক শব্দ হাদিসে পাওয়া গেলে তা’ই হবে শবে বারাআত। আর এই অর্থবোধক হাদীসে বর্ণিত শব্দ হল “লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান”। সুতরাং তাই হল শবে বারাআত।

শবে বরাত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত রয়েছে সেখান থেকে ২টি সহিহ ও হাসান সনদ এবং একটি দূর্বল সনদের হাদিস উল্লেখ করছি এবং ইমামদের (আহলে হাদিস গুরুদের মতামত রয়েছে) মতামতঃ 

➤ হাদিসের আলোকে শবে বরাত ০১ঃ 

হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ  [ﷺ] ইরশাদ করেনঃ 
"আল্লাহ তা'আলা শাবান মাসের ১৫ তারিখ অর্থাৎ (শবে বরাত) এর রাতে সমস্ত মাখলুকাতের দিকে রহমতের নজরে তাকান। সমস্ত মাখলুকাতকে আল্লাহ্ তা'আলা মাফ করে দিবেন। তবে মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত।"

(১) ইমাম তাবরানীঃ মু'জামুল কবীর; ১/১৪২পৃ. হাদীসঃ ২১৫.
(২) ইমাম ইবনে হিব্বানঃ আস-সহীহ্; ১২/৪৮১পৃ. হাদীসঃ ৫৬৬৫.
(৩) ইবনে হাজার হায়সামীঃ মাযমাউয যাওয়াইদ; ৮/৬৫পৃ. হাদীসঃ ১২৯৫৬.
(৪) আহলে হাদিস নাসিরুদ্দীন আলবানী: সিলসিলাতুল আহাদিসুল সহিহাহ, ৩/১৩৫ পৃ. হাদীসঃ ১১৪৪, তিনি বলেনঃ সনদটি সহীহ্।

❏ সনদ পর্যালোচনাঃ

☞ আল্লামা ইবনে হায়সামী (রহঃ) উক্ত হাদিস সম্পর্কে বলেনঃ
"উক্ত হাদিসটি ইমাম তাবরানী 'মু'জামুল কবীর' ও 'মু'জামুল আওসাত' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন- উক্ত হাদিসটির সমস্ত রাবী সিকাহ বা বিশুদ্ধ।"
(আল্লামা ইবনে হাজার হায়সামী: মাযমাউয যাওয়াইদ; ৮/৬৫ পৃ.)

☞ মুয়াজ বিন জাবাল (রাঃ) এর উক্ত হাদিস সম্পর্কে ইমাম মুনযির এবং আহলে হাদিসের অন্যতম আলেম মোবারকপুরী বলেনঃ
"ইমাম মুনযির (রহঃ) তার তারগীব গ্রন্থে হাদিসটি উল্লেখের পর বলেন, ইমাম তাবরানী তার 'মু'জামুল আওসাতে', ইমাম ইবনে হিব্বান তার 'আস-সহিহ' গ্রন্থে এবং ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) স্বীয় গ্রন্থে বর্ণনা করেন। উক্ত হাদিসটির সনদ لا بأس به অর্থাৎ সনদে কোন অসুুবিধা নেই।"  
(মোবারকপুরী: তুহফাতুল আহওয়াজী; ৩/৪৪১ পৃ. হাদীসঃ ৭৩৬)

➤ হাদিসের আলোকে শবে বরাত ০২ঃ

হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি এক রজনীতে হুযূর-ই আকরাম [ﷺ]'কে হারিয়ে ফেললাম। অর্থাৎ মধ্যরাতে আমি তাঁকে বিছানায় দেখতে পেলাম না। এ সময় ঘর ছেড়ে গিয়ে তিনি জান্নাতুল বাকীতে অবস্থান করতে ছিলেন। (এবং এ সময় মুনাজাত রোনাজারীতে মশগুল ছিলেন) তিনি তখন আমার উদ্দেশ্যে এরশাদ করলেন- তুমি কি এ আশংকা করছো যে, আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল তোমার প্রতি অবিচার করেছেন? আমি বললাম, ‘‘হে আল্লাহ্'র রাসূল, আমি ধারণা করেছি যে, আপনি আপনার আপনার পবিত্র বিবিদের থেকে কারো গৃহে অবস্থান করতেছেন।’’ তখন তিনি বললেন, ‘আল্লাহ্ তা‘আলা অর্ধ শা’বান (অর্থাৎ- শবে বরাত) এর রজনীতে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন। (অর্থাৎ- তাঁর বিশেষ তাজাল্লী বিচ্ছুরণ ঘটান) এবং বনী ক্বলবের বকরীর পশমের সংখ্যার চেয়েও বেশি আমার উম্মতকে ক্ষমা করেন।

(১) ইমাম তিরমিযীঃ আস সুনান; ৩/১১৫পৃ. হাদীসঃ ৭৩৯.
(২) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলঃ আল মুসনাদ; ১৮/১১৪ পৃ. হাদীসঃ ২৫৮৯৬.
(৩) ইমাম ইবনে মাজাহঃ আস-সুনান; ১/৪৪৪ পৃ. হাদীসঃ ১৩৮৯.
(৪) শায়খ খতিব তিবরিযীঃ মিশকাতুল মাসাবীহ; ২৫৩পৃ. হাদীসঃ ১২৯৯.
(৫) ইমাম সুয়ূতীঃ আল-জামেউস সগীর; ১/১৪৬পৃ. হাদীসঃ ১৯৪২.

❏ সনদ পর্যালোচনাঃ

☞ হযরত আয়েশা (রাঃ) এর উক্ত হাদিস প্রসঙ্গে মোবারকপুরী বলেঃ 
"উক্ত হাদিসটি ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ)ও একটি সনদে বর্ণনা করেছেন। ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) বলেন, উক্ত হাদিসটি মুরসাল, তবে শক্তিশালী সনদ।"
(মোবারকপুরীঃ তুহফাতুল আহওয়াজী; ৩/৪৪০ পৃ. হাদীসঃ ৭৩৬)

☞ ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহঃ) বলেনঃ
"উক্ত হাদিসটি সনদের দিক দিয়ে 'হাসান' পর্যায়ের।" 
(ইমাম সুয়ূতীঃ আল-জামেউস সগীর; ১/১৪৬পৃ. হাদীসঃ ১৯৪২.)

➤ হাদিসের আলোকে শবে বরাত ০৩ঃ 

হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ  
"যখন শাবানের চৌদ্দ তারিখ আসবে, সে রাতে তোমরা কিয়াম করবে (নামায ইবাদত বন্দেগীতে কাটাবে) এবং দিনে রোযা রাখবে, আল্লাহ্ তা‘য়ালার রহমত এ রাতে সূর্যাস্তের সাথে সাথে প্রথম আকাশে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন,  কেউ আছ কি? ক্ষমা চাইলে আমি গুনাহ ক্ষমা করে দেবো। কেউ রোগাগ্রস্ত আছ কি? (রোগ মুক্তি প্রার্থনা করলে) আমি আরোগ্য দান করব। কেউ রিযিক চাওয়ার আছ কি? আমি তোমাকে রিযিক (জীবন উপকরণ) দেব। কেউ আছ কি? কেউ আছ কি? এভাবে ফযর পর্যন্ত ঘোষণা আসতে থাকে। কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে সূর্যাদোয় পর্যন্ত ঘোষণা চলতে থাকে।"

(১) ইমাম ইবনে মাজাহ : আস্-সুনান : ১/৪৪৪ : হা/১৩৮৮ 
(২) ইমাম ইবনে হিব্বান : আস-সহীহ : হা/১৩৮৮ 
(৩) ইমাম বায়হাকী : শুয়াবুল ঈমান : ৫/৩৫৪ পৃ. হা/৩৮২২

❏ সনদ পর্যালোচনাঃ

☞ আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (رحمة الله) লিখেনঃ

"এ সনদটি যঈফ, ইবনে আবি সাবরাহ......সে মদিনার মুফতী ছিলেন এবং বাগদাদের কাযি ছিলেন, তবে তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।"

(আল্লামা আইনী, উমদাতুল ক্বারী, ১১/৮২ পৃ.)

☞ ইমাম শিহাবুদ্দীন কাস্তাল্লানী (رحمة الله) লিখেন-

"এ সনদটি ইবনে মাযাহ (رحمة الله) সংকলন করেন, সনদটি যঈফ, যা হযরত আলী (رضي الله عنه) হতে মারফু সূত্রে সংকলন করেছেন।"

(আল্লামা কাস্তাল্লানী, আল - মাওয়াহিবুল্লাদুনিয়্যাহ, ৩/৩০০ পৃ.)

উপরের আলোচনা থেকে প্রমাণিত হল,হাদিসের ইমামগণ এ সনদকে শুধুমাত্র যঈফ বলেছেন, কেউ তাকে জাল বলেননি।

#উল্লেখ্য_যঈফ_হাদিসের_উপর_আমল_করা_মুস্তাহাবঃ 

❤️ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) বলেনঃ

"নিশ্চয় জেনে রাখুন! দুর্বল সনদের হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযোগ্য।"

(আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : মেরকাত : ৩/৪৯ পৃ. কিতাবুস সালাত : হা/৯৭৪)

❤️ আল্লামা আব্দুল হাই লাখনৌভি (রহঃ) লিখেনঃ

"দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য যথেষ্ট"।

(আত-তালাকুল মুমাজ্জাদ আ‘লা মুয়াত্তায়ে মুহাম্মদ,  ২/৬৬০ পৃ.)

❤️ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) বলেনঃ

"হাদিসের সনদ দুর্বল, মুরসাল,  মুনকাতে হলেও আমল করা বৈধ, আর এ ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন, যেমনটি ইমাম নববী (رحمة الله) বলেছেন।"

(আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী, মিরকাত, ২/৪৭৭ পৃ. হা/৫২১)

➤ শাফেয়ী ফকীহদের অবস্থানঃ

ইমাম শিহাবুদ্দীন কাস্তাল্লানী (رحمة الله) লিখেনঃ

"শবে বরাতে ইবাদত করার বিষয়ে শাম দেশের তাবেয়ীদের আমল রয়েছে, যেমন খালেদ বিন মা‘দান এবং মিকহুল শামী (رحمة الله) প্রমুখ এ রাতে ইবাদত করার বিষয়ে মত প্রকাশ করেছেন। শামের লোকগণ তা‘যিমের সাথে তা গ্রহণ করেছেন।"

তিনি আরও লিখেনঃ

"শবে বরাতের ফযিলতে অনেক হাদিসে পাক বর্ণিত হয়েছে।’’

(আল্লামা কাস্তাল্লানী, আল-মাওয়াহিবুল্লাদুনিয়্যাহ, ৩/৩০০ পৃ.)

➤ হাম্বলী ফকীহদের অবস্থানঃ

১. বিখ্যাত ফকীহ আল্লামা শায়খ মনসূর বিন ইউনূস বাহুতী হাম্বলী (রহঃ) বলেনঃ

"শবে বরাত (১৫ শাবান) এর রাতে,  দুই ঈদের রাতে দাঁড়িয়ে অর্থাৎ নামাযে লিপ্ত হওয়া মুস্তাহাব।"

(আল্লামা শায়খ মনসূর বিন ইউনূস, কাশফুল কানাঈ : ১/৪৪৪ পৃ., পরিচ্ছেদ: فَصْلٌ صَلَاةُ الضُّحَى) 

২. আল্লামা ইমাম ইবনে ইসহাক বুরহান উদ্দিন ইবনে মুফলিহ হাম্বলী (ওফাত.৮৮৪ হি.) বলেনঃ
"মুস্তাহাব হলো মাগরিব ও ইশার মাঝখানে এই সমস্ত রাত্রিগুলোতে জেগে ইবাদত করা। এক জামাত ইমামগণ বর্ণনা করেছেন, এই সমস্ত রাত্রি হল,  আশুরার রাত্রি, রজবের প্রথম রাত্রি এবং শাবানের ১৫ তারিখ (শবে বরাত) রাত্রি। এই সমস্ত রাত্রিতে জাগ্রত থাকা মুস্তাহাব।"

(মুফলিহ : মাবদাউ শরহে মাকানা: ২/৩৩ পৃ.)

➤ মালেকী ফকীহদের অবস্থান:

১. অন্যতম মুহাদ্দিস আল্লামা ইমাম জুরকানী আল-মালেকী (রহঃ) ওফাত.১১২২হি. বলেনঃ

"ইবনে মাযাহ শরীফের হাদিসে এসেছে, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন) যখন ১৫ই শাবান আসবে তখন রাতে তোমরা ইবাদতের জন্য দন্ডায়মান হবে অর্থাৎ এ রাতে ইবাদতে জাগ্রত থাক, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দন্ডায়মান রাতকে ইবাদতে স্থাপন করবে।"

(আল্লামা ইমাম জুরকানী : শরহে মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া : ১০/৫৬১ পৃ.)

➤ হানাফী ফকীহদের অবস্থানঃ

১. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) এক হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেনঃ

"এই হাদিসে অধ্যায়ের দ্বারা সংবাদ বা খবর দিয়েছে যে শাবানের ১৫ই তারিখ রাতে (শবে বরাতে) জেগে ইবাদত করলে সাওয়াব রয়েছে যেমনটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।"

(আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী মিরকাত : কিয়ামে রমযান: ৩/৯৬৯ পৃ. হা/১২৯৯)

২. আল্লামা তাহতাভী হানাফী (রহঃ) বলেনঃ

"শবে বরাতে (১৫ই শাবান) রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত করা মুস্তাহাব।"

(ইমাম তাহতাভী : মারাকিল ফালাহঃ পৃ-১৫১)

৩. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী (রহঃ) গোসল করার সুন্নাত ওয়াক্তের আলোচনায় তিনি লিখেনঃ

"(লায়লাতুল বারাতে) অর্থাৎ ১৫ শাবানে গোসল করে নফল ইবাদত করা সুন্নাত।"

(ফাতওয়ায়ে শামী, ১ম খণ্ড১৭০ পৃ.),

❏ তিনি তার বিখ্যাত ফাতওয়ার গ্রন্থে নফল ইবাদতের তালিকা দিতে গিয়ে লিখেনঃ

"১৫ শাবানে রাত জাগরণ করে নফল ইবাদত করা।"

(ফাতওয়ায়ে শামী, ২/২৫ পৃ.)

➤ আহলে হাদিসদের অবস্থানঃ 

১. আহলে হাদিসের অন্যতম আলেম মুবারকপুরী তিরমিযী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘তোহফাতুল আহওয়াযীতে’ বলেনঃ

"জেনে রাখুন,  শাবানের মধ্যরাতের (শবে বরাতের) ফযীলত সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে,  সব হাদিস একত্রিত করলে প্রমাণিত হয় যে, এ রাতের ফযীলতের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। অনুরূপভাবে এ হাদিসগুলো সম্মিলিতভাবে তাদের বিপক্ষে প্রমাণ বহন করে যারা ধারণা করে যে, শবে বরাতের ফযীলতের ক্ষেত্রে কোন প্রমাণ মেলে না। আল্লাহ্ তা‘য়ালাই ভাল জানেন।"

(আল্লামা মুবারকপুরী: তোহফাতুল আহওয়াজী শরহে তিরমিযী : ৩/৪৪১ পৃ. হা/৭৩৬)

২. আহলে হাদিসের অন্যতম ইমাম ইবনে তাইয়িমাহ তাঁর স্বীয় ফতোয়া গ্রন্থে লিখেছেনঃ

"যদি কোন ব্যক্তি একাকী অথবা নির্দিষ্ট জামাতের সাথে শা’বানের মধ্য রাতে ইবাদত করে যেমনটা সালফে সালেহীনগণ করতেন অবশ্যই তা অধিক উত্তম হবে।"
(মাজমাউ’ল ফতওয়া ফতোয়ায়ে তাইয়িমাহ, ২৩\১৩১ পৃষ্ঠা)

 তিনি আরো বলেনঃ

"শাবানের মধ্য রাতের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদীস এসেছে,আছার তথা সাহাবায়ে কেরামের বর্ণনা, তাবে তাবেঈগন সালফে সালহীগনের বক্তব্য রয়েছে আর তারা এই রাতে ইবাদত করতেন। সালফে সালেহীনদের মধ্যে এ রাতে ইবাদতের ব্যাপারে আন্তরিকতা ও একাগ্রতা পাওয়া যায় এবং এ ব্যাপারে (শবে বরাত) কোন নিষেধাজ্ঞা পাওয়া যায় নি"।
(মাজমাউ’ল ফতওয়া ফতোয়ায়ে তাইয়িমাহ, ২৩\১৩২ পৃষ্ঠা)

৩. বর্তমানে যারা শবে বরাত অস্বীকার করে তাদের মূল গুরু  সালাফী অন্যতম ইমাম, নাসির উদ্দীন আলবানী তার “সিলসিলাতু আহাদীসি আস সহীহা” কিতাবে পবিত্র শবে বরাতের হাদীস শরীফকে সহীহ বলে উল্লেখ করে লিখেছেঃ 

"একদল সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বিভিন্ন সূত্রে নিসফে শাবানের মর্যদা ওপর একাধিক হাদীস শরীফ বর্ণিত আছে। বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারনে হাদীস শরীফটি মজবুতি লাভ করেছে। যে সকল সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে হাদীস শরীফ বর্ণিত আছে উনারা হলেনঃ হযরত মু'আয ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু , হযরত আবু সালাবা রদ্বিয়াল্লাহু আনহ, হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু,হযরত আবু মূসা আল আশ'আরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু , হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হযরত আউফ বিন মালেক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা। এছাড়াও অনেক আকাবীর সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুগন হাদীস শরীফ বর্ণনা করেরন।"

(সিলসিলাতু আহাদীসি আস সহীহা ৩য় খন্ড ১৩৫ পৃষ্ঠা: হাদীস নম্বর ১১৪৪)
শাবে বারাতের/ ক্বদর/ মেরাজের রাতে অধিকাংশ মসজিদে এই হাদিসটি বর্ণনা করা হয়ে থাকে। আবূ হুরায়রা (রা:) হতে বর্নিত রাসূলুল্লাহ স্বাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: প্রত্যেক রাতের শেষ অংশে আল্লাহ শেষ আসমানে অবতরন করে অর্থাৎ জিবরীল আঃ কে অবতরণ করিয়ে বলতে থাকেন (আল্লাহর পক্ষ থেকে) : "কে এমন আছ ,যে এখন আমাকে ডাকবে , আমি তার ডাকে সাড়া দিব। এখন কে এমন আছ যে আমার কাছে প্রার্থনা করবে, আমি তাকে দান করব। আর কে এমন আছ ,যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। বুখারি:১১৪৫, ৬৩২১, ৭৪৯৪। মুসলিম:৭৫৮ ই:ফা:১৬৪২।
.
মুহাদ্দিসগণ এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন YANZILU RABBUNA এর মানে ইউনযিলু অর্থাৎ নাযিল করান। আল্লাহ শাবে বারাত এবং অন্যান্য রাতে জিবরীল আঃ কে তার প্রতিনিধি হিসেবে প্রথম আসমানে পাঠান। যার প্রমান কুরয়ান এই পাওয়া যায়।
আল্লাহ সূরা কদর আয়াত ৪ এ বলেন - "এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।" অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে জিবরীল আঃ ও ফেরেশতাগণ নাযিল হোন প্রথম আসমানে।সমস্ত আলেম যারা এই হাদিস বর্ণনা করেন তাদের এটাই বিশ্বাস যে আল্লাহ নয়, আল্লাহ জিবরীল আঃ কে নাযিল করান।
.
এখন কেউ যদি এই হাদিস দ্বারা এই বিশ্বাস করে যে এই রাতসমূহে আল্লাহই নাযিল হোন, নাউযুবিল্লাহ তাহলে এটা সরাসরি কুফ্র হবে। এটা বিশ্বাস করা হলে অনেকগুলি কুফ্র হবে। যেমন
১। সূরা আল হাদীদ:৪ - "তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।"
আবার দেখুন সূরা ক্বাফ:১৬ - "আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী(কণ্ঠনালীয়) থেকেও অধিক নিকটবর্তী।" দেখুন যেখানে আল্লাহর জ্ঞান আপনার সাথেই আছে সেখানে তাকে আসা যাওয়ার কি দরকার, নিকটে আসার কি দরকার? যে আল্লাহ আপনার কন্ঠনালীর হাড়ের চেয়েও নিকটে তাকে উঠানামার কি দরকার? উঠানামা আসা-যাওয়া আল্লাহর জন্য বিশ্বাস করা কুফ্র, কেননা এসব কাজ মানুষের। আল্লাহর জন্য তা বিশ্বাস করলে তো মানুষের সাথে আল্লাহর তুলনা হয়ে গেলো।
ইমামে আযাম আবু হানিফা (রহমাতুল্লাহি আ’লাই) তার জগত বিখ্যাত কিতাব আল ফিকহুল আবসাত এ বলেন- “ওয়ামান ওয়াসাফাল্লাহা বিমা’নান মিন মা’য়ানিল বাশার ফাক্বাদ কাফার” অর্থাৎ যে আল্লাহর জন্য এমন দোষ বা গুন মানল যা সৃস্টির মাঝে বিরাজমান তাহলে সে কুফরি করল। সৃস্টি উঠে, নামে, বসে, দাড়ায়, ঘুমায়, নড়াচড়া করে কিন্তু আল্লাহ এসব হতে পাক। তিনি আরোও বলেনঃ যে বস্তু কোনোও বস্তুর উপরে বা নিচে বা মধ্যে থাকে তা সৃষ্টি, একমাত্র আল্লাহ যিনি কারোও উপরে বা নিচে বা মধ্যে নন।
.
২। আসা যাওয়া করার তারই প্রয়োজন যে একস্থানে উপস্থিত ও অন্যস্থানে অনুপস্থিত। কিন্তু আল্লাহর জ্ঞানতো সর্বত্র বিরাজমান, তাই তাকে আসা যাওয়ার কি প্রয়োজন? আসা-যাওয়া সৃস্টির গুণ। আল্লাহ আসা যাওয়া থেকে পাক। তাই কেউ যদি এই হাদিস এর শাব্দিক তরজুমা করে তাহলে তাকে আল্লাহকে(তার জ্ঞানকে) কোথাও উপস্থিত আবার কোথাও অনুপস্থিত মানতে হবে এটাও কুফ্র। আল্লাহ বলেন জমিন আসমানে বিন্দুমাত্র জায়গা নেই যেখানে আল্লাহর জ্ঞান নেই। সুবহানআল্লাহ।
.
৩। যার অবস্থার পরিবর্তন হয় সেই সৃস্টি, তার স্রস্টা অর্থাৎ পরিবর্তক আছে। একমাত্র আল্লাহ যার কোনো পরিবর্তন হয়না। আল্লাহর জন্য পরিবর্তন মানলে প্রশ্ন আসবে কে তার পরিবর্তক? এটাও কুফ্র। পরিবর্তন হওয়া স্রিস্টির কাজ,স্রস্টার নয়। তাই আল্লাহই যাবতীয় জিনিসের পরিবর্তক, তার মধ্যে কখনওই পরিবর্তন হবেনা।
.
৪। আমরা ভালো ভাবেই জানি যে পৃথিবীর এক দেশের সাথে অন্য দেশের সময়ের মিল নেই। যেমন বাংলাদেশে যখন ভোর ৪ টা, তখন ভারতে ৩ ৩০, পাকিস্তানে ৩ টা,দুবাইয়ে ২ টা,আমেরিকায় বিকাল ৫ টা, ইংল্যান্ডে রাত ১০ টা। এখন কেউ যদি এই বিশ্বাস করে যে আল্লাহ উঠা নামা করেন, নাউযুবিল্লাহ, তাহলে তার মতে আল্লাহকে একবার বাংলাদেশের জন্য, আবার ভারতের জন্য, আবার পাকিস্তানের জন্য, আবার দুবাই এর জন্য, আবার অন্যান্য ২০০ দেশের জন্য শুধু উঠানামাই করা লাগবে,নাউযুবিল্
লাহ!! নাউযুবিল্লাহ!! এটা কুফ্র, নিঃসন্দেহে এটা কুফ্র। উঠানামা সৃস্টির আলামত, আল্লাহ এসব মানবীয় দোষ গুণ হতে পাক। ইমামে আযাম আবু হানিফা রাঃ বলেন আল্লাহ উঠানামা হতে পাক (আল ফিকহুল আকবার)।
.
৫। আবার আসা-যাওয়ার জন্য শরীর এবং শরীরের অঙের প্রয়োজন। আর আল্লাহ নিরাকার, তার কোনো তুলনা নেই। তাই কেউ যদি আল্লাহর শরীর, আকার, অংগ, আকৃতি বিশ্বাস করে তাহলে সেটা কুফ্র। আল্লাহ কুরয়ানে বলেন সূরা আশ-শুরা:১১ - "কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।" সূরা ইখলাসঃ৪- এবং তার সমতুল্য কেউ নেই। সূরা নাহল:৭৪ - অতএব, আল্লাহর কোন সদৃশ সাব্যস্ত করো না, নিশ্চয় আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।
.
৬. আবার নেমে আসেন মানলে এটাই বিশ্বাস করতে হবে যে তিনি উপরে থাকেন। নাউজুবিল্লাহ। আল্লাহকে কোনো স্থানের মুখাপেক্ষী করাটাই গুমরাহি। আল্লাহ স্থান ছাড়াই উপস্থিত। হযরত আলী (রাদ্বীআল্লাহু আনহু) বলেন- “ ﻛﺎﻥ ـ ﺍﻟﻠﻪ ـ ﻭﻻ ﻣﻜﺎﻥ، ﻭﻫﻮ ﺍﻵﻥ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ـ ﻋﻠﻴﻪ ـ ﻛﺎﻥ ” অর্থ: “যখন কোন স্থান ছিলো না, তখনও আল্লাহ তায়ালা ছিলেন। তিনি এখনও স্থান থেকে পবিত্র অবস্থায় আছেন।” [আল-ফারকু বাইনাল ফিরাক, আবু মনসুর বাগদাদী, পৃ.৩৩৩]।
এছাড়াও বুখারী শরীফ-এর ষষ্ঠ খন্ড ২৮৬নং হাদিসে রাসূলে পাক ( ﷺ ) বলেন- “কানাল্লাহু ওয়ালাম ইয়াকুন শাইউন গাইরুহু” অর্থাৎ “আল্লাহ তখনো ছিলেন যখন আল্লাহ ব্যতীত কিছুই ছিলনা।” মানে আসমান-জমিন, আরশ-কুরসি, উপর-নিচু, ডান-বাম, সামনে-পিছে কিছুই ছিলনা ; তখনো আল্লাহ ছিলেন এই সবকিছুর অমুখাপেক্ষী, আজও তিনি আছেন এই সবকিছুর অমুখাপেক্ষী।
.
অবশেষে বিখ্যাত সূফী ইমাম জুন-নুন মিসরী রহ. [ইন্তেকাল: ২৪৫ হি:] এর উক্তি দিয়ে শেষ করছি।তিনি বলেন,
“ ﺭﺑﻲ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻓﻼ ﺷﻰﺀ ﻳﺤﻴﻂ ﺑﻪ * ﻭﻫْﻮ ﺍﻟﻤﺤﻴﻂ ﺑﻨﺎ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻣﺮﺗﺼﺪ ﻻ ﺍﻷﻳﻦ ﻭﺍﻟﺤﻴﺚ ﻭﺍﻟﺘﻜﻴﻴﻒ ﻳﺪﺭﻛﻪ * ﻭﻻ ﻳﺤﺪ ﺑﻤﻘﺪﺍﺭ ﻭﻻ ﺃﻣﺪ ﻭﻛﻴﻒ ﻳﺪﺭﻛﻪ ﺣﺪ ﻭﻟﻢ ﺗﺮﻩ * ﻋﻴﻦ ﻭﻟﻴﺲ ﻟﻪ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺜﻞ ﻣﻦ ﺃﺣﺪ ﺃﻡ ﻛﻴﻒ ﻳﺒﻠﻐﻪ ﻭﻫﻢ ﺑﻼ ﺷﺒﻪ * ﻭﻗﺪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻦ ﺍﻷﺷﺒﺎﻩ ﻭﺍﻟﻮﻟﺪ ”
অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালাকে কোন কিছু পরিবেষ্টন করে না। তিনি সর্বাবস্থায় আমাদেরকে পরিবেষ্টন ও নিয়ন্ত্রণ করছেন। কোথায়, কেমন, কীভাবে, কী অবস্থা.. এগুলো থেকে আল্লাহ পবিত্র। কোন পরিমাপ-পরিমিতি দ্বারা তিনি সীমাবদ্ধও নন। আল্লাহ তায়ালার সীমা কীভাবে নির্ধারণ করবে? অথচ তাকে চক্ষু দেখেনি এবং তার তুলনীয় কিছুই নেই? কোন সাদৃশ্য ছাড়া কেউ আল্লাহ তায়ালাকে কীভাবে কল্পনা করবে? অথচ আল্লাহ তায়ালা সব ধরনের সাদৃশ্য ও সন্তান থেকে পবিত্র। [হিলয়াতুল আউলিয়া, খ.৯, পৃ.৩৮৮]।
শবে বরাতের দিনে আমাদের অধিকাংশ বাসায় মা ও বোনেরা হালুয়া রুটি তৈরি করে থাকেন। শরিয়তের দৃষ্টিতে এর বিধান কি?

শবে বরাতে হালুয়া রুটি রান্না করাকে কেউ যদি ফরজ বা ওয়াজিব বা সুন্নাত মনে করে তবে অবশ্যই তা নাজায়েজ হবে। কিন্তু কেউ মুস্তাহাব (করলে সাওয়াব না করলে গুনাহ নেই মনে করে) তথা ভালো কাজ মনে করে করলে তা নাজায়েজ হওয়ার কোনো কারন নেই।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন - "হে মানুষেরা! তোমরা সালামের বিস্তার ঘটাও, মানুষকে খাবার খাওয়াও এবং যখন অন্য মানুষ ঘুমিয়ে থাকে তখন নামায পড়, তাহলে তোমরা শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে যেতে পারবে।" - জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪৮৫

হাদীসে এসেছে আয়েশা সিদ্দীক্বা রা: হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন যে, নাবী কারীম স্বাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হালুয়া এবং মধু (খেতে) ভালবাসতেন। (বুখারী শরীফ ২য় খন্ড ৮৪৮ পৃষ্টা, আবু দাউদ শরীফ ৫২২ পৃষ্টা শামাইলে তিরমিযী বঙ্গানুবাদ ১১১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-১৫৫)।

তাই মুসলমানেরা এ সুন্নতি খাবার রান্না করে গরিবদের দিতেই পারেন। আমি এটাও বলছিনা যে শুধু হালুয়া রুটিই খাওয়াতে হবে। আপনার ইচ্ছা আপনি হালুয়া খাওয়ান, বা মিস্টি খাওয়ান বা ঝাল খাওয়ান। আপনার সামর্থ্য থাকলে শুধু শবে বরাতে কেন বছরের ৩৬৫ দিনই খাওয়ান। সামর্থ্য না থাকলে সপ্তাহে একদিন, তাও না থাকলে বছরে একদিন সেটা শনিবার হোক, রবি বা সোম হোক কিংবা শবে বরাত বা মেরাজ বা রমজান বা কদর হোক না কেনো। কিন্তু খাওয়ান! কিন্তু মনে রাখবেন এইভাবে যেটা ৩৬৫ দিন জায়েজ এবং উত্তম কাজ তাকে একদিনের জন্য হারাম বলার অধিকার ইসলাম আপনাকে দেয়নি।আল্লাহ আমাদের ঈমানের হিফাযত করুন।

Comments

Popular posts from this blog

ছেমা ই দালালাত

ইউসুফে ছানি গাউছুল আজম ছৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাজান কেবলা রহঃ জীবনী দর্পণ।

কোরআন সুন্নার আলোকে পীর ও মুরিদ।